শরীয়তের আলোকে এবং কুরআন-হাদীসের আলোকে কিছু বিষয় আছে যা আপনাকে মানসিক ও ঈমানীভাবে শক্ত থাকতে সাহায্য করতে পারে।
“আপনি মনে করবেন না যে আল্লাহ জালিমদের কাজকর্ম থেকে গাফিল আছেন; তিনি তাদের শাস্তি দেরি করে দেন এক নির্দিষ্ট দিনের জন্য...”
(সূরা ইবরাহীম ১৪:৪২)
★ আল্লাহর ন্যায়বিচার তাৎক্ষণিক নাও হতে পারে, কিন্তু তা অবশ্যই ঘটে।
★অনেক সময় আল্লাহ তা’আলা এই দুনিয়ায় নয়, আখিরাতে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেন — কারণ সেই বিচার কখনো ভুল হয় না, কারো প্রভাব সেখানে কাজ করে না।
মজলুমের দোয়া কখনোই বিফলে যায় না।
রাসূল ﷺ বলেছেন:
“মজলুমের দোয়া ও আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা নেই।”
(সহিহ বুখারী, মুসলিম)
★কিন্তু দোয়ার কবুলের ধরন তিন রকম হয় —
*তাৎক্ষণিকভাবে আল্লাহ তা’আলা তা কবুল করেন,
* এর বিনিময়ে বিপদ দূর করেন,
* অথবা আখিরাতে তার জন্য আরও বড় পুরস্কার রাখেন।
অর্থাৎ আপনি যে দোয়া করছেন, তা নিশ্চয়ই ফলপ্রসূ হচ্ছে, যদিও তুমি তা এখন দেখতে পাচ্ছেননা।
★অন্যায়ের মুখে ধৈর্য ঈমানের বড় পরীক্ষা
“আর আমরা অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষতি ও জীবনের ক্ষতি দিয়ে... আর ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।”
(সূরা আল-বাকারা ২:১৫৫)
আল্লাহ বলেন — ধৈর্যশীলরা আল্লাহর ভালোবাসার মানুষ।
★আপনি অন্যায় সহ্য করছেন, তবুও আল্লাহর দিকে ফিরতে চান — এটি আপনার ঈমানের দুর্বলতা নয়, বরং আল্লাহ আপনাকে নিজে কাছে টানার উপায়।
★নামাজে মন বসছে না — এটি চিকিৎসাযোগ্য
আপনি মানসিক আঘাতের মধ্যে আছো। এমন অবস্থায় নামাজে মন না বসা স্বাভাবিক।
তবে চেষ্টা করুন ছোট ছোটভাবে ফিরে আসতে:
শুধু ফরজ,বিতির ও সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ নিয়মিত পড়ুন, অতিরিক্ত নফল না হলেও ক্ষতি নেই।
নামাজের আগে বা পরে ছোট আয়াত পড়ুন
যেমন “হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হু...” (সূরা তাওবা ৯:১২৯) — এই আয়াত কষ্টের সময় অনেক প্রশান্তি দেয়।
★শরীয়তসম্মত পদক্ষেপ নিন,
বিশ্বাস রাখুন, ইসলাম শুধু ধৈর্যের কথা বলে না, বরং ন্যায়বিচারের জন্য চেষ্টা করাকেও ইবাদত মনে করে।
★যদি সম্ভব হয়, স্থানীয় আলেম বা ইসলামিক আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে আইনি ব্যবস্থা নিন।
★আপনার পরিবারের নিরাপত্তা আগে নিশ্চিত করুন।
★অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোও আল্লাহর পথে জিহাদ হিসেবে বিবেচিত।
আল্লাহর সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক গড়ুন।
আপনি আল্লাহর প্রতি রাগ বা প্রশ্ন তুলছেন — কিন্তু সেটাই তো প্রমাণ যে আপনি তাঁকে বিশ্বাস করেন, তাঁর কাছ থেকেই উত্তর আশা করছে ন।
এটি দূরত্ব নয়, বরং আল্লাহর দিকে ফেরার এক সূচনা।
দোয়া করুন এমনভাবে:
“ইয়া আল্লাহ, আমি বুঝতে পারছি না কেন এটা ঘটছে, কিন্তু তুমি জানো আমি কত কষ্টে আছি। আমাকে শক্তি দাও যেন তোমার উপর বিশ্বাস হারাই না।”