আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (41 points)
১.আমি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেয়েছি, তাদের নীতিমালার সাথে সহমত হয়েই আমি নিয়োগ গ্রহণ করেছিলাম। তাদের ও বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা হলো, যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা পড়াই সেখানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট টিউশন বা ব্যাচে পড়ানো যাবে না। কিন্তু দেখা যায় ভালো শিক্ষকের কাছে পড়ানোর জন্য ছাত্র অভিভাবক উভয়ই আগ্রহী। তাদেরকে পড়ানো যদিও নীতিমালার বিরুদ্ধে কিন্তু আমার প্রশ্ন  হল,
অভিভাবক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সম্মতিতে তাদের প্রাইভেট বা ব্যাচে পড়িয়ে যে টাকা উপার্জন হবে তাকেই হালাল হবে? যেহেতু পড়ানো কাজটা মৌলিকভাবে হালাল।
২.আমার ভাগ্নের বয়স এক বছরের চেয়ে একটু বেশি তাকে প্রথমে মোবাইলে কোরআন শরীফ তেলাওয়াত শোনানো হতো এবং বলা হতো এটি "ইলল্লাহ"। এখন সে মোবাইলে যা যা দেখে (কার্টুন বা অন্যকিছু) সবকিছুকে ইল্লাল্লাহ বলে বোঝায়,  তাকেই বোঝানোর জন্য আমার পরিবারের সদস্যরা বলে তাহলে তোমাকে ইল্লাল্লাহ  দেখতে দিব। (এক্ষেত্রে মোবাইলের কার্টুন বা বিভিন্ন ভিডিও নির্দেশ করে)
তাদের এভাবে বলার ধরুন কি কুফর হবে বা গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (672,210 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
ইসলাম মানুষকে যেসব উন্নত চরিত্রের শিক্ষা দেয়, তন্মধ্যে অন্যতম গুণ বা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অঙ্গীকার, প্রতিশ্রুতি ও চুক্তির বাস্তবায়ন। যেকোনো ভালো কাজের অঙ্গীকার পূরণ করা ওয়াজিব।

 পবিত্র কোরআনে ওয়াদার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইরশাদ হয়েছে, 
يا ايها الذين امنوا اوفوا بالعقود
'হে ইমানদারগণ! তোমরা অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করবে।' (সুরা আল-মায়িদা, আয়াত : ১)
الا الذين عاهدتم من المشركين.....

তবে যেসব মুশরিকের সঙ্গে তোমরা চুক্তি করেছ, পরে তারা চুক্তি রক্ষার ব্যাপারে কোনো ত্রুটি করেনি, আর তারা তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি, তাদের সেই চুক্তি তোমরা মেয়াদকাল শেষ হওয়া পর্যন্ত পূর্ণ করবে। অবশ্যই আল্লাহ দায়িত্বনিষ্ঠদের ভালোবাসেন। (সুরা তাওবা, আয়াত ৪)
,
ওয়াদা (চুক্তি) পালনকারীকে আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন। যেমন তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার ওয়াদা পূর্ণ করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে তার জানা উচিত যে, আল্লাহ তায়ালা তাকওয়াবানদের ভালোবাসেন।’ (সূরা আলে ইমরান : ৭৬)। 
.
ইসলামে অমুসলিমদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি লঙ্ঘন করা থেকেও নিষেধ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, '(অমুহাজির মুসলমানরা) তোমাদের সাহায্য চাইলে তাদের সাহায্য করা তোমাদের অবশ্যকর্তব্য, তবে সে সাহায্য যদি এমন কোনো (অমুসলিম) সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হয়, যাদের সঙ্গে তোমাদের কোনো চুক্তি আছে, তবে নয়।' (সুরা আনফাল, আয়াত : ৭২)
.
চুক্তি মোতাবেক কাজ করা ইমানের একটি অপরিহার্য বিষয়। প্রকৃত মুমিন ব্যক্তি কখনো তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও তাঁরা ওয়াদা রক্ষা করেন। নবীজি (সা.) ওয়াদা করলে যেকোনো মূল্যে তা পালন করতেন। ইসলামে ওয়াদা পালনের ব্যাপারে শত্রু-মিত্র, মুসলিম-অমুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হুদায়বিয়ার সন্ধি। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও কুরাইশদের মধ্যে এ সন্ধিচুক্তি ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু কুরাইশরা যখন এ সন্ধির চুক্তি ভঙ্গ করে, তখন মহানবী (সা.) অগত্যা এ সন্ধি নাকচ করে দেন। এ ছাড়া কাফিরদের সঙ্গে আরো বহু চুক্তি হয়েছে। যেসব কাফির চুক্তি ভঙ্গ করেনি, এই আয়াতে তাদের সঙ্গে চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
.
ওয়াদা,চুক্তি ভঙ্গ কারীকে হাদীস শরীফে মুনাফিক বলা হয়েছেঃ  
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ "

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুনাফিকের আলামত বা নিদর্শন তিনটি। সে (১) কথা বললে মিথ্যা বলে; (২) ওয়াদাহ করলে তা ভঙ্গ করে এবং (৩) তার নিকট আমানাত রাখা হলে সে তার খিয়ানাত করে।
(তিরমিজি ২৬৩১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি অভিভাবক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সম্মতিতে তাদের প্রাইভেট বা ব্যাচে পড়িয়ে যে টাকা উপার্জন করবেন,সেটি হালাল হবে।

তবে এক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে করা চুক্তি ভঙ্গের (ওয়াদা খেলাফির) গুনাহ হবে।

(০২)
"তোমাকে ইল্লাল্লাহ দেখতে দিব"

এর দ্বারা মূলত আপনার পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্য হলো তাকে কুরআনের তিলাওয়াত,হামদে বারি তায়ালা,আল্লাহর প্রশংসা সম্বলিত কিছু শুনানো।

সুতরাং এতে কুফর হবেনা।

তবে খুবই সেনসিটিভ বিষয় হওয়ায় এ ধরনের কথা বলা বর্জন করার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
কার্টুন বুঝানোর জন্যও বলে থাকেন,
ইল্লাল্লাহু দেখাবো, এক্ষেত্রে কি হবে।?


যদিও ইল্লাল্লাহ শব্দের শাব্দিক অর্থ "আল্লাহ ছাড়া" বলেই জানি। তবুও শুনে ভয়ই লাগে.
by (672,210 points)
প্রশ্নের বিবরণ মতে কুফর হবে না। তবে এ ধরনের বাক্য ব্যবহার না করা উচিত।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...