আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

আমার বিয়ের সময় আমি কাজী সাহেবকে ১৮ নং কলমে "না" লিখতে বলি, কিন্তু পরিস্থিতির বিভিন্ন কারণে সে আমাকে "না" লিখতে দেয় নাই। অতঃপর ১৮ নং ধারা সম্পূর্ণ শূন্য থাকা অবস্থায় আমি কাবিননামায় স্বাক্ষর করি। কিন্তু স্বাক্ষর করার সময় আমার এটা জানা ছিল যে, আমি স্বাক্ষর করার পরে কাজী নিজ থেকে সেখানে স্ত্রীকে বিভিন্ন শর্তে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করার কথা লিখে দিবে। (তবে আমি তাতে সন্তুষ্ট ছিলাম না, আমার পক্ষ থেকে এর অনুমতিও ছিল না।) তো এটা জানার পরও আমি ১৮ নং ধারা সম্পূর্ণ শূন্য থাকা অবস্থায় স্বাক্ষর করি।

এখন শ্রদ্ধেয় মুফতি সাহেবের নিকট আমার প্রশ্ন হলো- যেহেতু ১৮ নং ধারা পুরোপুরি শূন্য থাকা অবস্থায় আমি স্বাক্ষর করেছি, তো এখন কি আমার স্ত্রী নিজেকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা পেয়েছে বলে গণ্য হবে? অর্থাৎ এখন আমার স্ত্রী ১৮ নং কলামে উল্লেখিত শর্তের ভিত্তিতে (যেগুলো কাজী নিজ থেকে আমার স্বাক্ষর করার পর শূন্য ঘরে লিখে দিয়েছিল) নিজেকে তালাক দিলে এতে কি তালাক কার্যকর হবে? নাকি অকার্যকর হবে? জানিয়ে আমাকে চির কৃতজ্ঞ করবেন।<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_250919_103140_021.sdocx-->

1 Answer

0 votes
by (84,270 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/50410/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেয়, অথবা সেখানে কাজী সাহেব বা অন্য কেহ হ্যাঁ লিখে দেয়, আর স্বামী তাহা জেনে শুনে নিচে স্বাক্ষর দেয়,আর এই নিকাহ নামা বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার পরে যদি লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে।

তবে যদি এমনটি না হয়, স্বামী যদি না জেনেই নিচে সাইন করে, সে যদি তালাকের ক্ষমতা প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা,অথবা এই নিকাহ নামা যদি বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।

كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)

সারমর্মঃ প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।

যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা।   

.

সুতরাং যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।

.

আরো জানুনঃ

https://www.ifatwa.info/16747/

.

https://ifatwa.info/52353/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

(আপনার প্রশ্নের উত্তর,মনযোগ সহকারে পড়বেন)

যেহেতু স্বামী তালাকের অধিকার দেয়নি, শুধুমাত্র স্বাক্ষরের কারণে স্ত্রী দিয়ানাতান তথা আল্লাহর আদালতে স্ত্রী তালাকের কোনো অধিকার পাবে না। তবে কাযাআতান তথা দুনিয়ার সাধারণ নিয়ম হিসেবে তথা স্ত্রী যদি কখনো কোর্টে তালাকের অধিকার নিয়ে মামলা দায়ের করে, তাহলে কাযী বা বিচারক স্ত্রীকে তালাকের অধিকারীনী বলে সিদ্ধান্ত দিবেন।কেননা যেভাবেই হোক কাবিনননামায় তো তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছে, এবং স্বামীর স্বাক্ষরও তাতে রয়েছে।

كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية،1/379, المحيط البرهانى،-4/486، تاتارخانية، -3/380)

ভাবার্থ- প্রত্যেক ঐ তালাকনামা যা স্বামী লিখেনি, স্বামী অস্বীকার করলে কোনো তালাকই পতিত হবে না।

.

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

.

সারমর্ম: স্বামীর স্বতঃস্ফূর্ত অনুমোদন ব্যতিত স্ত্রী কখনো তালাকের অধিকার পাবে না। স্বামীকে সরাসরি জিজ্ঞাসা না করে কাজী নিজ পক্ষ থেকে যদি ১৮ নং কলামে স্ত্রীকে অধিকার দিয়ে দেয়, তাহলে স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

No related questions found

...