আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
19 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম,

রদ্দুল মুহতার/ফতোয়ায়ে শামী (শামেলা ৬/৪৬, দারুল কুতুব  ইলমিয়্যাহ ৯/৬২) তে  বলা হয়েছেঃ

ما أخذته الزانية إن كان بعقد الإجارة فحلال عند أبي حنيفة

“যেনাকারী (বেশ্যা) নারী চুক্তির ভিত্তিতে যেনার বিনিময় হিসেবে যা গ্রহন করবে তা হালাল”

অনলাইন এ কিছু চক্র এটা সারকুলেট করছে হানাফি বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য, কিন্তু আমি যতদূর জেনেছি উপরোক্ত মতামত ইমাম আবু হানিফা (রহ) এর ব্যক্তিগত মতামত যেটার সাথে তার দুই সাগরেদ (রহ) দ্বিমত পোষণ করেন এবং ছাত্রদের মতই চূড়ান্ত ফতোয়া হিসেবে রদ্দুল মুহতার এ লিখিত হয়।

অনুগ্রহপূর্বক ইমাম আবু হানিফা (রহ) এর ছাত্রদের মতের রেফারেন্স দিয়ে সাহায্য করবেন, জাজাকল্লাহ

1 Answer

0 votes
ago by (666,510 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يُوسُفَ، قَالَ سَمِعْتُ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ، يُحَدِّثُ عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " شَرُّ الْكَسْبِ مَهْرُ الْبَغِيِّ وَثَمَنُ الْكَلْبِ وَكَسْبُ الْحَجَّامِ " .

মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ..... রাফি ইবনু খাদীজ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, নিকৃষ্ট উপার্জন বেশ্যা বৃত্তির উপার্জন এবং কুকুরের মূল্য আর রক্ত মোক্ষণকারীর (শিঙ্গা লাগানোর) আয়। 

(মুসলিম শরিফ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩৮৬৬, ইসলামিক সেন্টার ৩৮৬৫)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي مَعْرُوفُ بْنُ سُوَيْدٍ الْجُذَامِيُّ، أَنَّ عُلَىَّ بْنَ رَبَاحٍ اللَّخْمِيَّ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَحِلُّ ثَمَنُ الْكَلْبِ وَلاَ حُلْوَانُ الْكَاهِنِ وَلاَ مَهْرُ الْبَغِيِّ " .

আহমদ ইবন সালিহ (রহঃ) ...... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কুকুরের মূল্য গ্রহণ, গণকবৃত্তির মাধ্যমে উপার্জন এবং যিনাকার স্ত্রীলোকের যিনার উপার্জন হালাল নয়।
(আবু দাউদ ৩৪৪৮ ইফাঃ)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার পর্যবেক্ষণ সঠিক। এই বক্তব্য ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর ব্যক্তিগত মতামত, কিন্তু তা চূড়ান্ত মাযহাবের ফতোয়া নয়। বরং তার দুই মহান شاگرد – ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.) ও ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) – এ বিষয়ে তার সাথে একমত নন, এবং তাদের মতই মু'তামাদ তথা গ্রহণযোগ্য মাযহাবের ফতোয়া হিসেবে গৃহীত হয়েছে।

ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর ব্যক্তিগত মতামত

তার মতে, যদি কোনো নারী চুক্তিভিত্তিক ইজারার (মজুরি) ভিত্তিতে সেবা প্রদান করে (যদিও তা জিনা হয়), তবে চুক্তির কারণে মজুরি দাবী বৈধ।

কারণ তিনি মজুরিকে ইজারার সাথে সম্পর্কিত করে দেখেছেন, যদিও কাজটি হারাম।

এই মতকে ফিকহের ভাষায় বলা হয়:
"ما أخذته الزانية إن كان بعقد الإجارة فحلال عند أبي حنيفة"
رد المحتار على الدر المختار (٦/٤٦)

(যেনাকারী নারী ইজারা চুক্তির মাধ্যমে কিছু গ্রহণ করলে, তা হালাল ইমাম আবু হানিফার নিকট।)

★ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর মত

তারা বলেন:
এই অর্থ নেওয়া হারাম, কারণ কাজটাই হারাম, এবং ইজারাও বৈধ নয়।

তাদের যুক্তি:

হারাম কাজের জন্য কোনো চুক্তি শরীয়ত স্বীকৃত নয়।

তাই এর বিনিময়ে কোনো মজুরি হালাল হতে পারে না।

এই মতই মাযহাবের মু'তামাদ্দ গ্রহণযোগ্য ফতোয়া হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

রেফারেন্সঃ-
الفتاوى الهندية (٤/١١٢):
"ولو زنى بأجرة فالأجر حرام بالإجماع".

(যদি কেউ মজুরির বিনিময়ে জিনা করে, তবে ঐ মজুরি হারাম – এ ব্যাপারে ইজমা আছে।)

البحر الرائق (٨/٢٣٣):
"لأن الإجارة وقعت على منفعة محرمة فلا تستحق الأجرة بالإجماع".

মর্মার্থঃ-
যেহেতু ইজারাটি নিষিদ্ধ সুবিধার জন্য ছিল, তাই সর্বসম্মতিক্রমে সে ভাড়াটির হকদার নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...