আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
413 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম, আমার বাবা গ্রামে থাকে। আমার বাবা রাজমিস্তিরির কাজ করে। দিন আনে দিন খাই। আমার বাবার নগদ ৫ হাজার টাকাও নেই। একটা গরু এবং গরুর একটা বাচ্ছা আছে। আর ১৫ কাটা জমি চাষ করে, তাও দাদার নামে ছিল, দাদা মারা গেছে এখন তার শরিক ৫ ফুপু বাবা সহ আরও দুই ভাই। আর ৫ কাটা জমি আমার বাবার নামে কিন্ত বন্দক রাখা।

আমার বাবা অনেক অসুস্থ, পায়ে ও মাজাই সমস্যা আবার হাই পেসার। ১মাস আগে তিনতালা থেকে পরে গিয়েছিল , আল্লাহর রহমতে ভাংগেনি কিন্ত চটে গিয়েছিল। এখনো পায়ে ব্যথা কিন্তু তাও কাজ করে। পায়ে জালা করে দারিয়ে কাজ করলে তাও করে। আমার বাবা যখন পরে গিয়েছিল হাসপাতালে যাবে টাকা ছিল না আমি টাকা দিয়েছিলাম তাই নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিল। আমার বাবার পায়ে কেমন একটা হয় হঠাৎ করে পায়ে বল পাই না । ভারার উপর থেকে কয়েক বার পরে যেতে গিয়েছিল। কিন্তু মানুষ ঠেকিয়েছিল আর সেদিন ত পরে গিয়েছিল। আমার মাও অসুস্থ, আমার ভাই আবার হাফেজি পড়ছে ওর একটা খরচ আছে। সব আবার কিনে খেতে হয়। সব মিলিয়ে আমার বাবার অনেক কষ্ট। আমার বাবা সব সময়ই অসুস্থ থাকে। বাবার শরীরের এমন অবস্থা বসে থাকতে পারলে ভাল হত।
আমার স্বামী যাকাত দেয়। আমার বাবাকে কি আমার স্বামী যাকাতের টাকা দিতে পারবে? দিতে পারলে আমার বাবার অনেক উপকার হত।

আরেকটা প্রশ্ন

আমার ভাইয়ের আলেম হওয়া অনেক ইচ্ছা। সে মন দিয়ে পড়ালেখা করে। তার ছোট বেলা থেকেই এই একটা ইচ্ছা। যখন ওর বয়স ৪ থেকে ৫ বছর তখন থেকে এখন ও  এবার দাখেলি মাদ্রাসাই সেভেনে উঠেছে আর মাদ্রাসাই পড়ছে হাফেজি এখনও পযন্ত ওই একই নিয়ত আলাম হবে। আমাদের মাদ্রাসাই ফাইভ পাস না করলে ভর্তি নেই না, ত ও শুধু বলবে হুজুরকে এবার কিন্ত আমার ভর্তি নিতে হবে , আমার পরীক্ষা কিন্ত শেষ, এতটাই ইচ্ছা তার মাদ্রাসাই পড়ার। ও যেই ওস্তাদের কাছে পড়ে তিনিও বলে ও অনেক ভাল পারে। আমার ভাইয়া আমাকে অনেক ভালোবাসে, মনের কথা বলে আমার সাথে। আমার সাথে বলছে আলেম হতে গেলেত অনেক টাকা লাগে তাই না আপু, আমি বলছি  এই কথা বলছিস কেন, তখন বলছে আমার বাবার ত টাকা নেই আমি কি ভাবে আলেম হব, আমি এত টাকা কোথাই পাব। বলেই চোখটা বন্ধ করে বলছে তুই যা আমি যুমাব, ওর চোখে আসলে পানি চলে এসেছে। তারপর আমি বলছি তোর চিন্তা করার দরকার নেই, আল্লাহ তোকে সাহায্য করবে, আল্লাহ তোকে আলেম বানাবে।

