আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (18 points)
closed by
https://ifatwa.info/123799/

উপরের লিংকে আগের প্রশ্নে নাস্তিক টিচারের ব্যপারে বলা হয়েছিল। উনার কিছু বক্তব্য নিচে দেয়ক হলো

""পূর্বের ঘটনা বাদ দিলেও বর্তমান সময়ে সে কিছু নাস্তিকতা মনোভাবাপন্ন কথা ক্লাসে ডেলিভারি দিয়ে যাচ্ছেন!!
১. তাকদিরে যারা বিশ্বাস করে তারা নাকি বোকা!!
২. যারা সুদ খায় না তারা নাকি বোকা!!
৩. তোমাদের ক্লাসে জঙ্গি আছে সত্য কথা উপস্থাপন করলে তারা আমাকে চেয়ার তুলে মারতে পারে।
৪. ধর্ষণ কমাতে আমাদের দেশের নাকি দরকার পতিতালয়!
৫. এছাড়াও সে এমন সময় ক্লাস নেই যা নামাজের টাইমের খুব কাছাকাছি। টাইম দেয় ১.০০ টায়।""

এক্ষনে তার থেকে হালাল ব্যবসায় ঋন নেয়া কি উচিত হবে? ইসলাম কি অনুমোদন দেয়? ঋন বলতে ব্যবসা শুরুর মূলধন নিব,পরে ফিরিয়ে দিব, স্যার নিলে নিবে কি না জানি না।

স্যারের ইনকাম উৎস আমরা জানি না৷, কলেজের বেতন পান যা হালাল, এছাড়া আরো কোনো ইনকাম উৎস আছে কি না তা আমাদের জানা নেই
closed

1 Answer

0 votes
by (674,970 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

যেহেতু ইসলামে অমুসলিমদের সাথে উদারতা ও সদ্ব্যবহারের শিক্ষা রয়েছে। তাদের সাথে যদিও বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতার সম্পর্ক স্থাপন করতে নিষেধ করা হয়েছে, কিন্তু সহানুভূতি, সৌজন্য, আতিথেয়তা, ব্যবসা-বানিজ্য ও লেন-দেনমূলক আচরণ করতে নিষেধ করা হয় নি। সেহেতু কোন মুসলিম কোনো অমুসলিমের সাথে ব্যবসা করলেও তার নামাজ, রোজা, কুরবানি ইত্যাদি ইবাদতের কোনো ক্ষতি হয় না।  

তবে যদি এই লেন-দেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে মুসলমানদের কোন ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে তবে তা জায়েয থাকে না। রাসূলুল্লাহ ﷺ খোলাফায়ে রাশেদীন ও অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম কর্তৃক গৃহীত কর্মপন্থা থেকে এটি প্রমাণিত হয়। (মাআ’রিফুল কুরআন-২/৫, জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/ ১৭৯)

★★ইসলামের দৃষ্টিতে অমুসলিমদের সাথে ক্রয়-বিক্রয় এবং দুনিয়াবি লেনদেন করায় শরী‘আতে কোনো আপত্তি নেই। সুতরাং নিম্নে অমুসলিমদের সাথে কেনাবেচা শরিকানায় ব্যবসা অর্থের বিনিময়ে শ্রমিক হিসাবে তাদের  কাজ করা ও সাধারন  দুনিয়াবি সম্পর্ক রাখার ব্যাপারে কুরআনের আয়াত, হাদীস এবং আলেমদের উক্তি তুলে ধরা হলো,

আল্লাহ তা‘আলা বলেন আল্লাহ তা‘আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন।(সুরা বাক্বারাহ আয়াত নং ২৭৫)।
এখানে আল্লাহ তা‘আলা ব্যবসা করার জন্য মুসলিম ও কাফির আলাদা করেননি বরং সাধারণভাবে ব্যবসাকে বৈধতা দিয়েছেন। সুতরাং তা জায়িয মুসলিম-অমুসলিম সবার সাথে যদি এ ক্ষেত্রে অন্য হারাম বিষয় জড়িত না হয়। 

হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণীত তিনি বলেন রসুল (সাঃ) যবের বিনিময়ে তাঁর বর্ম বন্ধক রেখেছিলেন। (বুখারি-ইঃফাঃবাঃ) ৪০ বন্ধক হাঃ১৫৭৬)। 

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ - وَاللَّفْظُ لِيَحْيَى قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، - عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتِ اشْتَرَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ يَهُودِيٍّ طَعَامًا بِنَسِيئَةٍ فَأَعْطَاهُ دِرْعًا لَهُ رَهْنًا .

হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণীত তিনি বলেন, রসুল (সাঃ) জনৈক ইহুদির নিকট থেকে নিদির্ষ্ট মেয়াদে খাদ্য শস্য খরিদ করেন এবং নিজের বর্ম তার কাছে বন্ধক রাখেন। (বুখারী হাঃ৪৮/বন্ধক) পরিচ্ছে ৪৮/২যে ব্যক্তি নিজ বর্ম বন্ধক রাখে,হাঃ২৫০৯)।

ইমাম নববী এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, মুসলিমমগণ এ ব্যাপারে একমত যে জিম্মি (মুসলিম দেমে মুসলিম সরকারের জিম্মিা বা নিরাপত্তায় থাকা অমুসলিম) এবং অন্যান্য কাফিরের সাথে পারস্পারিক লেনদেন ও আদান-প্রদান বৈধ যদিদ এর সাথে সাথে এমন কিছু না থাকে যা হারাম হওয়া সুনিশ্চিত। কিন্তু হারবি (মুসলিমদের সাথে যুদ্ধরত কাফির)-এর নিকট অস্ত্র এবং যুদ্ধের সরন্জাম বিক্রয় করা নাজায়িয।
অতঃপর দীর্ঘ দেহী এলামেলো চুলওয়ালা এক মুসরিক এক পাল বকরী হাঁকিয়ে নিয়ে এলো। রসুল (সাঃ) জিজ্ঞেস করলেন,বিক্রি করবে, না উপহার দিবে? সে বলল না বরং বিক্রি করব। অতঃপর রসুল (সাঃ) তার নিকট হতে একটা বকরী কিনে নিলেন।(সহীহ বুখারী-৫২/হিব্বা ও এর ফযীলত,পরিচ্ছেদ:৫১/২৮,মুশরিকদের দেয়া উপহার গ্রহণ করা, হাঃ১২৬১,৮হিবা ও এর ফযিলত।

তাছাড়া রসুল (সাঃ)-এর সাহাবীগণ ব্যবসার উদ্দেশ্যে বছরে দু‘বার (শীতে ও গ্রীষ্মকালে) দামেস্ক সিরিয় যেতেন যা সুরা কুরাইশে উল্লেখিত হয়েছে। সেখানে তারা অবশ্যই মুসলিম-অমুসলিম সবার সাথে ব্যবসা বাণিজ্য করতেন।

অমুসলিমদের সাথে শরীকানায় ব্যবসা করাঃ

 কোনো অমুসলিমকে বিশ্বস্ত আমানতদার ও অভিজ্ঞ মনে হলে তার সাথে শরীকানায় ব্যবসা করাও কোনো আপত্তি নেই- যদি শরী‘আহ বিরোধি কার্যক্রম যেমন অবৈধ ব্যবসা হারাম পণ্য বিক্রয়, মানুষের সাথে প্রতারণা ইত্যাদির সাথে সম্পৃক্ততা না থাকে। তাদের সাথে ধর্মীয় দিক দিয়ে আন্তরিক ভালবাসা রাখা হারাম হলেও কিন্তু দুনীয়াবি সম্পর্ক ও লেনদেন কোনো বাধা নেই-ইনশাআল্লাহ।

অমুসলিমদের ঘর-বাড়ি কল-কারখানা ও দোকানে কাজ করার বিধানঃ মুসলিমদের জন্য অমুসলিমদের ঘর-বাড়িবা তাদের পরিচালিত কল-কারখানা ও দোকানে চাকুরী করাও দোষণীয় নয়। তবে শর্ত হলো কোনো হারাম কাজে যুক্ত হওয়া যাবে না বা হারাম কাজে সহায়তা করা যাবে না। যেমন- মদ,শুকুরের গোস্ত,বিড়ি-সিগারেট, বাদ্যযন্ত্র, বিধর্মীয় উপকরণ, বেপর্দা নারীদের সংশ্রব,মন্দির,গির্জা,প্যাগোডা নির্মাণ বা সংস্কার ইত্যাদি। কেননা মহান আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে গুনাহ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে সহায়তা করতে নিষেধ করেছেন। 

তিনি বলেন, সৎকর্ম ও আল্লাহ ভীতিতে একে অন্যের সাহায্য করো। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না।(সুরা আল মায়িদা আয়াত নং ২)।
(সংগৃহীত)

সৌদি আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া এবং গবেষনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটি ফাতাওয়াঃ বৈধ ব্যবসায়িক কাজে কাফিরদের সাথে অংশগ্রহণ করা জায়িয আছে মুসলিমদের মধ্যে যে অংশগ্রহণ করবে সে যদি মানুষকে ঠকানো বা নিজ প্রতারিত হওয়া অথবা মহান আল্লাহর হারামকৃত যে সকল কার্যক্রম রয়েছে যেমন- সুদ,জুয়া, ধোঁকা ইত্যাদি থেকে  নিরাপদে থাকে। তবে সংশয়-সন্দেহ, মানুষের অভিযোগ আপত্তি এবং বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির আশস্কা থেকে দূরে থাকার স্বার্থে তাদের সাথে অংশ গ্রহণ না করাই ভালো। (ফাতাওয়া লাজনাহ দায়েমাঃ ৬৫পৃঃ)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তার থেকে হালাল ব্যবসায় সুদমুক্ত ঋন নেয়া জায়েজ হবে।
ইসলাম অনুমোদন দেয়।

তবে যদি এই লেন-দেনের কারণে আপনার কোন ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে,বা দ্বীনআনতে সমস্যা হয়, তবে তার থেকে ঋন নেয়া যাবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...