আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
ago in সালাত(Prayer) by (11 points)
১.যোহর কিংবা আসরের ওয়াক্তের নামাজে তিলাওয়াতের সময় যদি ফিসফিস শব্দ হয় যে হা,সিন,ছ্বদ উচ্চারণের সময় বাতাস বের করতে গিয়ে সেটা যদি শোনা যায় তাহলে কি সাহু সিজদা দিতে হবে?

২.কতোটুকু পানিতে হাত ডুবিয়ে অজু করা যাবে?

৩.সিজদাতে কপাল এবং হাতের নিচে কাপড় জড়ো হয়ে থাকলে কি সাহু সিজদা দিতে হবে?

৪.বালতি থেকে হাত ডুবিয়ে মগ দিয়ে পানি উঠিয়ে গোসল করলে সেই পানি কি ব্যাবহৃত পানি বলে গন্য হবে এবং পরে কি আবার অজু করে নিতে হবে?

৫.শুক্রবার আসরের নিষিদ্ধ সময় কি দোয়া কবুলের সময়ের মধ্যে গন্য হয়?

1 Answer

0 votes
ago by (668,910 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ: سَأَلْنَا خَبَّابًا أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالعَصْرِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْنَا: بِأَيِّ شَيْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ؟ قَالَ: «بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ»

হযরত আবু মামার রহঃ হযরত খাব্বাব রাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন, রাসুল সাঃ যোহর ও আসরে কিরাত পড়তেন কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ পড়তেন। আবু মামার পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কিভাবে বুঝা যেত? তিনি উত্তরে বলেন, রাসুল সাঃ এর দাড়ি নড়াচড়া দেখে বুঝা যেত। {বুখারী, হাদীস নং-৭৬০}

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী নিম্নস্বরের পরিমাণ হল, নিজ কর্ণ দ্বারা শ্রবণ করা। 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে এসেছে   

 أنہماختلفوا في حد وجود القراء ة علی ثلاثة أقوال: فشرط الہندواني والفضیلي لوجودہا: خروج صوت یصل إلی إذنہ وبہ قال الشافعي واختار شیخ الإسلام وقاضي خاں وصاحب المحیط والحلواني قول الہندواني کذا في معراج الدرایة، ونقل في المجتبی عن الہندواني أنہ لا یجزیہ مالم تسمع أذناہ (سامي: ۲/۲۵۲، کتاب الصلاة باب صفة الصلاة، ط: زکریا دیوبند)

সারমর্মঃ  নামাজেই এতটুকু আওয়াজ বের করা, যাতে আওয়াজ নিজ কান পর্যন্ত পৌছতে পারে।

বিস্তারিত জানুনঃ 

https://www.ifatwa.info/2570 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
নামাযে কেরাত জোরের জায়গা জোরে পড়া এবং আস্তের জায়গায় আস্তে পড়া ওয়াজিব।কেউ কেউ সুন্নতও বলেছেন।
কেরাত যদি নিম্নস্বরে হয় তাহলে তার সীমারেখা কতটুকু? আর উচ্ছস্বরে হলে তার সীমারেখা কতটুকু?

নিম্নস্বরের সীমারেখাঃ
নিম্নস্বরের সীমারেখা সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম থেকে দু রকম বক্তব্য পাওয়া যায়,
(১)শা'ফেয়ী, হাম্বলী, এবং বিশুদ্ধ মতানুযায়ী হানাফি মাযহাব মতে তেলাওয়াতকে জবান দ্বারা এতটুকু উচ্ছারণ করতে হবে যে,নিজে শুনতে পারবে।কোনো প্রকার আওয়াজ ব্যতীত শুধুমাত্র জবান নাড়ানো যথেষ্ট হবে না।
(২)মালিকী মাযহাব এবং এক বিবরণ অনুযায়ী হানাফি মাযহাব মতে কোনো প্রকার আওয়াজ ব্যতীত শুধুমাত্র জবান নাড়িয়ে নিলেই যথেষ্ট হবে।এ মতামতকেই ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ গ্রহণ করেছেন।

