মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন৷
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ
অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
উক্ত আয়াত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে এবং আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)
নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শরীয়তের বিধান মতে পূর্ণ পর্দা মেনে পর্দার আড়ালে থেকে মহিলারা পর পুরুষদের সাথে প্রয়োজনীয় কথা বলতে পারবে।
তবে অপ্রয়োজনে কথা বলতে এবং আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রেজেন্টেশন দেয়া যেহেতু ক্লাশের একটি আবশ্যকীয় নিয়ম।
প্রেজেন্টেশন এর সময় কন্ঠের পর্দার জন্য শক্ত গলায় বা মুখের উপর হাত রেখে কথা বলতে পারেন।
আওয়াজ যেনো আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে না হয়,সেটির জন্য আপ্রান চেষ্টা করতে হবে।
হ্যাঁ যদি সেটি ফিতনার কারন হয়,তাহলে সেক্ষেত্রে আর প্রেজেন্টেশন দিবেনা।
★হাত পা চেহারা সহ পূর্ণ শরীর ঢেকে পরিপূর্ণ পর্দা রক্ষা করে শরীয়তের সমস্ত শর্তাবলী মেনে সহ শিক্ষা করতে পারলে সেক্ষেত্রে সহ শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া যাবে অন্যথায় সহশিক্ষা চালিয়ে যাওয়া যাবে না।
অর্থাৎ, শিক্ষা অর্জনের মূল উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি, সমাজ ও উম্মাহর কল্যাণ, এবং মানবতার সেবা।
ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা শুধু ইবাদতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং মানবকল্যাণ, সমাজকল্যাণ, ও উম্মাহর উন্নয়নকেও ইবাদত হিসেবে গণ্য করে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“মানুষের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি, যে মানুষের জন্য সর্বাধিক উপকারী।”
(মুসনাদ আহমাদ, হাদীস: ২৩৪০৯)
অতএব, যে ব্যক্তি শিক্ষা অর্জন করে সমাজ, দেশ, ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে তা ব্যবহার করে, সে আসলে ইসলামী দৃষ্টিতে এক মহান খেদমতে নিয়োজিত।
একজন মনিষি বলেছেন,চিকিৎসা, প্রকৌশল, অর্থনীতি, প্রশাসন ইত্যাদি শিক্ষা যদি মুসলমানরা না শেখে, তাহলে সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে—তখন পুরো জাতি দায়ী হবে।
যদি কোনো মুসলমান শিক্ষা অর্জন করে—
আল্লাহর সৃষ্টি জগতকে বুঝতে,
দেশ ও উম্মাহর উপকার করতে,
মানুষের কষ্ট লাঘব করতে,
এবং ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষা করতে,
তাহলে সেই শিক্ষা ইবাদতের মর্যাদা পায়।