আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (8 points)
আমার চাচারা আমাদের সব সম্পদ দখল করেছে, আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিছে এক বছর আগে, আমাদের ঘর থেকে আমাদের বের করে দিছে। তারপরেও আমি কেন বিশ্বাস করব আল্লাহ ন্যায় বিচারক? মজলুমের দোয়া নাকি কবুল হয় কই আমাদের দোয়া তো কবুল হয় না? আল্লাহর উপর থেকে আমার বিশ্বাস কমে যাচ্ছে, নামাজে মন বসে না, দোয়া করতে ইচ্ছা হয় না এক্ষেত্রে কি করা উচিৎ?

1 Answer

0 votes
by (689,850 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের আলোকে এবং কুরআন-হাদীসের আলোকে কিছু বিষয় আছে যা আপনাকে মানসিক ও ঈমানীভাবে শক্ত থাকতে সাহায্য করতে পারে।

 “আপনি মনে করবেন না যে আল্লাহ জালিমদের কাজকর্ম থেকে গাফিল আছেন; তিনি তাদের শাস্তি দেরি করে দেন এক নির্দিষ্ট দিনের জন্য...”
(সূরা ইবরাহীম ১৪:৪২)

★ আল্লাহর ন্যায়বিচার তাৎক্ষণিক নাও হতে পারে, কিন্তু তা অবশ্যই ঘটে।
★অনেক সময় আল্লাহ তা’আলা এই দুনিয়ায় নয়, আখিরাতে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেন — কারণ সেই বিচার কখনো ভুল হয় না, কারো প্রভাব সেখানে কাজ করে না।

মজলুমের দোয়া কখনোই বিফলে যায় না।

রাসূল ﷺ বলেছেন:
 “মজলুমের দোয়া ও আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা নেই।”
(সহিহ বুখারী, মুসলিম)

★কিন্তু দোয়ার কবুলের ধরন তিন রকম হয় —
*তাৎক্ষণিকভাবে আল্লাহ তা’আলা তা কবুল করেন,
* এর বিনিময়ে বিপদ দূর করেন,
* অথবা আখিরাতে তার জন্য আরও বড় পুরস্কার রাখেন।

অর্থাৎ আপনি যে দোয়া করছেন, তা নিশ্চয়ই ফলপ্রসূ হচ্ছে, যদিও তুমি তা এখন দেখতে পাচ্ছেননা।

★অন্যায়ের মুখে ধৈর্য ঈমানের বড় পরীক্ষা

“আর আমরা অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষতি ও জীবনের ক্ষতি দিয়ে... আর ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।”
(সূরা আল-বাকারা ২:১৫৫)

আল্লাহ বলেন — ধৈর্যশীলরা আল্লাহর ভালোবাসার মানুষ।
★আপনি অন্যায় সহ্য করছেন, তবুও আল্লাহর দিকে ফিরতে চান — এটি আপনার ঈমানের দুর্বলতা নয়, বরং আল্লাহ আপনাকে নিজে কাছে টানার উপায়।

★নামাজে মন বসছে না — এটি চিকিৎসাযোগ্য

আপনি মানসিক আঘাতের মধ্যে আছো। এমন অবস্থায় নামাজে মন না বসা স্বাভাবিক।
তবে চেষ্টা করুন ছোট ছোটভাবে ফিরে আসতে:

শুধু ফরজ,বিতির ও সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ নিয়মিত পড়ুন, অতিরিক্ত নফল না হলেও ক্ষতি নেই।

নামাজের আগে বা পরে ছোট আয়াত পড়ুন
 যেমন “হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হু...” (সূরা তাওবা ৯:১২৯) — এই আয়াত কষ্টের সময় অনেক প্রশান্তি দেয়।

★শরীয়তসম্মত পদক্ষেপ নিন,

বিশ্বাস রাখুন, ইসলাম শুধু ধৈর্যের কথা বলে না, বরং ন্যায়বিচারের জন্য চেষ্টা করাকেও ইবাদত মনে করে।

★যদি সম্ভব হয়, স্থানীয় আলেম বা ইসলামিক আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে আইনি ব্যবস্থা নিন।
★আপনার পরিবারের নিরাপত্তা আগে নিশ্চিত করুন।
★অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোও আল্লাহর পথে জিহাদ হিসেবে বিবেচিত।

আল্লাহর সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক গড়ুন।

আপনি আল্লাহর প্রতি রাগ বা প্রশ্ন তুলছেন — কিন্তু সেটাই তো প্রমাণ যে আপনি তাঁকে বিশ্বাস করেন, তাঁর কাছ থেকেই উত্তর আশা করছে ন।
এটি দূরত্ব নয়, বরং আল্লাহর দিকে ফেরার এক সূচনা।

দোয়া করুন এমনভাবে:

 “ইয়া আল্লাহ, আমি বুঝতে পারছি না কেন এটা ঘটছে, কিন্তু তুমি জানো আমি কত কষ্টে আছি। আমাকে শক্তি দাও যেন তোমার উপর বিশ্বাস হারাই না।”


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...