ইমাম নববী রাহ লিখেন,
"وأدنى الإسرار أن يسمع نفسه إذا كان صحيح السمع ولا عارض عنده من لغط وغيره . وهذا عام في القراءة والتكبير والتسبيح في الركوع وغيره , والتشهد والسلام والدعاء , سواء واجبها ونفلها لا يحسب شيء منها حتى يسمع نفسه إذا كان صحيح السمع ولا عارض" انتهى .
নিম্নস্বরের সর্বনিম্ন পরিমাণ হল,নিজের কর্ণ দ্বারা শ্রবণ করা,যদি তার কানে কোনো প্রকার শ্রবণ সমস্যা না থাকে।আর এ বিধান নামাযের কেরাত, তাকবীর,তাসবীহ, তাশাহুদ, দু'আ সবকিছুর বেলায়ই প্রযোজ্য। চায় ওয়াজিব রুকুনে হোক বা নফল রুকুনে হোক।সেটাকে ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করা হবে না যতক্ষণ না সে নিজে শুনতে পারবে,যদি তার শ্রবণে কোনো সমস্যা না থাকে।

নামাযে কুরআন তেলাওয়াত নিম্নস্বরের সীমারেখা কি?এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
নামাযের তেলাওয়াতের জন্য হরফ গুলি পরিস্কার ভাবে উচ্ছারিত হওয়া শর্ত। যদি হরফগুলি উচ্ছারিত হয়,তবে নিজে না শুনে তাহলে সেই তেলাওয়াত/কেরাত নামায বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে না।এটাই সাধারণ মাশায়েখগণের সিদ্ধান্ত।(মুহিত)এবং এটাই পছন্দনীয় মত।এমনটাই সিরাজিয়্যাহ নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে।এবং এটাই বিশুদ্ধতম মত।(নুকায়া) অর্থাৎ  নিজে শুনতে হবে,নতুবা নামায বিশুদ্ধ হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৬৯)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার নামাজ হয়ে যাবে। সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
তবে আপনি মশক করে উক্ত হরফ গুলির উচ্চারণ এর পদ্ধতি ঠিক করে নিবেন, যাতে এ ধরনের সমস্যা সম্মুখীন না হতে হয়।

(০২)
যেকোনো পাক পানিতেই হাত দিয়ে পানি নিয়ে অযু করা যাবে।

তবে সতর্ক থাকবেন,যাতে অযুর পানি সেখানে না পড়ে। অল্প কিছু পড়লে সমস্যা নেই।

আপনি যেখান থেকে পানি নিয়ে অজু করতেছেন, সেখানে যদি আপনার অজুর পানি পড়ে যায়, সেক্ষেত্রে আপনার অজুতে ব্যবহৃত পানির থেকে যদি সেখানকার পানি বেশি হয়, তাহলে কোন সমস্যা নেই।

আর যদি আপনার ব্যবহৃত পানি সেখানকার পানির পুলনায় বেশি হয়ে থাকে, তাহলে সেই পানি দিয়ে অজু করা যাবে না।

(০৩)
সাহু সেজদাহ দিতে হবেনা।
তবে কপালের নিচে যেনো কাপড় না থাকে, সতর্ক থাকবেন।

কেননা সালাতে কপাল( সিজদাহর জায়গা) হিজাব দিয়ে ঢেকে রাখা মাকরুহে তাহরিমি। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৪)
সেই পানি ব্যাবহৃত পানি বলে গন্য হবেনা এবং পরে আবার অজু করে নিতে হবেনা।

(০৫)
অনেকের মতে শুক্রবার আসরের পরের নিষিদ্ধ সময় দোয়া কবুলের সময়ের মধ্যে গন্য হয়।

কেউ কেউ বলেন এটা আসরের পর থেকে নিয়ে সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত যেকোনো সময় হতে পারে।

আবার কেউ কেউ বলেন যখন ইমাম সাহেব যখন দুই খুতবার মাঝে বসেন,দুই খুতবার ঐ মধ্যবর্তী সময় দোয়া কবুলের মুহূর্ত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 164 views
...