আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
23 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (41 points)
edited by
১।আমি বেকার মা বাবা খরচ চালায় এখন আমার কাছে কিছু অতিরিক্ত  টাকা আসলো বাবা মা ভাইবোনরা দেয়। যখনই আমার কাছে টাকা হয় তখনি খালি বারবার মনে আসে ফিলিস্তিনের জন্য সব  টাকা বা বেশির ভাগই দিতে হবে তুইতো খাবার পাস তারাতো পায়না।  নিজের জন্য বা বউ সন্তান ভাগ্নি মোটকথা আত্নীয় সজন বা বন্ধু বান্ধব বা এমনিতেই খরচ করলে আল্লাহ পাক যদি নারাজ হয়, তোকে কিছু না দেয় তাদের মত অবস্থা তোর হয় ইত্যাদি। তবে আমি অল্প কিছু দেই  ২০০ টাকা দিছি নিয়ত আছে মাসে একবার অথবা  ২ মাসে একবার ১০০ - ২০০ দান করা  তবে আমার ইনকাম থাকলে বেশি দিতাম এখন আমি কি কৃপন হবো কোনো  সমস্যা হবে কি?
২।১নং প্রশ্নের বেপারগুলো  বারবার মনে আসে আবার   মনে আসে দেওয়াই লাগবে  কারনে বলছি যা দরকার হইলে  দিমু, আবার বলছি  যা দিমু আরেকবার বলছি দিমু, তবুও রাগ করবোনা  দিমু অসুবিধা কি, আল্লাহ পাক এর জন্য দিবো,   রাগ করবো না,জীবনেও না,এটার সাথে সম্পৃক্ত বা নাই অনেক কথা মনে আসে  এগুলো বিভিন্ন সময়ে বলা মনে মনে বা একা একা বলি। মনে কি নিয়ত ছিলো নাকি ছিলো না জানিনা  এটা কি দানের নিয়ত হবে?
৩।১ এবং ২নং প্রশ্নের বেপার গুলো নিচের কোরআন হাদিসের বিপরীত হবে কি
পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে মহান আল্লাহ ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে খাদ্য দানের আদেশ দিয়েছেন এবং উৎসাহিত করেছেন। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
أَوْ إِطْعَامٌ فِي يَوْمٍ ذِي مَسْغَبَةٍ، يَتِيمًا ذَا مَقْرَبَةٍ، أَوْ مِسْكِينًا ذَا مَتْرَبَةٍ-
অথবা ক্ষুধার দিনে অন্নদান করা ইয়াতীম নিকটাত্মীয়কে। অথবা ভূলুণ্ঠিত অভাবগ্রস্তকে (বালাদ ৯০/১৪-১৬)।

অন্যত্র তিনি বলেন,
وَيُطْعِمُوْنَ الطَّعَامَ عَلَى حُبِّهِ مِسْكِيْنًا وَيَتِيْمًا وَأَسِيْرًا
নিশ্চয়ই মুমিনরা আল্লাহর প্রতি ভালবাসার টানে খাদ্য দান করে অভাবী, ইয়াতীম ও কয়েদীদেরকে (দাহর ৭৬/৮)।
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত,
أَنَّ رَجُلاً سَأَلَ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الإِسْلاَمِ خَيْرٌ قَالَ : تُطْعِمُ الطَّعَامَ،
 একদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে প্রশ্ন করলেন, ইসলামে কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ? নবী করীম (ছাঃ) বললেন, ইসলামে সবচেয়ে ভাল কাজ হচ্ছে ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে খাবার খাওয়ানো।[বুখারী হা/১২; মুসলিম হা/৩৯; মিশকাত হা/৪৬২৯]

রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,
 الرَّاحِمُونَ يَرْحَمُهُمُ الرَّحْمَنُ ارْحَمُوا مَنْ فِى الأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِى السَّمَاءِ-
 দয়াশীলদের উপরে দয়াময় আল্লাহ দয়া করে থাকেন। তোমরা যমীনবাসীদের উপরে দয়া কর, আসমানবাসী (আল্লাহ) তোমাদের উপরে দয়া করবেন[তিরমিযী হা/১৯২৪; আবুদাঊদ হা/৪৯৪১; মিশকাত হা/৪৯৬৯]

