জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।
(মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ২/২৮)
যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, ওই ব্যক্তি যেদিকে তার মন বেশি যায় (প্রবল ধারণা হয়), সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যার ওপর আমল করবে এবং প্রত্যেক রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে, শেষে সিজদায়ে সাহু করবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ دَاوُدَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى ثَلاَثًا أَمْ أَرْبَعًا فَلْيَطْرَحِ الشَّكَّ وَلْيَبْنِ عَلَى مَا اسْتَيْقَنَ ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَإِنْ كَانَ صَلَّى خَمْسًا شَفَعْنَ لَهُ صَلاَتَهُ وَإِنْ كَانَ صَلَّى إِتْمَامًا لأَرْبَعٍ كَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ " .
মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালাফ (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন রাকাআত আদায় করা হলো না চার রাকাআত আদায় করা হলো- সালাতের মধ্যে তোমাদের কারো এরূপ সন্দেহ হলে সে যে কয় রাক’আত আদায় করেছে বলে নিশ্চিত হবে (তিন রাকাআত) সে কয় রাকাআতকে ভিত্তি ধরে অবশিষ্ট করণীয় করবে। এরপর সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সিজদা করবে। (এখন) সে যদি পাঁচ রাকাআত আদায় করে থাকে তাহলে এ দু' সিজদা দ্বারা তার সালাতের জোড়া পূর্ণ হয়ে যাবে। আর যদি তার সালাত চার রাকাআত হয়ে থাকে তাহলে (এই) সিজদা দুটি শয়তানের মুখে মাটি নিক্ষেপের শামিল হবে। (মুসলিম ১১৫৯.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৫২, ইসলামীক সেন্টার ১১৬১)
বিস্তারিত জানুনঃ-
সেজদার সংখ্যা নিয়ে এমন সন্দেহ হলে প্রবল ধারণার উপর আমল করতে হয়।
আর কোনো দিকে প্রবল ধারণা না হলে সেক্ষেত্রে কম সংখ্যক সেজদাহ ধরে আরো একটি সেজদাহ আদায় করে শেষে সেজদায়ে সাহু দেয়া।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে আপনার নামাজ শুদ্ধ হয়েছে।
আপনি যেভাবে সেজদায়ে সাহু দিয়েছেন,এটি সঠিক পদ্ধতি।
(০২)
এক্ষেত্রে তো আপনি প্রথমে প্রবল ধারণার উপর আমল করবেন।
কোন দিকেই যদি আপনার প্রবল ধারণা না হয় সেক্ষেত্রে আপনি কম রাকাত কে ধরে আরও এক রাকাত আদায় করে শেষে সেজদায় সাহু দিবেন।
যেহেতু আপনি সন্দেহের মধ্যে আছেন, সেক্ষেত্রে পঞ্চম রাকাত হয়েছে বলে নিশ্চিত হচ্ছেন কিভাবে?
এক্ষেত্রে তো পঞ্চম রাকাত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়ার কোন সুযোগ নেই!
যদি আপনি নিশ্চিত হতেন! তাহলে কেনই আরেক রাকাত আদায় করলেন?
কেননা আপনি যদি নিশ্চিত থাকেন যে চার রাকাতে হয়েছে,সেক্ষেত্রে তো আরেক রাকাত আদায়ের সুযোগ নেই।
(০৩)
আপনি তাশাহহুদ পড়ে ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে আবার তাশাহুদ,দরুদ শরীফ,দোয়ায়ে মাছুড়া পড়ে শেষ করে ২ বার সালাম ফিরাবেন।
হানাফি মাযহাব মোতাবেক এটিই সহীহ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
হযরত ছাওবান রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لِكُلِّ سَهْوٍ سَجْدَتَانِ بَعْدَ مَايُسَلِّمُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,প্রত্যেক ভূলের(তরকে ওয়াজিবের)জন্য যযলামের পর দু'টি সেজদা রয়েছে।(সুনানু আবি-দাউদ-১০৩৮,বায়হাক্বী-২/৩৩৭)
উক্ত হাদীসে সালামের পর সেজদায়ে সাহুর কথা বলা হয়েছে।সালামের পর বলতে এক সালামের পর।কেননা দুই সালাম তো নামাযকে সমাপ্ত করে দেয়।
(০৪)
নামাজে শেষ বৈঠকে দরুদের শেষাংশ পড়া হয়েছে কিনা এ বিষয়ে সন্দেহ হলে দরুদের শেষাংশ পুনরায় পাঠ করবেন।
চাইলে পুরো দরুদ শরীফ আবার পাঠ করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে কোনো সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
নামাজের শেষ বৈঠকে একাধিকবার দুরুদ শরীফ পাঠ করলে বা একাধিকবার দোয়ায়ে মাসুরা পাঠ করলেও সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হয় না।