আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (25 points)
১/আসসালামু আলাইকুম।  আমার স্বর্ন আছে ৭ভরি ৯ আনা রুপা ১.৫ ভরি । ক্যাশ টাকা নেই।
আমার স্বামী ফ্রান্স এ থাকে তবে তার অনেক ঋন আছে।  ইনকাম এর ৬০ ভাগ ঋণ এ যায়। এখন এই স্বর্নের যাকাত এর টাকা দিয়ে কি আমি আমার স্বামীর কিছু ঋণ শোধ করতে পারি?।(আমার বান্ধুবীর প্রশ্ন)
২/এবার আমার কিছু প্রশ্ন করি আমার বিয়ে হয় ২০২২ সালে ওই সময় আমি কিছু সনাতনী স্বর্ণ পাই ৩ ভরির মতো। আমার জানা ছিল না যে যাকাত ফরজ হবে, একদিন আমি শুনলাম যে 1000 টাকা জমা থাকলেও যাকাত ফরজ হয় যেহেতু  স্বর্ণ কিছু আছে। তাহলে কি এখন আমার যাকাত দিতে হবে? আমার টাকা ছিলো জনা ৭-৮ হাজারের মতো।
৩/একজন হুজুর বলল যে কারোর এক-দেড় ভরি সোনা আছে এবং প্রয়োজনের উদ্বৃত্তের বাইরে কিছু টাকা থাকলে যাকাত দিতে হবে।প্রয়োজনের উদ্বৃত্তের  বাইরে মানে কি? ১০০ টাকা জমা থাকলেও কি যাকাত দিতে হবে?
৪/আমার যেহেতু তিন বছরের যাকাত দিতে ধরি  আজকে থেকে যদি আমি যাকাত শুরু করি, আজকের বাজার অনুযায়ী আমার যাকাতের পরিমাণ 50000 টাকা। সেই টাকা ভেঙ্গে ভেঙ্গে যদি আগামী ছয় মাস বা ৮ মাস অথবা এক বছরে দেই তাহলে কি সেই যাকাতের পরিমাণ 50000 টাকাই থাকবে? নাকি এই আট মাস বা বছরে সোনার দাম বেড়ে  তিন লক্ষ টাকা হয়ে গেলে আবার আমাকে সেই হিসেবে যাকাত দিতে হবে?( তাহলে আমি আর ভেঙ্গে ভেঙ্গে কিভাবে দিব? এটা তো প্রতিনিয়ত বাড়ে ২-১ হাজার করে)
৫/ ১০ বছর আগে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছে বাট  যাকাত দেয় নাই।তাহলে কি তাকে ১০ বছর আগের সোনার দাম অনুযায়ী যাকাত দিতে হবে নাকি বর্তমান স্বর্ণের বাজার অনুযায়ী দিতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (689,850 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
কোন কোনো ব্যাক্তির যাকাতের মাল তার দরিদ্র ভাই, বোন, চাচা, ফুফুসহ সকল দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনকে দিতে কোন আপত্তি নেই। 

বরং তাদেরকে যাকাত দেওয়া হলে সেটা সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: "মিসকীনকে যাকাত দেওয়া সদকা। আর আত্মীয়কে দেওয়া সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়"।[মুসনাদে আহমাদ (১৫৭৯৪) ও সুনানে নাসাঈ (২৫৮২)] 

পূর্ণ হাদীসটি হলোঃ

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْأَعَلَى، قَالَ: حَدَّثَنَا خَالِدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ الرَّائِحِ، عَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الصَّدَقَةَ عَلَى الْمِسْكِينِ صَدَقَةٌ، وَعَلَى ذِي الرَّحِمِ اثْنَتَانِ صَدَقَةٌ وَصِلَةٌ»

সালমান ইব্ন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মিসকীনকে দান করার মধ্যে শুধু সাদাকা (র সওয়াব রয়েছে) আর আত্নীয়-স্বজনকে দান করা দুটি (সওয়াব রয়েছে) দান করা (র সওয়াব) এবং আত্নীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা (র সওয়াব)।
,
নিজ পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, পরদাদা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ যারা তার জন্মের উৎস তাদেরকে নিজের যাকাত দেওয়া জায়েয নয়। এমনিভাবে নিজের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতিন এবং তাদের  অধস্তনকে নিজ সম্পদের যাকাত দেওয়া জায়েয নয়। স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরকে যাকাত দেওয়া জায়েয নয়।-রদ্দুল মুহতার ২/২৫৮

এরা গরীব হলেও এদেরকে যাকাতের মাল দেওয়া যাবে না; বরং সামর্থ্য থাকলে তাদের খরচ চালানো আবশ্যকীয়; যদি তাদের খরচ চালানোর মত সে ছাড়া অন্য কেউ না থাকে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি স্বামীকে যাকাত দিতে পারবেননা।
এমনিতেই তাকে ঋন পরিশোধে সহযোগিতা করতে পারেন।   

(০২)
হ্যাঁ এক্ষেত্রে আপনার উপর যাকাত ফরজ হবে।

এক্ষেত্রে আপনি উক্ত স্বর্ণের বর্তমান বাজার মুল্য ধরে আপনার মালিকানায় থাকা টাকার সাথে যোগ করবেন।
এরপর পুরোটার শতকরা আড়াই পার্সেন্ট তথা চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত হিসেবে প্রদান করবেন।

এক্ষেত্রে পূর্বের অনাদায়ী বছরগুলোরও যাকাত আদায় করতে হবে।

আরো জানুনঃ- 

(০৩)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৪)
যেদিন আপনার উপর যাকাত ফরজ হবে,সেদিনের বাজার অনুযায়ী যাকাত ধরা হবে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই টাকা ভেঙ্গে ভেঙ্গে আপনি যদি আগামী ছয় মাস বা ৮ মাস অথবা এক বছরে দেন, তাহলে সেই যাকাতের পরিমাণ 50000 টাকাই থাকবে।

(০৫)
তাহলে তাকে ১০ বছর আগের সোনার দাম অনুযায়ী যাকাত দিতে হবে। 

ক্ষেত্রে যে বছরে সোনার মূল্য যেমন ছিল, সেই বছরে যাকাত সে অনুযায়ী আদায় করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...