আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
11 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (2 points)
আমি বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু আমার স্বামী সৌদি আরবের  দাম্মামে একটি ইউনিভার্সিটি তে স্টুডেন্ট হিসেবে আছে চার বছরের জন্য। এজন্য আমি এই বছরের আগস্ট মাসে তার সাথে দাম্মাম এসেছি এবং আমার স্বামীর সাথে মোটামুটি  তিন বছর দাম্মামে থাকবো। আমার কাছে মোটামুটি ৪ ভরির কিছু সামান্য উপরে স্বর্ণ আছে। নগদ কোন অর্থ বা রুপা আমার কাছে নেই।
এখন যদি আমি আমার ফরজ হজ আদায় করতে চাই সে ক্ষেত্রে আমার  কতটুকু সম্পদ থাকতে হবে?

 এবং আমার সাথে আমার মাহারাম ব্যক্তি কে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার খরচটা কি আমাকে বহন করতে হবে?

যেহেতু সৌদি আরব থেকে হজ করলে খরচ কিছুটা কম হয়। তাও একজনের জন্য বাংলাদেশী টাকায় সেটা মোটামুটি সাড়ে চার লক্ষ টাকা হয় এখানকার সৌদি রিয়াল অনুযায়ী।

1 Answer

0 votes
ago by (80,040 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/5437/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

মাহরাম থাকা সফরের জন্য শর্ত। হজ্বের জন্য নয়। তাইতো সফরের দূরত্ব থেকে কম দূরত্বে থাকা মহিলাদের জন্য হজ্ব ফরয হতে মাহরাম থাকা জরুরী নয়। সে সকল মহিলা মাহরাম পুরুষ ছাড়াই একাকি হজ্ব করতে পারবে। 

তবে সফরের দূরত্ব (৭৮ কি.মি.) পরিমাণ দূরে যে সকল মহিলারা বসবাস করে যেমন বাংলাদেশী মহিলা, তাদের উপর হজ্ব আদায় করা ফরয হয়না মাহরাম না থাকলে, কিন্তু হজ্বের অন্যান্য শর্ত পাওয়া গেলে মূল হজ্ব তার উপর আবশ্যক হয়, কিন্তু আদায় করা ফরয হয়না।

,

হাদীস শরীফে এসেছে,

عن أبي سعيد الخدري قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখেএমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩}

,

ফাতওয়ার কিতাবে রয়েছে,

فى الهندية- وَمِنْهَا الْمَحْرَمُ لِلْمَرْأَةِ شَابَّةً كانت أو عَجُوزًاإذَا كانت بَيْنَهَا وَبَيْنَ مَكَّةَ مَسِيرَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ هَكَذَا في الْمُحِيطِ وَإِنْ كان أَقَلَّ من ذلك حَجَّتْ بِغَيْرِ مَحْرَمٍ كَذَا في الْبَدَائِعِ (الفتوى الهندية-2/218-219

যার সারমর্ম হলো হজ ফরজ হওয়ার অন্যতম একটি শর্ত হলো মাহরাম থাকা,,,,(ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-১/২১৮-২১৯)

,

মহিলারা কোনো অবস্থাতেই মাহরাম ছাড়া হজ করতে পারবেন না। সুতরাং উক্ত মহিলার নিজের মাহরাম সঙ্গে থাকতে হবে। কারণ, হজে প্রত্যেক মহিলার সঙ্গে তার নিজ মাহরাম থাকতেই হয়।

হাদীস শরীফে এসেছে, ইবনে আববাস রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী করীম ﷺ বলেছেন,

لاَ تُسَافِرِ الْمَرْأَةُ إِلاَّ مَعَ ذِي مَحْرَمٍ، وَلاَ يَدْخُلُ عَلَيْهَا رَجُلٌ إِلاَّ وَمَعَهَا مَحْرَمٌ ”. فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أَخْرُجَ فِي جَيْشِ كَذَا وَكَذَا، وَامْرَأَتِي تُرِيدُ الْحَجَّ. فَقَالَ ” اخْرُجْ مَعَهَا

কোনো মহিলা তার মাহরাম ব্যতিরেকে সফর করবে না এবং কোনো পুরুষ মাহরাম ছাড়া কোনো মহিলার নিকট যাবে না। অতপর এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক সৈন্যদলের সাথে জিহাদে যেতে চাই আর আমার স্ত্রী হজে যেতে চায়। নবী করীম ﷺ বললেন, তুমিও তার সাথে হজে যাও। (সহীহ বুখারী ১৭৪০)

(বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৪; মুখতাসারুত তহাবী ৫৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; যুবদাতুল মানাসিক ৩২)

,

وَلَوْ حَجَّتْ بِلَا مَحْرَمٍ جَازَ مَعَ الْكَرَاهَةِ الخ- (قَوْلُهُ مَعَ الْكَرَاهَةِ) أَيْ التَّحْرِيمِيَّةِ لِلنَّهْيِ فِي حَدِيثِ الصَّحِيحَيْنِ «لَا تُسَافِرْ امْرَأَةٌ ثَلَاثًا إلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ» زَادَ مُسْلِمٌ فِي رِوَايَةٍ «أَوْ زَوْجٌ» (رد المحتار، كتاب الحج، مطبع كراچى-2/465

যদি মাহরাম ছাড়াই হজ আদায় করে, তাহলে মাকরুহ এর সহিত হজ আদায় হয়ে যাবে।

,

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

,

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি আপনি ফরজ হজ পালনের নিয়তে ইহরাম পরিধান করে হজ করেন, তাহলে আপনার জন্য সম্পদশালী হওয়ার পর পুনরায় হজ করা ওয়াজিব নয়। বরং আপনার ফরজ হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি চাইলে ফরজ হজ্ব আদায় করতে পারেন ইনশআল্লাহ্

,

আর মাহরামের হজ্বের খরচ দেওয়া আবশ্যক নয়। বরং মাহরামের সাথে হজ্ব করতে যাওয়া আবশ্যক। সুতরাং মাহরাম নিজের টাকা দিয়ে গেলেও হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 230 views
...