আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
4 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম। হুজুর আমার আগের প্রশ্নের জবাব আমার মাকে দেখানোর পর তিনি বলেন যে আমি তো আমার ছেলেকে বলে দিয়েছি যে বিদেশে ঠিক মত নামাজ পড়তে, ইসলামী বিধি বিধান মেনে চলতে। এখন সে না মানলে সেটা আমার দোষ না। আমার ভাইকে আমার মা বলেছে যে তুই ঠিকমতো সব কিছু পালন করবি আর না হলে  হাশরের ময়দানে আমাকে দায়ী করবি না।

আমার প্রশ্ন হল হুজুর আমার মা যদি এভাবে আমার ভাইকে মানা করে দেয় তাহলে কি আসলে আখিরাতে আমার মা-বাবার কোন দায় থাকবে না? উল্লেখ্য যে আমার ভাই বিদেশে সেটেল হতে যায় দেখি আমার বাবা মা ই ঘটককে বলেছে প্রবাসী পাত্রী দেখতে। এখন যদি তারা বিয়েও করায় আর মুখে মুখে সাবধান করে দায়মুক্তি চায় তাহলে কি পাবে?

1 Answer

0 votes
ago by (704,250 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কুফফার রাষ্ট্রে লেখাপড়ার জন্য যেতে হলে অবশ্যই দুটো প্রধান শর্ত মেনে চলতে হবে।

প্রথম শর্ত: বসবাসকারীকে স্বীয় দ্বীনের ব্যাপারে আশঙ্কামুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ তার এমন ‘ইলম, ঈমান ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে, যা তাকে দ্বীনের ওপর অটল থাকার মতো এবং বক্রতা ও বিপথগামিতা থেকে বেঁচে থাকার মতো আত্মবিশ্বাসের জোগান দেয়। আর কাফিরদের প্রতি তার অন্তরে শত্রুতা ও বিদ্বেষ থাকতে হবে। অনুরূপভাবে কাফিরদের সাথে মিত্রতা ও তাদের প্রতি ভালোবাসা থেকে তাকে দূরে থাকতে হবে। কেননা তাদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করা এবং তাদেরকে ভালোবাসা ঈমানের পরিপন্থি।
সমস্ত প্রকার অন্যায় অশ্লীল কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে।
মহান আল্লাহ বলেছেন,

 لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ 

“তুমি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী এমন কোনো জাতিকে পাবে না, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বিরোধীদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে; যদিও তারা তাদের পিতা, অথবা পুত্র, অথবা ভাই, কিংবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়।” [সূরাহ মুজাদালাহ: ২২]

দ্বিতীয় শর্ত: নিজের দ্বীনকে প্রকাশ করার মতো সক্ষমতা থাকতে হবে। অর্থাৎ, বসবাসকারী ব্যক্তি কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ইসলামের নিদর্শনাবলি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন। নামাজ, জুমু‘আহ ও জামা‘আত—যদি তার সাথে জামা‘আতে নামাজ ও জুমু‘আহ প্রতিষ্ঠা করার মতো কেউ থেকে থাকেন—প্রতিষ্ঠা করতে বাধাগ্রস্ত হবেন না। অনুরূপভাবে জাকাত, রোজা, হজ ও অন্যান্য শার‘ঈ নিদর্শন প্রতিষ্ঠা করতে বাধাগ্রস্ত হবেন না। যদি এসব কাজ করার সক্ষমতা না থাকে, তাহলে তখন হিজরত ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে বসবাস করা জায়েজ হবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ  

https://ifatwa.info/133184/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
আপনার ভাই যে কি না নিজ দেশে, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় নিজের ধর্ম কর্মকে সঠিক ভাবে পালন করতে পারছে না,  সে কিভাবে অমুসলিম দেশে গিয়ে নিজের ঈমান আমলকে হেফাজতে রাখবে। তাছাড়া যেই মহিলা পর্দা করতে পারছেন না তিনি কিভাবে সন্তানাতিকে ইসলামী তা'লিম ও তরবিয়ত দিবেন। মোটকথা সার্বিক দিক বিবেচনায় আমরা পরামর্শ দিবো আপনার ভাইয়ের উচিত দেশে কিছু করা বা মুসলিম কোনো দেশে স্থানান্তরিত হওয়া। আল্লাহ তাওফিক দান করুক।আমীন।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
আপনার ভাই যদি সেই দেশে যায় সেক্ষেত্রে  স্বীয় দ্বীনের ব্যাপারে আশঙ্কামুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ তার এমন ‘ইলম, ঈমান ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে, যা তাকে দ্বীনের ওপর অটল থাকার মতো এবং বক্রতা ও বিপথগামিতা থেকে বেঁচে থাকার মতো আত্মবিশ্বাসের জোগান দেয়। আর কাফিরদের প্রতি তার অন্তরে শত্রুতা ও বিদ্বেষ থাকতে হবে। 

এক্ষেত্রে যদি নিজের ঈমান ও আমল হেফাজত করা বা দ্বীনের উপর থাকা তার পক্ষে মুশকিল হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে তার জন্য অমুসলিম দেশে যাওয়া জায়েজ নেই।

এমতাবস্থায় সে যদি না যেতে চায়, তারপরেও তার বাবা-মা যদি তাকে বাধ্য করে পাঠায়, তাহলে তার বাবা মা এ ক্ষেত্রে দায়ী থাকবে।

সে যদি এভাবে প্রবাসী কোন বেদ্বীন নারীকে বিবাহ করতে না চায়, বাবা মা যদি বাধ্য করে তাকে বিবাহ করায়, তাহলে বাবা মা দায়ী থাকবে। 

তবে যদি তার বাবা মা যদি এক্ষেত্রে তাকে বাধ্য না করে বরং ছেলে যদি নিজের ইচ্ছাতেই অমুসলিম দেশে যায়, এবং অমুসলিম দেশে গিয়ে প্রবাসী কোন বেদ্বীন নারীকে বিবাহ করতে চায়, এমতাবস্থায় বাবা-মা কোনভাবেই দায়ী থাকবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...