আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
19 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)
স্ত্রী চেষ্টা করেন স্বামী আর সংসারের দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালন করার। কিন্তু স্বামী তেমন কোনো কারণ ছাড়াই স্ত্রীকে কথা শোনান। টুকিটাকি ভুল বা যা আদৌ তেমন ভুলও না তাও ইচ্ছে করে সেগুলো নিয়ে স্ত্রীর সাথে খারাপ আচরণ করেন। রাগ হয়ে যান। ধমকের সুরে কথা বলেন। কখনও কখনও গায়েও হাত তুলতে চান। স্বামী প্রায়ই স্ত্রীকে শোনান তার পূর্বের গার্লফ্রেন্ডের কথা। মেয়েটার বিয়ে হয়নি, চাকরি নেই, মেয়েটা ভালো, মেয়েটার দুঃখ কষ্টের কথা। এগুলো স্ত্রীর শুনতে কষ্ট হয়। বিয়ে হয়েছে প্রায় দুই বছর হবে। গতকাল স্বামীর সাথে বাজারে যাওয়ার সময় আবার স্বামী ওনার পূর্বের গার্লফ্রেন্ডের প্রসঙ্গ তুললে স্ত্রী তেমন কিছুই বলেননি কিন্তু স্ত্রীর খারাপ লাগায় সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় একটা সিঁড়ি দাঁড়িয়ে ছিলেন এজন্য স্বামী তাকে জোর করে টেনে নামায় তারপর গায়ে হাত তুলে বাজারে যেতে যেতে। এমন আগে কখনও গায়ে হাত তোলেনি বা মারেওনি। স্ত্রীর গালে, গলায় দাগ পড়ে যায়, কিছু চামড়াও উঠে যায়। স্ত্রী তার মা, বাবা অথবা স্বামীর পরিবারের কাউকে কিছু বলেননি কিন্তু শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে আমাকে বলে পরামর্শ চেয়েছেন। আশঙ্কা করেন পরিবারের সদস্যদের বললে তাদের সম্পর্কের আরও অবনতি হতে পারে। এর আগেও স্বামী অকারণে ছোট খাটো বিষয়ে স্ত্রীর সাথে বাজে আচরণ করলে মন খারাপ থাকায় স্ত্রী স্বেচ্ছায় স্বামীর সাথে কথা বলতে পারতেন না, আলাদা রুমে গিয়ে থাকতেন। তবে সংসারের সব দায়িত্ব রান্না, খাবার দেয়া, স্বামীর দরকারি সব প্রয়োজনীয় বিষয় গুছিয়ে রাখতেন। স্বামী নিজের থেকেই স্বাভাবিক কথা বললে স্ত্রীও স্বাভাবিক হয়ে যেতেন একসাথেই থাকতেন৷ কিন্তু স্বামী তার আচরণের জন্য কখনও কোনো দুঃখ প্রকাশ করেননা। সরিও বলেন না। নিজের কোনো অন্যায় হয়েছে তা মনে করেন না৷ স্ত্রীর ভাষ্যমতে উপলব্ধি নেই। বিষয়গুলো অগ্রাহ্য করেন। গতকালের ঘটনার পর বাজার থেকে দুপুরে বাসায় এসে স্বাধীন স্বাভাবিক কাজ করেন কিন্তু সন্ধ্যার আগে বেরিয়ে যান আর আসেন রাত করে একটু দেরিতে। শুক্রবার বন্ধের দিন অফিস ছিলো না। অফিস থাকাকালীন সময়ে আরও আগে আসেন। স্ত্রী গতকাল রাতে আমাকে কলে বিস্তারিত সবকিছু বলেন আর বলেন এরূপ আচরণের পর ভিতর থেকে স্বামীর প্রতি ঘৃণা আসছে, একসাথে থাকতে ইচ্ছ করে না। কি করবেন জানতে চান। আমি বলেছি মাফ করতে। নিজেদের জন্য দু'আ করতে। আগে যেমন মনোমালিন্য হলে স্বাভাবিক স্বামীর আচরণে কষ্ট পেলে দূরে থাকতেন আজকে সবচেয়ে বেশি খারাপ আচরণ করলেও স্বামীর ভাষ্য অনুযায়ী সব দোষ যেহেতু স্ত্রীর আসলে তো তা না কিন্তু স্বামীরটাই মেনে নিয়ে উল্টো আচরণ করতে মানে স্বামী অকারণে মারার পরেও স্বামীর যুক্তিহীন কথা মেনে নিয়ে স্বামীর প্রতি আজকে আজও বেশি যত্নশীল ও আন্তরিক হতে এবং একসাথে থাকতে। বোনের স্বামী রাতে বাসায় আসার পর বোন আমাকে মেসেজে জানান স্বামী বাসায় এসেছে, খেয়েছে আর বোনকে বলেছেন বোন মরে গেলে উনি গার্লফ্রেন্ডকে বিয়ে করতেন। বোন বলেছেন আপনার গার্লফ্রেন্ডতো তাহলে দুয়া করে আমার মরার জন্য তখন বোনের বলেন না ও ভালো ও তোমার জন্য দু'আ করে। আজকে সকালে বোন নিজের একটা ছবি দেন গতকাল বোনের হাজবেন্ড যে বোনকে মেরেছিলো সেখানে দাগ পড়েছে, কিছুটা কেটে গিয়েছে তার আর বলেন উনি তো চেষ্টা করেছেন আর করছেন কিন্তু হাজবেন্ডের প্রতি ওনার মন থেকে ঘৃণা আসছে।

