আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
7 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আমি আমার পরিবারের বড় মেয়ে। আমরা ২ ভাই ও ২ বোন। ছোট ভাই ও বোন স্কুলে পড়ে। আমার বাবা একজন চাকুরিজীবী। আমার প্রশ্ন ছিলো হচ্ছে, আমার বাবার বয়স হয়ে যাচ্ছে এবং চাকরিও বেশিদিন নেই। এদিকে আমার বড় ভাই ও কোনো কাজ করে না, বাসার দায়িত্ব নিতে চাই না, সারাদিন ফোন- কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকবে। সবার সাথে খারাপ আচরন করবে চিল্লাচিল্লি করবে। ওকে কাজের কথা বললে ও সেটা কানে নেয় না। এক কথায় ও দুনিয়ামুখী হয়ে জীবন যাপন করছে, মনে করছে যার কোনো শেষ নেয়। ওকে সবাই অনেক বুঝায় এরপরও কানে নেয় না।

আমি দ্বীন প্র্যাকটিস করে চলি, শরীয়ার বিধি-বিধান মেনে চলার চেষ্টা করি। পর্দা মেইনটেইন করে চলি। কিন্তু পরিবারের এ অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আমাকেই আমার পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে হবে। আমি এখন বিবিএ ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত আছি। আমি চাকুরি করতে চাই না, জেনারেল পড়াশোনা করতে চাই না। আমি হিফজ করছি বর্তমানে ১৬ পারা আলহামদুলিল্লাহ পূরণ করেছি। কিন্তু পরিবারের এ অবস্থা দেখে মনে হয় আমাকে জীবিকার জন্য কিছু একটা করতে হবে, আমার জেনারেল পড়া + হিফজ দুটো সামলাতে কষ্ট হয়ে যায়। এভাবেই চলছে। আমি হিফজ ছাড়তে চাই না আমার এটাই ইচ্ছা মৃত্যুর আগে যেনো কুরআনকে বুকে ধারণ করে মারা যেতে পারি। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করছি।

আমার পরিবারের সবাই বলে চাকুরি করতে চাকরি করতে হলে আমাকে পর্দা বিষর্জন দিতে হবে। কর্পোরেট জব বা প্রাইভেট জব গুলোতে আমি যেভাবে পর্দা করে চলি সেরকম পরিবেশ নেই। প্লাস ব্যাংকে চাকরি হারাম আমি যতদূর জানি। আমি এ অবস্থায় কি করতে পারি।

আমাকে বাসায় থেকে বিয়ের জন্যও কিছু বলে না। আমার পুরো পরিবার বেদ্বীন।  আল্লাহর কাছে শুধু দু'আ করেই চলছি একজন তাকওয়াবান, দ্বীন মেনে চলেন এমন জীবনসঙ্গী মিলিয়ে দিতে, কতদিন ধৈর্য্য ধরতে হবে আমাকে আর!

আমাকে কিছু পরামর্শ দিন কীভাবে কি করলে আমার পরিবারকে দ্বীনের পথে আনতে পারি, ওরা সত্যিই কেউ কিছু বুঝতে চাই না। আমার জীবনে নিয়েও কোনো চিন্তা নেই। বলে যে বিয়ে না করে তাদের ইনকাম করে দিতে।

আমি কি আমার পরিবারের দেখাশোনা করার জন্য বিয়ে না করলে শরীয়া'র দৃষ্টিতে জায়েজ হবে? যদিও আমার বিয়ের প্রয়োজন হয়?

1 Answer

0 votes
ago by (659,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
‘আলক্বামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। 

عن علقمة، قال: كنت مع عبد الله، فلقيه عثمان بمنى، فقال: يا أبا عبد الرحمن إن لي إليك حاجة فخلوا، فقال عثمان: هل لك يا أبا عبد الرحمن في أن نزوجك بكرا، تذكرك ما كنت تعهد؟ فلما رأى عبد الله أن ليس له حاجة إلى هذا أشار إلي، فقال: يا علقمة، فانتهيت إليه وهو يقول: أما لئن قلت ذلك، لقد قال لنا النبي صلى الله عليه وسلم: «يا معشر الشبابمن استطاع منكم الباءة فليتزوج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم فإنه له وجاء»

