আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ

কুরআনিক আমলের পাশাপাশি সালাফ, বা আকাবীরগণের বিভিন্ন পরীক্ষিত আমল করে আমি সুফল পেয়েছি। রিসেন্টলি আমি খারাপ সময় অতিবাহিত করছি। গত দেড় বছর ধরে ট্রাই করছি। সহজে কনসিভ হয় না, হলেও মিসক্যারেজ হয়ে যায়। ছয়মাসে দুইবার মিসক্যারেজ হয়েছে। উল্লেখ্য, আমার আম্মুর জ্বীনের সমস্যা আছে, আম্মুরও এমন মিসক্যারেজ হয়েছে কয়েকবার। আমারও জ্বীনের সমস্যা আছে, অলরেডি  দুবারর মিসক্যারেজ।

চিকিৎসার পাশাপাশি আমি এখন কি কি আমল করতে পারি? আমার কি কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এবং পুত্রসন্তান লাভের কোনো আমল আছে কিনা আপনাদের মতে। আমি পুত্র সন্তান আশা করি আল্লাহর কাছে, তিনি কন্যা দিলেও আশাহত হবো না। কিন্তু আল্লাহর কাছে চাইতে তো দোষ নেই। দেওয়ার মালিক তিনিই।

ছয়মাসে দুইটা অপারেশন হওয়ায় ডক্টর স্বাস্থ্যঝুকির জন্য ট্রাই করতে নিষেধ করেছে। এই ছয়মাসে আমার আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত। অনুগ্রহ করে আমাকে জানাবেন ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (84,270 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/31284/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

আল্লাহ তাআলা বলেন, 

يَهَبُ لِمَن يَشَآءُ إِنَٰثٗا وَيَهَبُ لِمَن يَشَآءُ ٱلذُّكُورَ  أَوۡ يُزَوِّجُهُمۡ ذُكۡرَانٗا وَإِنَٰثٗاۖ وَيَجۡعَلُ مَن يَشَآءُ عَقِيمًاۚ 

‘আল্লাহ যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন অথবা ছেলে-মেয়ে উভয়ই দান করেন। আবার যাকে ইচ্ছে বন্ধ্যা করেন।’ (সূরা আশ্শূরা ৫০)

.

এ আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি, সন্তান যেমন আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়, তেমনই সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে তাও আল্লাহর ইচ্ছাতেই নির্ধারণ হয়।  

এ আকিদা স্মরণ রাখা আবশ্যক যে সব কিছু করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতে। ছেলে মেয়ে উভয়ই আল্লাহর দান।  মূলত নেক সন্তানই কাম্য হওয়া উচিত।  ছেলে মেয়ে যা-ই হোক, যদি নেক সন্তান হয়, তাহলেই সফলতা।  

.

★★পুত্র সন্তান লাভ করতে অনেককে অনেক বুযুর্গানে দ্বীনের দেওয়া বিভিন্ন  রকমের তাবিজ ব্যবহার করতে বা দুয়া পড়তে দেখা যায়।  উক্ত দোয়া তাবীজে যদি কোন প্রকার শিরকী কথাবার্তা না থাকে, তাবিজের শর্ত সমূহ মেনেই তাহা ব্যবহার করা হয়, তাহলে কোন সমস্যা নেই।  সেই সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে, কুরআনের আয়াতের যেন কোন অসম্মান না হয়।

.

প্রকৃতপক্ষে গর্ভাবস্থার জন্য কোরআন-সু্ন্নাহয় বর্ণিত কোনো নির্দিষ্ট আমল বা দোয়া নেই। বরং একজন স্ত্রী তাঁর স্বামী কর্তৃক গর্ভবতী হওয়াটাই একটি স্বতন্ত্র এবং এতটাই ফজিলতপূর্ণ আমল যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বিখ্যাত মহিলা সাহাবি সালামা রাযি.কে বলেছেন—

