আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
9 views
ago in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (4 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

আমার নেসাব পরিমান সম্পত্তি হয় 11ই জিলহজ্ব। তখন থেকে গত ছয় বছর আমি ১১ই জিলহজ্ব  যাকাতের হিসাব করে থাকি আমার যাকাতের সম্পত্তি বলতে কিছু স্বর্ণ এবং কিছু টাকা ছিল। গত বছর আমি টাকাটা দিয়ে স্বর্ণ কিনে ফেলি। স্বর্ণ যেহেতু সাড়ে সাত ভরি ছিল না তাই গত বছর যাকাত দেইনি। নেসাবের তারিখ পার হওয়ার কিছুদিন পর আমার হাতে আবার অল্প অল্প করে টাকা এসেছে। কিন্তু কত তারিখ থেকে আবার টাকা এসেছে তা আমার হিসাব নাই। এই বছর আমি আবার ১১ই জিলহজ্ব যাকাতের হিসাব করি ।


এখন আমি জানতে চাচ্ছি আমার যাকাতের হিসাব ঠিক আছে?

একজন আমাকে বলেছে যেহেতু গত বছর আমার নেসাব পুরা হওয়ার তারিখে নেসাব পরিমাণ সম্পত্তি ছিল না তাই ওই তারিখ বাতিল হয়ে গিয়েছে। যখন আবার টাকা এসেছিল সেই তারিখ থেকে হিসাব করতে হবে।
আমি ভেবেছিলাম আমার সম্পত্তির অধিকাংশই যেহেতু স্বর্ণ ছিল এবং টাকার পরিমান কম ছিল, তাই টাকা দিয়ে স্বর্ণ কিনে ফেলার কারণে যাকাত আসেনি , যেহেতু শুধু স্বর্ণের হিসাবে নেসাব পুরা হয়নি। কিন্তু আমার সম্পত্তি যেহেতু পুরাটাই ছিল তাই আগের তারিখটাই হবে। এজন্য পরের তারিখ হিসাব রাখিনি।

দয়া করে আমাকে জানাবেন আমার যাকাতের তারিখ কোনটি হবে? ১১ ই জিলহজ্ব নাকি পরে যেই তারিখে আবার টাকার হাতে এসেছিল সেই তারিখ?

1 Answer

0 votes
ago by (681,540 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও যাকাত।

আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ۱۱۰

 ‘তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন। -সূরা বাকারা : ১১০

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ۵۶

‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।’-সূরা নূর : ৫৬

সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-

وَ الْمُقِیْمِیْنَ الصَّلٰوةَ وَ الْمُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ سَنُؤْتِیْهِمْ اَجْرًا عَظِیْمًا۠۱۶۲

‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

 عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا زَكَاةَ فِي مَالٍ حَتَّى يَحُولَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ»
হযরত আয়েশা রা থেকে বর্ণিতঃনবী কারীম সাঃ বলেনঃ-সম্পত্তিতে কোনো যাকাত নেই যতক্ষণ না এক বৎসর পূর্ণ হবে।(সুনানে ইবনে মাজা-১৭৯২)

★শরীয়তের বিধান হলো মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্ধৃত্ত টাকা-পয়সা নিসাব পরিমাণ হলে এবং এক বছর স্থায়ী হলে বছর শেষে তার যাকাত আদায় করা ফরয হয়।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৭০৯১,৭০৯২

বছরের শুরু ও শেষে নিসাব পূর্ণ থাকলে যাকাত আদায় করতে হবে। মাঝে নিসাব কমে যাওয়া ধর্তব্য নয়। অবশ্য বছরের মাঝে সম্পূর্ণ সম্পদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তবে ঐ সময় থেকে নতুন করে বছরের হিসাব আরম্ভ হবে এবং এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর যাকাত আদায় করতে হবে। 
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৪২,৭০৪৪।)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে গত বছর নেসাবের তারিখ পার হওয়ার কতদিন পর আপনার মালিকানায় কিছু টাকা এসেছিলো?

তারিখ মনে করতে না পারলে সেক্ষেত্রে প্রবল ধারণার উপর আমল করবেন।

প্রবল ধারণার উপর ভিত্তি করে যে তারিখ আপনার কাছে মনে হয়, পরবর্তী বছর সেই তারিখে যদি আপনি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার উপর যাকাত ফরজ হবে, অন্যথায় যাকাত ফরজ হবেনা।

★সুতরাং আপনার যাকাতের তারিখ হলো পরে যেই তারিখে আবার টাকা হাতে এসেছিল, সেই তারিখ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...