অপর হাদীছে এসেছে,
 لاَ يَرْحَمُ اللهُ مَنْ لاَ يَرْحَمُ النَّاسَ
যে ব্যক্তি অনুগ্রহ করে না, তার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ হয় না।[বুখারী হা/৭৩৭৬; মুসলিম হা/২৩১৯; মিশকাত হা/৪৯৪৭]

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
وَمَنْ كَانَ فِى حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللهُ فِىْ حَاجَتِهِ، وَمَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً فَرَّجَ اللهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرُبَاتِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ-

আর যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সাহায্যে থাকবে, আল্লাহ তার সাহায্যে থাকবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামতের দিনের বিপদ সমূহের একটি বড় বিপদ দূর করে দিবেন[বুখারী হা/২৪৪২; মুসলিম হা/২৫৮০; মিশকাত হা/৪৯৫৮।]

1 Answer

0 votes
by (667,110 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 
(অনুবাদ)

“তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে।”
(সূরা আল-ইনসান (৭৬:৮)

তাফসির: ইবনে কাসীর বলেন—এটি আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। (তাফসির ইবনে কাসীর)

“অথবা কোনো ক্ষুধার্তকে খাদ্য প্রদান করা কঠিন দিনে।”
(সূরা আল-বালাদ (৯০:১৩-১৬):

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়ার কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তার কিয়ামতের কষ্ট দূর করবেন।”
(ক্ষুধা থেকে মুক্তি দেওয়া এটার অন্তর্ভুক্ত।)
(সহিহ মুসলিম (হাদিস: ২৫৮১):

“হে আদম সন্তান! আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তুমি আমাকে খাওয়াওনি...”
আল্লাহ কিয়ামতে বলবেন, বান্দা বলবে, আমি কীভাবে আপনাকে খাওয়াব? আল্লাহ বলবেন:
“তুমি কি জান না, আমার অমুক বান্দা ক্ষুধার্ত ছিল, তুমি যদি তাকে খাওয়াতে, তাহলে আমাকে তার কাছে পেতে।”
(তিরমিযী (হাদিস: ১৮৫৫):

“হে আবু জর! যখন তুমি কোনো ঝোল রান্না করো, তখন তার পানি বাড়িয়ে দাও এবং তোমার প্রতিবেশীকে দাও।”
(বুখারি ও মুসলিমে রিওয়ায়াত (সহিহ বুখারি: ৫০৬০):

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের ক্ষুধা মেটাবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন।”
(এ হাদিসে ফজিলতের ইঙ্গিত রয়েছে।)
(সহিহ বুখারি (হাদিস: ২৮৮৪):

“যদি কেউ ক্ষুধায় মৃত্যুর মুখে থাকে এবং অন্য কারো কাছে খাবার থাকে, তবে তার জন্য দেওয়া ওয়াজিব।”
(আল-মাবসুত (সারাখসি), খণ্ড ২৪, পৃষ্ঠা ৩৬)

“যদি ক্ষুধায় মৃত্যু আশঙ্কা থাকে, তবে খাবার দেওয়া ফরজ। অন্যথায় এটা সদকার অন্তর্ভুক্ত।”
(আল-ইখতিয়ার লি তা’লিল আল-মুখতার (ফিকহে হানাফি), খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৫৮)

সুতরাং এটা নফল আমল, অর্থাৎ মুস্তাহাব ও খুব ফজিলতময়।

তবে যদি কেউ চরম প্রয়োজনে ক্ষুধার্ত থাকে (প্রাণের ঝুঁকি) সেক্ষেত্রে হুকুম ভিন্ন হবে।

যদি কোনো মানুষ ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকে এবং আপনি খাবার দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন, তাহলে তাকে খাওয়ানো ওয়াজিব হয়ে যাবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি কৃপন বলে বিবেচিত হবেননা,এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০২)
হ্যাঁ, দানের নিয়ত হবে।

(০৩)
না, বিপরীত হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...