আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
467 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আ'লাইকুম

১) নবীজির সা. একটি হাদিস আছে যে- একজন সাহাবি রা. দ্রুত নামাজ পরে,এরকম ৩ বার ,পরে নবিজি সা. ওনাকে রা. ডেকে বলেন তোমার নামাজ হয়নি । তারপর নবীজি সা. ওনাকে নামাজ শিখিয়ে দেন।

আমি আজ ফজরে জন্য উঠে ৪ঃ৫০ এ (যেখানে ওয়াক্ত শুরু ৪ঃ৪০ এ) টয়লেটে যাই। ইস্তেঞ্জায় পস্রাব ক্লিয়ার হচ্ছিলনা ৫ঃ৪৭ পর্যন্ত, পরে এই পস্রাব ক্লিয়ার না হওয়া অবস্থায় অজুকরে ফজরের নামাজ শুরু করতে দেখি ৩মি এর বেশি কিছু বাকি ওয়াক্ত শেষ হতে। দ্রুত সুরা্‌,কেরাত, রুকু সেজদাহ+এর তাজবি আদায় করি তবে মাখরাজ ঠিক রাখে,দুরুদ ,দোয়া মাসুরা না পরে শুধু তাশাহুদ পরে সালাম ফিরাই । ফরজ নামাজ পড়ি ১ঃ৫০ সেকেন্ডে । পরে নামাজ শেষে আবার ইস্তেঞ্জায় যাই।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে - আমি কি উপরের হাদিসের মত নামাজ আদায় করেছি যে আমাকে আবার নামাজ আদায় করতে হবে ?

[ এই সমস্যার জন্য ২-৩ সপ্তাহ ধরে প্রায় জামাত মিস হচ্ছে ]

1 Answer

0 votes
by (575,070 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে উল্লেখ রয়েছেঃ

حَدَّثَنِي الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ يَعْنِي ابْنَ عِيَاضٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ، - وَهَذَا لَفْظُ ابْنِ الْمُثَنَّى - حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَرَدَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِ السَّلَامَ وَقَالَ " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . فَرَجَعَ الرَّجُلُ فَصَلَّى كَمَا كَانَ صَلَّى ثُمَّ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " وَعَلَيْكَ السَّلَامُ " . ثُمَّ قَالَ " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . حَتَّى فَعَلَ ذَلِكَ ثَلَاثَ مِرَارٍ فَقَالَ الرَّجُلُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَ هَذَا فَعَلِّمْنِي . قَالَ " إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلَاةِ فَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ مَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ اجْلِسْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا ثُمَّ افْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلَاتِكَ كُلِّهَا " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ الْقَعْنَبِيُّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَقَالَ فِي آخِرِهِ " فَإِذَا فَعَلْتَ هَذَا فَقَدْ تَمَّتْ صَلَاتُكَ وَمَا انْتَقَصْتَ مِنْ هَذَا شَيْئًا فَإِنَّمَا انْتَقَصْتَهُ مِنْ صَلَاتِكَ " . وَقَالَ فِيهِ " إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلَاةِ فَأَسْبِغِ الْوُضُوءَ " - صحيح

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাসজিদে প্রবেশ করলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করে সলাত আদায় করলো এবং এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম করলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সালামের জবাব দিয়ে বলেনঃ তুমি ফিরে যাও এবং আবার সলাত আদায় করো, তুমি সলাত আদায় করোনি। লোকটি ফিরে গিয়ে আগের মত সলাত আদায় করে এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পুনরায় সালাম দিলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সালামের জবাব দিয়ে বলেনঃ তুমি গিয়ে আবার সলাত আদায় করো, কারণ তুমি তো সলাত আদায় করোনি। এভাবে লোকটি তিনবার সলাত আদায় করলো। অতঃপর লোকটি বললো, ঐ আল্লাহর শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আমি এর চাইতে উত্তমরূপে সলাত আদায় করতে পারি না। কাজেই আমাকে সলাতের পদ্ধতি শিখিয়ে দিন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি সলাতে দাঁড়ানোর সময় সর্বপ্রথম তাকবীরে তাহরীমা বলবে। তারপর তোমার সুবিধানুযায়ী কুরআনের আয়াত পাঠ করবে, অতঃপর শান্তি ও স্থিরতার সাথে রুকূ‘ করবে, অতঃপর রুকূ‘ হতে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। অতঃপর ধীরস্থিরভাবে সাজদাহ্ করবে। এরপর প্রশান্তির সাথে বসবে। এভাবেই তোমার পুরো সলাত আদায় করবে।