মুল কথা হল ও হাফেজ হওয়ার পর যখন সামনে আরও পড়বে তখন কি আমার স্বামী যাকাতের টাকা দিয়ে আমার ভাইয়া কে পড়তে সাহায্য করতে পারবে। তাকে যাকাতের টাকা দিতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ ۖ فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ [٩:٦٠]

যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। {সূরা তাওবা-৬০}
,
শরীয়তের বিধান মতে আত্মীয়-স্বজন যদি যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হয় তাহলে তাদেরকে যাকাত দেওয়াই উত্তম। ভাই, বোন, ভাতিজা, ভাগনে, চাচা, মামা, ফুফু, খালা এবং অন্যান্য আত্মীয়দেরকে যাকাত দেওয়া যাবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭১৬০,৭১৬১,৭১৬৪,৭১৭১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৫৪২-৫৪৬
,
যার উপর যাকাত ফরজ, তিনি তার উসুল এবং ফুরু তার উপরের আত্মীয় যথা পিতা-দাদা, পর দাদা প্রমুখ, দাদি-দাদির দাদি প্রমুখ। মা-নানী প্রমুখ। সেই সাথে ফুরু তথা ছেলে-মেয়ে, নাতি প্রমুখ। এবং স্ত্রীকে যাকাত দেয়া যাবে না। এছাড়া বাকি আত্মীয় স্বজনকে যাকাত দেয়া জায়েজ আছে।

فى الهندية، ولا يدفع إلى أصله وإن علا وفرعه وإن سفل كذا فى الكافى، (الفتاوى الهندية-14/188)
সারমর্মঃ
নিজের উসুল ফুরু' কে যাকাত দিতে পারবেনা।

وفى رد المحتار- (قوله وإلى من بينهما ولاد) اى بينه المدفوع إليه لأن منافع الاملاك بينهم متصلة  فلا يتحقق التمليك على الكمال….. اى أصله وإن علا كأبويه وأجداده وجداته من قبلهما وفرعه وان سفل… كاولاد الاولاد، (رد المحتار-2/346)
সারমর্মঃ
নিজের উসুল এবং ফুরু, তথা তার উপরের আত্মীয় যথা পিতা-দাদা, পর দাদা প্রমুখ, দাদি-দাদির দাদি প্রমুখ। মা-নানী প্রমুখ। সেই সাথে ফুরু তথা তার নিচের দিকের আত্মীয়, ছেলে-মেয়ে, নাতি প্রমুখ।
এদেরকে যাকাত দেওয়া যাবেনা।

وفى البحر الرائق- (قوله وزوجته وزوجها) اى لا يجوز الدفع لزوجته ولا دفع المرأة لزوجها… أطلق الزوجة فشمل الزوجة من وجه فلا فلا يجوز الدفع الى معتدة من بائن ولا بثلاث، (البحر الرائق-2/244)
সারমর্মঃ 
নিজ স্ত্রীকে যাকাত দেওয়া যাবেনা,স্ত্রী নিজ স্বামীকে যাকাত দিতে পারবেনা।

ویجوز دفع الزکاة إلی من سوی الوالدین والمولودین من الأقارب ومن الإخوة والأخوات وغیرہم لانقطاع منافع الأملاک بینہم. (بدائع الصنائع ۱۶۲/۲زکریا)
সারমর্মঃ
নিজ পিতা মাতা সন্তান সান্তানাদী ব্যাতিত নিজ আত্মীয় স্বজন(ভাই বোন ইত্যাদি) দের যাকাত দেওয়া যাবে।   
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
(০১)
হ্যাঁ  আপনার স্বামী যাকাতের টাকা আপনার বাবা (নিজ শশুর) কে দিতে পারবে।
,
(০২)
হ্যাঁ  আপনার স্বামী যাকাতের টাকা আপনার ভাইকে  দিতে পারবে।
কোনো সমস্যা নেই।
,
এই ছুরতে দ্বীনি শিক্ষার্জনের সহযোগিতারও ছওয়াব হবে ইনশাআল্লাহ।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...