জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল সালাত ও যাকাত। কুরআন মজীদে বহু স্থানে সালাত-যাকাতের আদেশ করা হয়েছে এবং আল্লাহর অনুগত বান্দাদের জন্য অশেষ ছওয়াব, রহমত ও মাগফিরাতের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধিরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ؕ وَ مَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ۱۱۰
‘তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন। -সূরা বাকারা : ১১০
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-
وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ وَ اَطِیْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ۵۶
‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।’-সূরা নূর : ৫৬
সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-
وَ الْمُقِیْمِیْنَ الصَّلٰوةَ وَ الْمُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ اُولٰٓىِٕكَ سَنُؤْتِیْهِمْ اَجْرًا عَظِیْمًا۠۱۶۲
‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’
অন্য আয়াতে যাকাতের গুরুত্বপূর্ণ সুফল বর্ণনা করে আল্লাহ তাআলা বলেন-
خُذْ مِنْ اَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَ تُزَكِّیْهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَیْهِمْ ؕ اِنَّ صَلٰوتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ ؕ وَ اللّٰهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ۱۰۳
‘তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন, যার দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন এবং আপনি তাদের জন্য দুআ করবেন। আপনার দুআ তো তাদের জন্য চিত্ত স্বস্তিকর। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’-সূরা তাওবা : ১০৩
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)
★কেহ সামর্থবান হওয়া সত্ত্বেও কুরবানী দিতে না পারলে বা না দিলে পরবর্তীতে সেটির কাজা আদায় করতে হবে।
কুরবানির কাযা আদায়ের ক্ষেত্রে একটা নুন্যতম ১ বৎসর বয়সী বয়সের বকরির মূল্য গরীবদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
সাধরণ সদকার খাতে কুরবানির পশুর মূল্য দিতে হবে। পশুর দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে এক বৎসর বয়সী একটা মধ্যম ধরণের একটা ছাগলের মূল্য ধর্তব্য হবে।
একটা ছাগলের মূল্য কয়েকজনের মধ্যে বন্টন করা যাবে। আবার কোনো একজন গরীব মিসকিনকেও দেওয়া যাবে।
حتى مضت أيام النحر تصدق بقيمة شاة تجوز فى الأضحية (بدائع الصنائع-4/203، هندية-5/296)
সারমর্মঃ
কুরবনী যদি না দেয়া হয়,আর এভাবেই কুরবানীর দিন গুলি যদি অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে একটি ছাগলের মূল্য সদকাহ করে দিবে।
ولو تركت التضحية ومضت ايام النحر تصدق….. بقيمتها غنى شراها اولا لتعلقها بذمته بشرائها اولا، والمراد بالقيمة قيمة شاة تجزئ فيها وتحته فى الشامى قيمة شاة وسط (الدر المختار مع الشامى-9/463-465
সারমর্মঃ
কেহ যদি কুরবানী ছেড়ে দেয়,আর এভাবেই কুরবানীর দিন গুলি যদি অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে একটি মধ্যম মানের ছাগলের মূল্য সদকাহ করে দিবে।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
নিজের প্রবল ধারণার ভিত্তিতে হিসাব করবেন।
২. যে বছরের যাকাত সেই বছরের বাজারমূল্য জেনে নিয়ে তারপর তা আদায় করতে হবে।
৩. যদি পূর্বের বছর গুলির সোনা রূপার বাজার দর জানার উপায় না থাকে,সেক্ষেত্রে আপবি স্বর্ণের দোকানে যাবেন।গিয়ে জেনে নিবেন।
এক্ষেত্রে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন।
৪. কুরবানির কাফফারা আদায়ের ক্ষেত্রে বিগত বছর গুলাতে পশুর মূল্য যা ছিলো সেই অনুযায়ী হিসাব করা যাবেনা।
ঐ পশুর বর্তমান মূল্য হিসাব করতে হবে।
কুরবানীর কাজা হিসেবে প্রত্যেক বছরের জন্য একটি করে নুন্যতম এক বছরের ছাগলের মুল্য গরিব মিসকিনদের মাঝে সদকাহ করে দিবেন।
৫. কুরবানির কাফফারার ক্ষেত্রে, সারা বছর সাধারণ ভাবে খাসির মূল্য যা আছে সেই দাম অনুযায়ি কাফফারা দিলেও হবে।