আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
13 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)

আসসালামু আলাইকুম, 

অফিসে কয়েকজন মিলে আমরা আসর এবং মাগরিবের  নামাজ জামাতের সাথে আদায় করি।
অফিস রাত ৮:৩০ শেষ হয় এখন যিনি ইমামতি করেন  উনি এশার নামাজ মসজিদে যেয়ে আদায় করতে চান তখন বাকিরা আর জামাতে নামাজ পড়েন না।  যিনি ইমামতি করেন উনাকে  মসজিদে না যেয়ে  অফিসে তাদের নামাজের ইমামতি করতে অনুরোধ করেন  এক্ষেত্রে যিনি ইমামতি করেন উনি কি করবেন? <!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_250914_102223_538.sdocx-->

1 Answer

0 votes
ago by (81,900 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/55375/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

আল্লাহ্ তাআলা বলেন,

إِنَّ الصَّلاَةَ كَانَتْ عَلَى المُؤْمِنِيْنَ كِتَابًا مَوْقُوْ تَا۔

নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। সূরা নিসা, আয়াত,১০৩

وَارْكَعُوْا مَعَ الرَّاكِعِيْنْ۔

আর রুকূ আদায়কারীদের সাথে রুকূ করো। (সূরা বাক্বারাহ্, আয়াত, ৪৩)

,

পাঁচ ওয়াক্ত নামায নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করা ফরয এবং ফরয নামাযে জামাআতে শরীক হওয়া ওয়াজিব।

,

নামায ইসলামের পাঁচ রোকনের দ্বিতীয় রোকন এবং শ্রেষ্ঠ ইবাদত। কেননা তা আল্লাহ্র সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক ও বন্ধন সৃষ্টি করে। নামায সম্পর্কে জোর তাকীদ ও ফযীলত এসেছে। সুতরাং নামাযের প্রতি আমাদের খুব যত্নবান হওয়া উচিত এবং নামাযের মাসায়েল জেনে পূর্ণ হক আদায় করে নামায পড়া উচিত। আর মা-বাবারও কর্তব্য ৭ বছর বয়স থেকে সন্তানকে নামাযের আদেশ করা এবং ১০ বছর বয়স থেকে নামাযে অবহেলার জন্য প্রহার দ্বারা শাসন করা, যাতে নামায ফরয হওয়ার আগেই তারা ওয়াক্তমত নামায পড়তে অভ্যস্ত হয়ে যায়।

,

নবী সা. সারা জীবন জামাআতের পাবন্দী করেছেন। তদ্রূপ সাহাবা কিরামের যামানা থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত উম্মত জামাআতের পাবন্দী করে এসেছে। সাহাবা কিরামের যুগে জামাআতের এতো গুরুত্ব ছিলো যে, মাযূর (একান্ত অপারগ) ও প্রকাশ্য মুনাফিক ছাড়া কেউ জামাআত ত্যাগ করতেন না। জামাআত ত্যাগে অভ্যস্ত ব্যক্তি ফাসিক এবং ইসলামী বিচার ব্যবস্থায় তার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য নয়। হাদীস শরীফে নামাযের বহু ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেন,

صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاةِ الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً۔

জামাআতের নামায একা নামাযের চেয়ে সাতাশ গুণ উত্তম। (সহীহ্ মুসলিম, ৬৫০)

,

জামাআতে নামায পড়ার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রা. বলেন, আমাদের যুগে গুরুতর অসুস্থ অথবা একমাত্র প্রকাশ্য মুনাফিক ছাড়া কেউ জামাআত ত্যাগ করতো না। আর যদি অসুস্থ ব্যক্তি  দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটতে সক্ষম হলে সেও জামাআতে এসে শরীক হতো। এবং বলেন, রাসূল সা. আমাদেরকে হেদায়াতের সুন্নাতগুলি শিক্ষা দিয়েছেন । আর আযান হয় এমন মসজিদে নামায পড়া (অর্থাৎ, জামাআতে নামায পড়া) হেদায়াতের সুন্নাতগুলির অন্তর্ভুক্ত।  (মিরক্বাতুল মাফাতীহ্ শর্হে মিশকাতুল মাসাবীহ্, ১০৭২)

,

জামাআত কাদের উপর ওয়াজিব?

যদি শরী’আত সম্মত কোন ওযর না থাকে তাহলে ১.প্রাপ্ত বয়স্ক ও ২.স্বাধীন ৩.ও ৪. মুসলমান পুরুষের জন্য জামাআতের সাথে নামায পড়া ওয়াজিব।

,

যে কোন নামায জামাআত ছাড়াও আদায় হয়ে যায়। তবে জুমুআ ও দুই ঈদের জন্য জামাআত শর্ত। জামাআত ছাড়া জুমুআ ও ঈদের নামায সহীহ্ নয়। নাবালক, অসুস্থমস্তিস্ক, গোলাম ও ওযরগ্রস্ত  ব্যক্তির উপর জামাআত ওয়াজিব নয়। তবে তারা জামাআতে নামায পড়লে সওয়াবের অধিকারী হবে। অবশ্য স্ত্রীলোকদের ঘরে নামায পড়াই উত্তম। (এই ফিতনার যুগে)

,

জামাআত ওয়াজিব না হওয়ার ওযর

১.প্রচণ্ড বৃষ্টি বা ২.ঠাণ্ডা বা ৩.অন্ধকার হলে,

৪.পথে ভীষণ কাদা হলে,

৫.রাতে প্রচণ্ড ঝড় হলে,

৬.হেঁটে মসজিদে যেতে না পারার মতো অসুস্থ বা ৭.বৃদ্ধ হলে

৮.অন্ধের সাহায্যকারী না থাকলে

৯.কেউ যদি এমন রোগীর সেবায় ব্যস্ত থাকে যে, তার অনুপস্থিতিতে রোগীর ক্ষতি বা কষ্ট হবে, (তাহলে তার জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)

১০.সফরে কাফেলার যাত্রার সময় হয়ে গেলে, গাড়ী ও জাহাজ ছেড়ে দেয়ার সময় হয়ে গেলে এবং সামান হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকলে (জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)

১১.ইস্তিঞ্জার হাজত হলে,

১২.ক্ষুধার সময় খাবার উপস্থিত হলে এবং খাবার চাহিদা থাকলে (জামাআতে উপস্থিত হওয়া ওয়াজিব নয়)

,

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই!

,

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সবাই মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়লে বেশী সওয়াব হবে। তাই সম্ভব হলে সবাই মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়ে নিবেন। আর এটা যদি কোনো ভাবে সম্ভব না হয় তাহলে অফিসেও জামাতে নামাজ পড়লে জামাতে নামাজ পড়ার সওয়াব পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যিনি ইমামতি করেন উনি এই দিকে লক্ষ্য করে অফিসেও জামাত করতে পারেন যে, অফিসে জামাত না হলে অনেকে নামাজ না পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। সর্বোপরি সবাই মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়লে বেশী সওয়াব হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...