আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
4 views
ago in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (1 point)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

সম্মানিত উস্তাজমন্ডলী..

আমার মামা ও বাবা দুজনে একটা দোকান নেয়ার আগে শেয়ারে ব্যবসা করতে চান।দোকান নেয়ার পর মামা আব্বুর কাছ থেকে নেয়া টাকা শেয়ার হিসেবে না নিয়ে করজে হাসানা হিসেবে নিতে চান বা পরে একটা কিছু দিবেন এরকম।

পরে আব্বু আম্মু মনোক্ষুণ্ন হওয়ার পর ও আমরা বলার পর মালিক তিনি শুধু বিনিয়োগ হিসেবে ধরেন।তো আব্বুর তখন তিন লাখ দেন ও মামার ৭ লাখ হবে। মালিকানা সমান রাখলে হয়তো সমান বা বেশি দিতেন, এমন হবে।

তখন আমরা বলেছিলাম আব্বুর যখন তিন লাখ তাহলে  সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে নীট লাভ থেকে ৩০% বা ১০ ভাগের তিন ভাগ আব্বুকে দেয়ার জন্য।

তিনিও তখন রাজি হন ও এভাবে দিয়ে আসছেন। *এইভাবে চুক্তি টা কি ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী ঠিক ছিল?

কয়েকমাস পর বাবা পুনরায় তিন লাখ মোট ছয় লাখ বিনিয়োগ করেন। অন্য দিকে মামাও তার প্রতি মাসে লাভ থেকে পুনরায় ব্যবসায়ের মূলধন বৃদ্ধি করছেন, সাথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শ্রম দিচ্ছেন। আবার যখন ইচ্ছা প্রয়োজনে উত্তোলন করছেন। আবার ঈদ আসলে বাবাও আরো লাখ কিছু দিচ্ছেন। তখন মামাও টোটাল বিনিয়োগ ধরে ৩০% করে নীট লাভ থেকে লভ্যাংশ দিচ্ছেন। আবার প্রয়োজনে উত্তোলন করছেন।

আরেকটি বিষয়; মামা এই শেয়ারের ব্যবসা আর পাঁচ বছর রাখতে ইচ্ছুক , সর্বোচ্চ সাত বছর। এরপর উনি একাই করতে ইচ্ছুক যেটা আগেও চেয়েছিলেন।। কিন্তু আমার বাবা এগুলো এতো বুঝেন না,তাই ইদানিং আমার ছোট ভাই তার জমানো ১ লাখ মামার কাছে শেয়ারে দিয়ে ব্যবসা শেখার চেষ্টা করছে,তার ৮-১০ ঘন্টা সময় দিয়ে। এক্ষেত্রে তার পাওনা ন্যায্য কেমন হতে পারে?

আমার প্রশ্ন হচ্ছে ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী তাদের শেয়ার ব্যবসা কি ঠিক পথে এগোচ্ছে? নাকি ভুল ত্রুটি আছে?উনারাও জানতে আগ্রহী।

আর ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী কিভাবে এই শেয়ারের ব্যবসায়ের লাভলোকসান বন্টন করতে হবে সহজ ভাবে এখান থেকেই যদি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিতেন বা দিকনির্দেশনা দিতেন যেন সবাই ন্যায় ও ইনসাফের সাথে চলতে পারেন..?

অনেক কিছু লিখে ফেলেছি মাফ করে দিবেন উস্তাজ...

