আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (7 points)
edited by

ভার্সিটিতে সাধারণত প্রেজেন্টেশন দেয়া লাগে যেখানে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের সামনে তা পরিবেশন করতে হয়। এক্ষেত্রে একজন নারী সম্পূর্ণ পরদাবৃত থাকলেও কন্ঠের পর্দা রক্ষা হয়না।আর সকল পুরুষের দৃষ্টিও তখন তার দিকেই থাকে।কোন মুসলিম নারীর জন্য এমতাবস্থায় বিধান কী??

সহশিক্ষা ছেড়ে দেয়া উত্তম হবে নাকি চালিয়ে যাবে?আর চালিয়ে গেলে গুনাহ হবে কি না??

সহশিক্ষা নারীর ক্ষেত্রে জায়েয যদি মুসলিমদের স্বার্থে করা হয় কিন্তু যদি দুনিয়া অর্জনের নিয়ত থাকে তবে জায়েজ নেই।ব্যপারটা বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (689,850 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন৷ 
    
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

উক্ত আয়াত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে এবং আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।

রাসূলুল্লাহ  বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

নারী গোপন জিনিসযখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

 

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ  বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
শরীয়তের বিধান মতে পূর্ণ পর্দা মেনে পর্দার আড়ালে থেকে মহিলারা পর পুরুষদের সাথে প্রয়োজনীয় কথা বলতে পারবে।
তবে অপ্রয়োজনে কথা বলতে এবং আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রেজেন্টেশন দেয়া যেহেতু ক্লাশের একটি আবশ্যকীয় নিয়ম।

প্রেজেন্টেশন এর সময় কন্ঠের পর্দার জন্য শক্ত গলায় বা মুখের উপর হাত রেখে কথা বলতে পারেন।
আওয়াজ যেনো আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে না হয়,সেটির জন্য আপ্রান চেষ্টা করতে হবে।

হ্যাঁ যদি সেটি ফিতনার কারন হয়,তাহলে সেক্ষেত্রে আর প্রেজেন্টেশন দিবেনা। 
প্রয়োজনে ক্লাশ না করে শুধুমাত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন।

★হাত পা চেহারা সহ পূর্ণ শরীর ঢেকে পরিপূর্ণ পর্দা রক্ষা করে শরীয়তের সমস্ত শর্তাবলী মেনে সহ শিক্ষা করতে পারলে সেক্ষেত্রে সহ শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া যাবে অন্যথায় সহশিক্ষা চালিয়ে যাওয়া যাবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

অর্থাৎ, শিক্ষা অর্জনের মূল উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি, সমাজ ও উম্মাহর কল্যাণ, এবং মানবতার সেবা।

ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা শুধু ইবাদতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং মানবকল্যাণ, সমাজকল্যাণ, ও উম্মাহর উন্নয়নকেও ইবাদত হিসেবে গণ্য করে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

“মানুষের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি, যে মানুষের জন্য সর্বাধিক উপকারী।”
(মুসনাদ আহমাদ, হাদীস: ২৩৪০৯)

অতএব, যে ব্যক্তি শিক্ষা অর্জন করে সমাজ, দেশ, ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে তা ব্যবহার করে, সে আসলে ইসলামী দৃষ্টিতে এক মহান খেদমতে নিয়োজিত।


একজন মনিষি বলেছেন,চিকিৎসা, প্রকৌশল, অর্থনীতি, প্রশাসন ইত্যাদি শিক্ষা যদি মুসলমানরা না শেখে, তাহলে সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে—তখন পুরো জাতি দায়ী হবে।

যদি কোনো মুসলমান শিক্ষা অর্জন করে—
আল্লাহর সৃষ্টি জগতকে বুঝতে,
দেশ ও উম্মাহর উপকার করতে,
মানুষের কষ্ট লাঘব করতে,
এবং ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষা করতে,
তাহলে সেই শিক্ষা ইবাদতের মর্যাদা পায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...