আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
20 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।

১.কোনো কিছুর সত্যতা যাচাই করার জন্য নিজে কুরআন ছোয়া এবং অন্য কাউকে ছোয়ানো হলে (যদি সে এটা করতে না চায় এবং খানিকটা জোর করেই করানো হলে) তা কি গুনাহের অন্তর্ভুক্ত হবে? যদি গুনাহ হয় তবে তা কি ধরণের গুনাহ?এই গুনাহ থেকে তাওবা করার উপায় কি?

২.কেউ যদি কুরআন ছুয়েও মিথ্যা বলে (সেটা ইচ্ছে করেই হোক কিংবা অনিচ্ছাকৃতই হোক) তাহলে সেটা কি ধরণের গুনাহ এবং এর জন্য কিভাবে তাওবা করতে হবে?

৩.কেউ যদি কুরআন ছুয়ে সত্যতার প্রমাণ দিতে বাধ্য হয় তাহলে তার কী গুনাহ হবে?গুনাহ হলে তা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?

1 Answer

0 votes
by (672,210 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/121669/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، سَمِعَ رَجُلاً، يَقُولُ لاَ وَالْكَعْبَةِ . فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ لاَ يُحْلَفُ بِغَيْرِ اللَّهِ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ كَفَرَ أَوْ أَشْرَكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَفُسِّرَ هَذَا الْحَدِيثُ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ قَوْلَهُ " فَقَدْ كَفَرَ أَوْ أَشْرَكَ " عَلَى التَّغْلِيظِ . وَالْحُجَّةُ فِي ذَلِكَ حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سَمِعَ عُمَرَ يَقُولُ وَأَبِي وَأَبِي . فَقَالَ " أَلاَ إِنَّ اللَّهَ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ " . وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " مَنْ قَالَ فِي حَلِفِهِ وَاللاَّتِ وَالْعُزَّى فَلْيَقُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا مِثْلُ مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " إِنَّ الرِّيَاءَ شِرْكٌ " . وَقَدْ فَسَّرَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هَذِهِ الآيَة : ( وَمَنْ كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلاً صَالِحًا ) الآيَةَ قَالَ لاَ يُرَائِي .

 ইবনে উমার (রঃ) একটি লোককে বলতে শুনলেন ‘না, কাবার কসম!’ তিনি তাকে বললেন, ‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম খেও না। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি গায়রুল্লাহ নামে কসম করে, সে কুফরি অথবা শিরক করে।” (আবু দাউদ ৩২৫১, তিরমিজি ১৫৩৫ নং)

وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، ح وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ، عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ " . قَالَ عُمَرُ فَوَاللَّهِ مَا حَلَفْتُ بِهَا مُنْذُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْهَا ذَاكِرًا وَلاَ آثِرًا .

আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু সারহ ও হারমালাহ্ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ..... উমার ইবনু খাত্তাব (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা'আলা তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। উমার (রাযিঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি যখন থেকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি, তখন থেকে আর কখনও সে নামে কসম করিনি, নিজের পক্ষ থেকেও নয়, আর অপরের উদ্ধৃতি দিয়েও নয়। (বুখারী ৩৮৩৬,মুসলিম ১৬৪৬,ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪১০৮, ইসলামিক সেন্টার ৪১০৬)

https://www.ifatwa.info/579 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
আল্লাহর নাম ব্যতীত অন্য কিছু দ্বারা শপথ করলে সেটা শরয়ী শপথ হিসেবে গণ্য হবে না। তবে শুধুমাত্র কুরআনে কারীম সম্পর্কে ফুকাহায়ে কিরাম নিম্নোক্ত ব্যাখ্যা সাপেক্ষ্যে শপথ হওয়ার আলোচনা করে থাকেন। যেমনঃ কেউ যদি কুরআনে কারীম কে হাতে নিয়ে বা তাতে হাত রেখে কোনো কথা বলে,কিন্তু সে শপথ/কসম ইত্যাদি শব্দ উল্লেখ না করে, অথবা কুরআনের দিকে ইশারা করে বলে, এই কুরআনের শপথ, তাহলে সেটা শপথ হবে না। হ্যা তবে যদি কুরআনে কারীমের দিকে ইশারা করা ব্যতীত কেউ বলে,কুরআনের শপথ অথবা কালামুল্লাহর শপথ অথবা কুরআনের দিকে ইশারা করে এভাবে বলে যে,তাতে যে আল্লাহর কালাম রয়েছে,তার শপথ, তাহলে তখন শরয়ী শপথ (কসম) হয়ে যাবে।যা ভঙ্গ করলে অবশ্যই কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে।(আহসানুল ফাতাওয়া-৫/৪৮৮) 

★শুধুমাত্র কুরআন ছুঁয়ে কসম করলেই কসম হবেনা। 

তবে যদি কুরআনে কারীমের দিকে ইশারা করা ব্যতীত কেউ বলে,কুরআনের কসম অথবা কালামুল্লাহর কসম অথবা কুরআনের দিকে ইশারা করে এভাবে বলে যে,তাতে যে আল্লাহর কালাম রয়েছে,তার কসম,সেক্ষেত্রে কসম হবে।

এমতাবস্থায় কসম ভঙ্গ করলে তার কাফফারা দেয়া আবশ্যক হবে।

কুরআন ছুঁয়ে বা না ছুঁয়ে উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে কসম করলে শিরক হবেনা। 

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (3 / 712):

لا يقسم (بغير الله تعالى كالنبي والقرآن والكعبة) قال الكمال: ولايخفى أنّ الحلف بالقرآن الآن متعارف؛ فيكون يمينًا.

মর্মার্থঃ 
গাইরুল্লাহ এর নামে (যেমন নবি, কুরআন, কা'বা) এর নামে কসম করা যাবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
কোনো কিছুর সত্যতা যাচাই করার জন্য কুরআন স্পর্শ করা বা অন্য কাউকে স্পর্শ করানো শরীয়তে অনুমোদিত নয়।

কুরআন পাঠ, বুঝা ও এর উপর আমল করার জন্য নাজিল হয়েছে; সত্য–মিথ্যা যাচাই বা শপথ করানোর বস্তু বানানো এর মর্যাদার পরিপন্থী।

ইসলামে সত্যতা প্রমাণ হয় সাক্ষী, প্রমাণ (বাইয়্যিনা), শপথ (ইয়ামিন) ইত্যাদির মাধ্যমে। কুরআন স্পর্শ করানো কোনো শরঈ দলিল নয়।

অন্য কাউকে জোর করে স্পর্শ করানোর দরুন
এতে কুরআনের অবমাননার সম্ভাবনা আছে, তাই এটি আরও বেশি নিষিদ্ধ।

নিজে বা অন্য কাউকে দিয়ে “সত্যতা যাচাইয়ের জন্য” কুরআন স্পর্শ করানো জায়েজ নয়।
বরং বিষয়টি শরীয়ত অনুযায়ী সাক্ষ্য, প্রমাণ বা শপথের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যিনি অন্যকে কুরআন ছুয়ে সত্যতার প্রমাণ দিতে বাধ্য করেছে,সে অপরাধ করেছে।

এক্ষেত্রে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে,পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...