1 Answer

0 votes
ago by (687,630 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

স্বামীকে আল্লাহ তাআলা স্ত্রীর রক্ষণাবেক্ষণকারী (قَوَّام) বানিয়েছেন (সূরা আন-নিসা ৪:৩৪), 

নবী করিম ﷺ বলেছেন:

"তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি, যে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে সর্বোত্তম আচরণ করে।"
— (তিরমিজি, হাদিস: ৩৮৯৫)

 স্ত্রীকে গালাগালি, অপমান, ভয় দেখানো বা হাত তোলা— এগুলো হারাম ও কবিরা গুনাহ।

 রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
"তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের মারো না; যারা স্ত্রীকে মারে তারা তোমাদের মধ্যে উত্তম নয়।"
— (আবু দাউদ, হাদিস: ২১৪৬)

অতএব, স্বামীর এই কাজ গুনাহ ও অন্যায়। বিশেষত যখন সে ইচ্ছাকৃতভাবে কষ্ট দেয়, পূর্বের সম্পর্কের কথা বলে হেয় করে, তখন তা মানসিক নির্যাতন হিসেবে গণ্য হয়।

★ইসলামে স্ত্রীকে অবিচার, নির্যাতন বা অপমানের শিকার হয়ে চুপ করে থাকতে বাধ্য করা হয়নি।

তিনি চাইলে:

1. নিজের অভিভাবক বা পরিবারের কাউকে জানাতে পারেন,

2. স্থানীয় মসজিদের ইমাম বা আলেম, অথবা বিশ্বস্ত কোনো শরীয়াহ বোর্ড বা কাউন্সেলর এর কাছে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন,

3. এবং প্রয়োজনে কাজি বা আদালতের মাধ্যমে তালাক বা খোলা (خُلع) এর আবেদন করতে পারেন, যদি স্বামী পরিবর্তন না হয়।

আল্লাহ বলেন:

"যদি তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে না পারো, তবে সুন্দরভাবে পৃথক হয়ে যাও।"
— (সূরা আত-তালাক ৬৫:২)

★এখন স্ত্রীর করণীয়,
পরামর্শ ও সালিশ (مُصَالَحَة)
কুরআনে আল্লাহ বলেন:

 "যদি তাদের মধ্যে বিরোধ আশঙ্কা করো, তবে এক পক্ষ থেকে একজন সালিশ ও অপর পক্ষ থেকে একজন সালিশ পাঠাও; তারা যদি মীমাংসা করতে চায়, আল্লাহ তাদের মধ্যে মিল ঘটাবেন।"
— (সূরা আন-নিসা ৪:৩৫)

অর্থাৎ, স্বামীর পক্ষ ও স্ত্রীর পক্ষ থেকে একজন করে বিচক্ষণ, ধার্মিক সালিশকারী বসানো যেতে পারে।
এতে হয়তো সমাধান আসতে পারে — যদি স্বামী আন্তরিকভাবে সংশোধিত হতে চান।

স্বামী তওবা না করলে বা আচরণ না বদলালে
স্ত্রী শরীয়ত অনুযায়ী খোলা (বিচ্ছেদ চাওয়া) করতে পারেন।

এটি কোনো পাপ নয়; বরং আত্মসম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষার বৈধ পথ।

স্ত্রীর জন্য মানসিকভাবে করণীয়,

আল্লাহর কাছে দোআ করা: “رَبِّ أَصْلِحْ لِي فِي زَوْجِي وَأَهْلِي” (হে আমার রব, আমার স্বামী ও সংসারকে আমার জন্য সংশোধন করে দিন)।

নামাজে ও তাহাজ্জুদের সময়ে আল্লাহর কাছে সান্ত্বনা চাওয়া।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...