-জাযাকুমুল্লহু খইরন।

1 Answer

0 votes
ago by (670,230 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ব্যবসার ক্ষেত্রে এক পক্ষের মাল,অপর পক্ষের শ্রম দেওয়াকে মুদারাবা বলা হয়।
এটি জায়েজ আছে। 
,
মুদারাবার ক্ষেত্রে শরীয়তের উসুল হলো যাহা লাভ হবে,তাহা শতকরা হারে উভয়ের মাঝে বন্টন করার চুক্তি করতে হবে।
কোনো নির্দিষ্ট টাকার চুক্তি করা যাবেনা,লোকসান হলে আগে লাভের টাকা থেকে সেটা পূরন করা হবে,অতঃপর মূলধন থেকে পূরন করা হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ     
بَاب الشَّرِكَةِ وَالْمُضَارَبَةِ
حَدَّثَنَا أَبُو السَّائِبِ، سَلْمُ بْنُ جُنَادَةَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْحَفَرِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ اشْتَرَكْتُ أَنَا وَسَعْدٌ، وَعَمَّارٌ، يَوْمَ بَدْرٍ فِيمَا نُصِيبُ فَلَمْ أَجِئْ أَنَا وَلاَ عَمَّارٌ بِشَىْءٍ وَجَاءَ سَعْدٌ بِرَجُلَيْنِ .
শারীকাত (অংশিদারী) ও মুদারাবা ব্যবসা
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন সাদ (রাঃ) , আম্মার (রাঃ) ও আমি গানীমাতের মালের ব্যাপারে অংশীদার হই (এই মর্মে যে, আমরা যা পাবো তা তিনজনে ভাগ করে নিবো)। আম্মার ও আমি কিছুই আনতে পারিনি। অবশ্য সাদ (রাঃ) দু’জন যুদ্ধবন্দী নিয়ে আসেন।
নাসায়ী ৪৬৯৭, আবূ দাউদ ৩৩৮৮, বায়হাকী ফিস সুনান ৪/১৯৪, ইরওয়া ১৪৭৪। 

 مَالِك وَجْهُ الْقِرَاضِ الْمَعْرُوفِ الْجَائِزِ أَنْ يَأْخُذَ الرَّجُلُ الْمَالَ مِنْ صَاحِبِهِ عَلَى أَنْ يَعْمَلَ فِيهِ وَلَا ضَمَانَ عَلَيْهِ وَنَفَقَةُ الْعَامِلِ فِي الْمَالِ فِي سَفَرِهِ مِنْ طَعَامِهِ وَكِسْوَتِهِ وَمَا يُصْلِحُهُ بِالْمَعْرُوفِ بِقَدْرِ الْمَالِ إِذَا شَخَصَ فِي الْمَالِ إِذَا كَانَ الْمَالُ يَحْمِلُ ذَلِكَ فَإِنْ كَانَ مُقِيمًا فِي أَهْلِهِ فَلَا نَفَقَةَ لَهُ مِنْ الْمَالِ وَلَا كِسْوَةَ قَالَ مَالِك وَلَا بَأْسَ بِأَنْ يُعِينَ الْمُتَقَارِضَانِ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا صَاحِبَهُ عَلَى وَجْهِ الْمَعْرُوفِ إِذَا صَحَّ ذَلِكَ مِنْهُمَا قَالَ مَالِك وَلَا بَأْسَ بِأَنْ يَشْتَرِيَ رَبُّ الْمَالِ مِمَّنْ قَارَضَهُ بَعْضَ مَا يَشْتَرِي مِنْ السِّلَعِ إِذَا كَانَ ذَلِكَ صَحِيحًا عَلَى غَيْرِ شَرْطٍ قَالَ مَالِك فِيمَنْ دَفَعَ إِلَى رَجُلٍ وَإِلَى غُلَامٍ لَهُ مَالًا قِرَاضًا يَعْمَلَانِ فِيهِ جَمِيعًا إِنَّ ذَلِكَ جَائِزٌ لَا بَأْسَ بِهِ لِأَنَّ الرِّبْحَ مَالٌ لِغُلَامِهِ لَا يَكُونُ الرِّبْحُ لِلسَّيِّدِ حَتَّى يَنْتَزِعَهُ مِنْهُ وَهُوَ بِمَنْزِلَةِ غَيْرِهِ مِنْ كَسْبِهِ 
মালিক (রহঃ) বলেনঃ মুযারাবাত বা শরীকী কারবার এইভাবে বৈধ যে, কেহ কাহারও নিকট হইতে এই শর্তে টাকা নেয় যে, সে শ্রম ও মেহনত করিবে। ক্ষতি হইলে সে দায়ী থাকিবে না। সফরে খাওয়া-দাওয়া এবং বহন খরচ ও অন্যান্য বৈধ খরচ ঐ মাল হইতে নিয়ম মাফিক ব্যয় করা হইবে মূলধন অনুযায়ী। অবশ্য অর্থ গ্রহণকারী আবাসে থাকিলে মূলধন হইতে ব্যয় করিতে পারবে না।

মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি অর্থ গ্রহণকারী অর্থদাতাকে, অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারীকে তাহার শ্রমের পরিমাণ মতো কোন শর্ত ব্যতীত সাহায্য করে তবে তাহাতে কোন ক্ষতি নাই। যদি অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারী হইতে শর্ত ব্যতীত কোন বস্তু খরিদ করে তবে ইহাতেও কোন ক্ষতি নাই।

মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে এবং স্বীয় দাসকে শরীকী কারবারের জন্য অর্থ দেয় এবং এই শর্ত করে যে, উভয়ই ইহাতে কাজ করিবে, তবে তাহা জায়েয আছে। কারণ নির্ধারিত লভ্যাংশের মালিক ক্রীতদাস হইবে, তাহার প্রভু উহা ছিনাইয়া লইতে পরিবে না, এই মালের স্বত্বাধিকারী ক্রীতদাসই থাকিবে।
(মুয়াত্তা মালিক ১৩৮৯)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে সেই ব্যবসা হতে আপনার বাবার লভ্যাংশ যেহেতু নির্দিষ্ট, অর্থাৎ এখানে যেহেতু আপনার বাবাকে শতকরা ৩০% লভ্যাংশ দেয়ার চুক্তি হয়েছে,সুতরাং এক্ষেত্রে উক্ত ব্যবসা হতে শতকরা ৩০% লভ্যাংশ নেয়া আপনার বাবার জন্য জায়েজ আছে। 

তবে এক্ষেত্রে উক্ত ব্যবসায় লোকসান হলে আপনার বাবাও সেই লোকসানে শরীক হবে,এমনটি চুক্তিতে উল্লেখ থাকতে হবে। 

আপনার বাবা যে কয়েকমাস পর পুনরায় তিন লাখ মোট ছয় লাখ বিনিয়োগ করেন,সুতরাং তার লভ্যাংশ শতকরা হারে বাড়বে কিনা? সে বিষয়টি স্পষ্ট আকারে চুক্তি করতে হবে।

★এক্ষেত্রে ছোট ভাই যে তার জমানো ১ লাখ আপনার মামার কাছে শেয়ারে দিয়ে ব্যবসা শেখার চেষ্টা করছে,তার ৮-১০ ঘন্টা সময় দিয়ে,এক্ষেত্রে তার লভ্যাংশ শতকরা হারে নির্দিষ্ট করতে হবে।

এক্ষেত্রে দ্রুত আপনার বাবা আপনার মামা ও আপনার ভাইয়ের বসা উচিত।

নতুবা এভাবে লভ্যাংশ নির্দিষ্ট না করে অস্পষ্ট রেখে সেখানে টাকা ইনভেস্ট করা শরীয়ত অনুমতি দিবে না।

★এক্ষেত্রে ব্যাবসায়ীদের পরস্পর সম্মতিতে তারা লভ্যাংশ লভ্যাংশ শতকরা হারে নির্দিষ্ট করবে।
এটি তাদের ইখতিয়ারধীন বিষয়। 

যেই পরিমাণ লাভ নেয়ার চুক্তি করা হবে, লোকসানের ক্ষেত্রেও একই পরিমাণ নির্দিষ্ট হবেনা।
বরং এখানে যে যেই পরিমান টাকা ইনভেস্ট করেছে,সেই হারেই লোকসানে ভাগীদার হতে হবে।

উদাহরণঃ-
দুইজন ব্যাক্তি উভয়েই ৫০% টাকা দিয়ে শরিকানা ব্যবসা করছে।
এখানে উভয়ে টাকা দিলেও ব্যবসার দেখভাল একজন করে অপরজন করেনা,অর্থাৎ একজন শ্রম দেয়,অপরজন শ্রম দেয়না।
তাই তাদের মাঝে লভ্যাংশ এভাবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে যে যে ব্যবসায় টাকা লাগানোর পাশাপাশি উক্ত ব্যবসায় দেখাশোনার কাজও করছে,তার লভ্যাংশ হলো ৬০%। 
আর যে ব্যাক্তি শুধু ৫০% টাকা দিয়েছে,উক্ত ব্যাবসায় কাজ করছেনা,তার লাভ ৪০%।

এখন উক্ত ব্যবসায় লোকসানের ক্ষেত্রে উভয়েই যেই টাকা ইনভেস্ট করেছিলো সেদিক লক্ষ্য করে লোকসানে ভাগীদার হতে হবে।

অর্থাৎ উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু উভয়েই ৫০% টাকা দিয়ে শরিক হয়েছিলো,তাই এখন লোকসানে উভয়ে ৫০% হারেই শরীক হবে। 

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...