أَفَمَا تَرْضَى إِحْدَاكُنَّ أَنَّهَا إِذَا كَانَتْ حَامِلًا مِنْ زَوْجِهَا ، وَهُوَ عَنْهَا رَاضٍ أَنَّ لَهَا مِثْلَ أَجْرِ الصَّائِمِ الْقَائِمِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ، فَإِذَا أَصَابَهَا الطَّلْقُ لَمْ يَعْلَمْ أَهْلُ السَّمَاءِ وَأَهْلُ الأَرْضِ مَا أُخْفِيَ لَهَا مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ ، فَإِذَا وَضَعَتْ لَمْ يَخْرُجْ مِنْهَا جُرْعَةٌ مِنْ لَبَنِهَا ، وَلَمْ يَمُصَّ مَصَّةً إِلا كَانَ لَهَا بِكُلِّ جُرْعَةٍ وَبِكُلِّ مَصَّةٍ حَسَنَةٌ ، فَإِنْ أَسْهَرَها لَيْلَةً كَانَ لَهَا مِثْلُ أَجْرِ سَبْعِينَ رَقَبَةً تُعْتِقُهُنَّ فِي سَبِيلِ اللَّهِ

তোমাদের কেউ কি এতে খুশি নয় যে, সে যখন স্বামী কর্তৃক গর্ভবতী হয় এবং স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্টও থাকে তখন (এই গর্ভকালীন) সে আল্লাহর পথে সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারারাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পাবে? তার যখন প্রসব ব্যথা শুরু হয় তখন তার জন্য নয়ন শীতলকারী কী কী নিয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান জমিনের কোনো অধিবাসীই জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার পরিবর্তে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। এ সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (অসুখ ইত্যাদির কারণে বিরক্ত করে মাকে ঘুমুতে না দেয়) তাহলে সে আল্লাহর পথে নিখুঁত সত্তরটি গোলাম আযাদ করার সওয়াব পাবে। (আলমু’জাম, তাবরানী: ৬৯০৮, আবু নুআইম: ৭০৮৯, মাজমাউজজাওয়াইদ: ৪/৩০৫ )

.

https://ifatwa.info/59703/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

(১) সর্বপ্রথম পরামর্শ দিবো, ভালো কোনো বিশুদ্ধ আকিদার মুদাব্বিরের শরণাপন্ন হওয়ার। মুদাব্বির মানে যিনি কুরআন হাদীস থেকে সেহেরের চিকিৎসা করে থাকেন। যাকে রুকইয়ায়ে শরঈয়্যাহ বলা হয়।

,

তাছাড়া আপনাকে কিছু রুকইয়ার পরমার্শ দিচ্ছি

(১) সকল প্রকার ফরয ওয়াজিব ইবাদত যত্নসহকারে পালন করা এবং সকল প্রকার হারাম ও নাজায়ে কাজ হতে বেঁচে থাকে।

(২) অধিক পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াত করা।

(৩) দু'আ, জায়েয তাবীয ও যিকিরের মাধ্যমে নিজেকে হেফাজতের চেষ্টা করা।

,

নিম্নোক্ত দু'আকে সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে পড়া।

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ،

দেখুন- http://istefta.info/1093 

,

প্রত্যক নামাযের পর ঘুমাইবার সময় এবং সকাল সন্ধ্যা আয়াতুল কুরসী পড়া এবং ঘুমাইবার সময় ও সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে সূরা নাস,সূরা ফালাক্ব ও সূরা ইখলাস তিনবার করে পড়া এবং প্রতিদিন নিম্নোক্ত দু'আটি একশতবার করে পড়া।

لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيئ قدير،

প্রতিদিন সকাল সাতটা করে খেজুর খাওয়া। মদিনার খেজুর হলে ভালো (এলাজে কুরআনী-০৩)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/10103 

,

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

.

১. পুত্র সন্তান কামনায় নবী রাসুল ও সালফে সালেহীনদের কোন আমল খুজে পাইনি। তবে কিছু বুযুর্গানে দ্বীন কিছু আমল বলেছেন।

আকীদা বিশুদ্ধ রেখে আবশ্যকীয় মনে না করে এমন আমল করা যেতে পারে।  


২. আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, ভালো কোনো বিশুদ্ধ আকিদার মুদাব্বিরের শরণাপন্ন হওয়ার। মুদাব্বির মানে যিনি কুরআন হাদীস থেকে সেহের বা জ্বীনের চিকিৎসা করে থাকেন। যাকে রুকইয়ায়ে শরঈয়্যাহ বলা হয়। তিনি আপনার উপরোক্ত বিষয়গুলোর বিষয়ে বেশী ভালো বলতে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...