আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু
আমি বিকাশে টাকা ডিপোজিট একাউন্ট খুলতে চাচ্ছি। কিন্তু এখানে মুনাফা দেয় যেটা আমি গ্রহণ করতে চাচ্ছি নাহ। অন্য কোন উপায় ও নেই টাকা জমা করার। আব্বু টাকা অপচয় করে ফেলে দেখে নিতান্ত বাধ্য হয়ে এটা করছি। এখন যে টাকা এক্সটা মুনাফা পাবো ওইটা দান করে দিবো ভাবছি। এতেও কি সুদের গুনাহ হবে? মূলত অতিরিক্ত মুনাফা টুকু দান করবো মূল যে জমার টাকা ওইটা রাখবো।

1 Answer

0 votes
by (85,590 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/14261/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান হলো সুদ ভিত্তিক ব্যাংকে একাউন্ট খোলা জায়েজ নেই। কারন এতে আপনি সুদ না খেলেও তারা আপনার টাকা খাটিয়ে সুদ খাবে,সুদি কর্মকান্ডে তারা আপনার টাকা লাগাবে,সুতরাং আপনার একাউন্ট খোলার মাধ্যমে আপনি সুদি কার্যক্রমে সহযোগিতা করছেন,তাই এসব ব্যাংকে একাউন্ট খোলা কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।

,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- “যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

,

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

,

★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা জায়েজ নেই।      

ইসলামী ব্যাংক গুলোতে একাউন্ট খোলা, এবং মুনাফা গ্রহন বিষয়ে  উলামায়ে কেরামদের মাঝে ২ টি মত রয়েছে।

,

★এক পক্ষ বলেন যে ইসলামী ব্যাংক গুলো তাদের কার্যক্রম নিয়ে যেসব দাবী করে থাকেন, তা যদি সঠিক হয়,তাহলে সেখানে একাউন্ট খোলা জায়েজ আছে,এবং মুনাফা গ্রহনও জায়েজ আছে।   

★আরেক পক্ষ বলেন যে, বাংলাদেশে কোন ব্যাংকই সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামীক রুলস মেনে ব্যাংকিং করছে না। তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে টাকা না রাখা ভাল। কিন্তু প্রয়োজন হওয়ার কারণে একাউন্ট খোলা জায়েজ হবে না।

,

তবে যেহেতু বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক ছাড়া বাকি ব্যাংকগুলো আমভাবে সুদী কারবার করে থাকে। শরয়ী বিধানের কোন তোয়াক্কাই করে না। সেই হিসেবে ইসলামী ব্যাংকগুলো শরয়ী বিধান পালনের কিছুটা হলেও চেষ্টা করে থাকে। যদিও পূর্ণাঙ্গ শরয়ী রুলস তারাও অনুসরণ করে না বলেই আমরা জানি। কিন্তুর মন্দের ভাল অবশ্যই। তাই অন্য ব্যাংকে একাউন্ট খোলার তুলনায় ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা নিরাপদ বলেই মনে হয়। বাকি আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন।

,

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

,

আপনি প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কোনো ইসলামিক ব্যাংকে (সুদ মুক্ত একাউন্ট বা ) কারেন্ট একাউন্ট খোলার চেষ্টা করবেন। আর যদি কারেন্ট একাউন্ট খোলা সম্ভব না হয়, তাহলে বাঁধ্য হলে সেভিংস বা ডিপোজিট একাউন্টও জায়েজ আছে। তবে তার মুনাফাটি  সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবেন।

فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ 

অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু। (সূরা বাকারা-১৭৩)

,

মুনাফা গ্রহন করবেননা, তবে সেখানে ছেড়েও আসবেননা।

উক্ত মুনাফা উত্তোলন করে তাহা  সতর্কতা মূলক মুনাফা গরিব মিসকিনদের মাঝে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবেন।

আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/4260/ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...