আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
9 views
ago in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ


আমার বাবা মা ঢাকায় ভাড়া বাসা থাকেন। চাচাদের সাথে সমঝোতায় গ্রামে কোন বাড়ি করা এখনো সম্ভব হয়নি। আব্বু রিটায়ার্ড ও বয়স্ক, কোন ইনকাম নেই। আমার ভাই ঋণগ্রস্ত, তাই আব্বু আম্মুকে টাকা দিতে পারেনা৷ অর্থাৎ তাদের নগদ অর্থ নেই,  ইনকাম নেই এবং থাকার জায়গা নেই।
আমার স্বামী এবং আমি মিলে একটা অনলাইন বিজনেস পরিচালনা করি। আমাদের বছরে ৪০-৫০ হাজার টাকা যাকাত আসে। যাকাতের অর্থ একবারে আদায় করা কিছুটা কষ্টসাধ্য। শায়েখ আহমাদউল্লাহ হুজুরের লেকচারে শুনেছি, সারা বছর অল্প অল্প করে যাকাত দেয়া যায়। পরে বছর শেষে হিসেব করে টোটাল থেকে ওইটা বাদ দিয়ে বাকিটা আদায় করতে হবে।

প্রশ্ন-১: আমি রমাদ্বানে যাকাত দেই। এই যাকাতের অর্থটা কি আমি আমার বাবা মায়ের বাসা ভাড়া ও ভরণপোষণে ব্যয় করতে পারবো?
শুধু যাকাতের টাকা দিয়ে সারা বছর ভরণপোষণ নেয়া যাবেনা, আরও অনেক টাকা লাগবে, সেটা দায়িত্ব মনে করেই আমরা পালন করবো। কিন্তু যাকাতের নিয়ত করে এমাউন্ট টা কি যাকাত খাতে দিতে পারবো?


প্রশ্ন-২ঃ ঠিক কিভাবে হিসেব রাখবো?

 যেমন - আগামীকাল ৫০ হাজার টাকা উনাদের বকেয়া বাসা ভাড়ায় দিব। তার পরের মাসে আরও ৫০ হাজার হয়তো দিবো, এভাবে রোজার আগেই প্রায় ২ লাখ দিব।  এটা পুরোটা যাকাতের হিসেবে রাখলে, দেখা গেলো বছর শেষে আমার যাকাত এলো ৪০ হাজার। তাহলে বাকি এমাউন্ট কি সাদাকাহ হিসেবে গণ্য হবে? নাকি সেটা আবার তার পরের বছর যাকাতের হিসেবে চলে যাবে? এটা নিয়ে আমি একটু কনফিউশনে আছি।
আবার দেখা যাবে যাকাতের সময় আর আমার অবশিষ্ট যাকাত কিছুই থাকবেনা। আগেই তা আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এভাবে যাকাত আদায় জায়েজ হবে?
জাযাকাল্লাহু খইরান

1 Answer

+1 vote
ago by (687,630 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

https://ifatwa.info/17127/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
কোনো ব্যাক্তির যাকাতের মাল তার দরিদ্র ভাই, বোন, চাচা, ফুফুসহ সকল দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনকে দিতে কোন আপত্তি নেই। 

বরং তাদেরকে যাকাত দেওয়া হলে সেটা সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: "মিসকীনকে যাকাত দেওয়া সদকা। আর আত্মীয়কে দেওয়া সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়"।[মুসনাদে আহমাদ (১৫৭৯৪) ও সুনানে নাসাঈ (২৫৮২)] 

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْأَعَلَى، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ الرَّائِحِ، عَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الصَّدَقَةَ عَلَى الْمِسْكِينِ صَدَقَةٌ، وَعَلَى ذِي الرَّحِمِ اثْنَتَانِ صَدَقَةٌ وَصِلَةٌ»

সালমান ইব্ন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মিসকীনকে দান করার মধ্যে শুধু সাদাকা (র সওয়াব রয়েছে) আর আত্নীয়-স্বজনকে দান করা দুটি (সওয়াব রয়েছে) দান করা (র সওয়াব) এবং আত্নীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা (র সওয়াব)।
,
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
 الصَّدَقَةُ عَلَى الْمِسْكِينِ صَدَقَةٌ، وَهِيَ عَلَى ذِي الرَّحِمِ اثْنَتَانِ: صِلَةٌ، وَصَدَقَةٌ-
‘সাধারণ মিসকিনকে সাদাকাহ দিলে তা শুধু সাদাকাহ; আর অভাবী-আত্মীয়কে দেওয়া একই সঙ্গে দুটি সৎকর্ম— সাদাকাহ ও আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা।’ (সুনান নাসায়ী, হাদীস নম্বর: ২৫৮২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নম্বর: ১৬২৩৫; শায়খ আলবানি ও শু‘আইব আরনাউত এর গবেষণায় হাদিসটি ‘সহিহ’)

নিজ পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, পরদাদা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ যারা তার জন্মের উৎস তাদেরকে নিজের যাকাত দেওয়া জায়েয নয়। এমনিভাবে নিজের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতিন এবং তাদের  অধস্তনকে নিজ সম্পদের যাকাত দেওয়া জায়েয নয়। স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরকে যাকাত দেওয়া জায়েয নয়।-রদ্দুল মুহতার ২/২৫৮

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি আপনার বাবা-মাকে যাকাত দিতে পারবেন না।

এক্ষেত্রে আপনি আপনার দরিদ্র ভাইকে যাকাত দিতে পারবেন।

আরেকটি ছুরত অবলম্বন করতে পারবেন সেটি হল, উক্ত ব্যবসার লভ্যাংশ আপনাদের স্বামী-স্ত্রীর মাঝে আলাদা করবেন।

এক্ষেত্রে আপনার স্বামীর মালিকানায় থাকা টাকার যত যাকাত আছে সেই টাকা আপনার স্বামী আপনার বাবা-মাকে শ্বশুর-শাশুড়ি হিসেবে দিতে পারবে।

কিন্তু আপনার মালিকানায় থাকা অর্থের যাকাত আপনি কোন ক্রমেই আপনার বাবা মাকে দিতে পারবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...