অন্য বর্ণনায় রয়েছেঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষে তাকে বললেনঃ তুমি এভাবে সলাত আদায় করলে তোমার সলাত পরিপূর্ণভাবে আদায় হবে। আর এর কোন অংশ আদায়ে ত্রুটি করলে তোমার সলাতও ত্রুটিপূর্ণ হবে। এতে আরো রয়েছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেনঃ তুমি সলাত আদায় করতে চাইলে প্রথমে উত্তমরূপে অযু করে নিবে।

বুখারী (অধ্যায় : আযান, অনুঃ সলাতসমূহে ইমাম ও মুক্তাদীর কুরআন পাঠ ওয়াজিব হওয়া সম্পর্কে, হাঃ ৭৫৭), মুসলিম (অধ্যায় : সলাত, অনুঃ প্রত্যেক রাক‘আতে সূরাহ ফাতিহা পাঠ ওয়াজিব), তিরমিযী (অধ্যায় : সলাত, অনুঃ সলাতের বৈশিষ্ট্য, হাঃ ৩০৩, ইমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদীসটি হাসান ও সহীহ), নাসায়ী (অধ্যায় : সলাত আরম্ভ করা, অনুঃ প্রথম তাকবীর ফার্য, হাঃ ৮৮৩) সকলে ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ হতে।

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যাও সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় কর, কেননা তুমি সলাত আদায় করোনি। অর্থাৎ- প্রশান্তি ও স্থিরতার সাথে সলাত হয়নি। কিংবা সে সলাতের সমস্ত অংশ পূর্ণরূপে আদায় করেনি। এ অর্থও নেয়া যায়। এ হাদীস তার প্রমাণ বহন করে। কেননা বললেন যাও, ‘‘সলাত আদায় করো’’। তাঁর কথায় ‘‘তুমি সলাত আদায় করনি’’ অর্থাৎ- হক আদায় করে সলাত আদায় করা হয়নি।

এ কথাও এ হাদীস থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, খল্লাদ ইবনু রাফি‘ সে প্রসিদ্ধ কোন রুকন পরিত্যাগ করেনি। সে একমাত্র তা‘দীল, ধীরস্থীরতা-কে ছেড়ে দিয়ে ছিলেন।
۔
★নামাজে তা'দিলে আরকান (রুকনের স্থিরতা, শান্ত হওয়া, দেরী করা)  মোতাবেক নামাজ না পড়লে যদিও নামাজ আদায় হয়ে যাবে,তবে পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করে নেওয়া ভালো।
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম ২/১১৬)

ولھا واجبات لاتفسد بترکھا وتعاد وجوبا فی العمد والسھو ان لم یسجد لہ وان لم یعدھا یکون فاسقا اٰثما الخ وھی قرأۃ فاتحۃ الخ وتعدیل الارکان (الدر المختار علی ہامش ردالمحتار باب صفۃ الصلاۃ مطلب واجبات الصلوٰۃ ج۱ ص ۴۲۴۔ط۔س۔ج۱ص۴۵۶)ظفیر۔
সারমর্মঃ
নামাজের কিছু ওয়াজিব আছে,যাহা ছেড়ে দিলে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা,তবে উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে। 
তার মধ্যে একটি হলো তা'দিলে আরকান তথা রুকন গুলো ধীরে ধীরে আদায় করা।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদিও নামাজ আদায় হয়ে যাবে,তবে পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করে নেওয়া ভালো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...