তিনি বলেন, যখন আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, ‘উসমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আপনার সাথে আমার কিছু দরকার আছে। অতঃপর তারা দু’জনে এক পাশে গেলেন। তারপর ‘উসমান (রাঃ) বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি কি আপনার সঙ্গে এমন একটি কুমারী মেয়ের বিয়ে দিব, যে আপনাকে আপনার অতীত কালকে স্মরণ করিয়ে দিবে? ‘আবদুল্লাহ্ যখন দেখলেন, তার এ বিয়ের দরকার নেই তখন তিনি আমাকে ‘হে ‘আলক্বামাহ’ বলে ইঙ্গিত করলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলতে শুনলাম, আপনি আমাকে এ কথা বলছেন (এ ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘সওম’ পালন করে। কেননা, সওম যৌন ক্ষমতাকে দমন করে।(সহীহ বোখারী-৫০৬৫)

রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,

عن أنس أن نفرا من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم قال بعضهم لا أتزوج وقال بعضهم أصلي ولا أنام وقال بعضهم أصوم ولا أفطر فبلغ ذلك النبي صلى الله عليه وسلم فقال ما بال أقوام قالوا كذا وكذا لكني أصوم وأفطر وأصلي وأنام وأتزوج النساء فمن رغب عن سنتي فليس مني

অর্থাৎ হজরত আনাস (রাযি.) বর্ণনা করেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর একদল সাহাবি রাসূলের (সা.) দরবারে এসে বলতে লাগলো; আমি কখনো বিয়ে করবো না (ইবাদতের জন্য বৈরাগ্যতা অবলম্বন করবো) আমি রাতে নামাজ পড়তে থাকবো কখনো ঘুমাবো না, আরেকজন বললো আমি সারাজীবন রোজা রাখবো কখনো রোজ ভঙ্গ করবো না। এই সবগুলো কথা শোনার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে লাগলো- আক্ষেপ তোমাদের ওপর! তোমাদের কী হলো? তোমার এই করবা না সেই করবা না, এই ছাড়বা না সেই ছাড়বা না শুরু করে দিলে। অথচ আমি নামাজও পড়ি আবার ঘুমাইও, আমি রোজাও রাখি আমার বিরতিও দিই। আমি বিবাহও করি! সুতরাং (জেনে রাখো বিয়ে আমার সুন্নত) যে আমার সুন্নাত থেকে বিমুখ হয় সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত না। 

عن عائشة قالت قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- ্র النكاح من سنتى فمن لم يعمل بسنتى فليس منى وتزوجوا

অর্থাৎ হজরত আয়েশা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘বিবাহ আমার সুন্নাত যে আমার সুন্নাতের ওপর আমল করবে না সে আমার দলভুক্ত নয়। সুতরাং তোমরা বিবাহ করো। (ইবনে মাযাহ : হাদিস নম্বর ১৯১৯)। 
.
বিবাহ কখন ওয়াজিব হয়,জানুনঃ  

«النِّكَاحُ حَالَةَ الِاعْتِدَالِ سُنَّةٌ مُؤَكَّدَةٌ مَرْغُوبَةٌ، وَحَالَةَ التَّوَقَانِ وَاجِبٌ، وَحَالَةَ الْخَوْفِ مِنَ الْجَوْرِ مَكْرُوهٌ.» - «الاختيار لتعليل المختار»
 (3/ 82)

স্বাভাবিক অবস্থায় বিয়ে করা সুন্নতে মু’আক্কাদা। আর যিনা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনায় বিয়ে করা ওয়াজিব। আর স্ত্রীর জুলুম করার আশংকা থাকলে তখন বিয়ে করা মাকরুহ।(আল-এখতিয়ার লি তা’লিলিল মুখতার-৩/৮২)

অথবা এভাবেও বলা যায়,
বিবাহের সামর্থ রয়েছে, আর্থিক শারিরিক উভয় রকম সামর্থ্য রয়েছে,এবং যিনা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে,তাহলে এমতাবস্থায় বিয়ে ওয়াজিব। বিবাহের সামর্থ্য রয়েছে,তবে যিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা নাই এমতাবস্থায় বিয়ে করা সুন্নত। এবং স্ত্রীর হক আদায় না করার আশংকা থাকলে তখন বিয়ে করা মাকরুহ।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/2276
https://www.ifatwa.info/15253/

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি আপনার পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে আপনার বাবাকে আপনার বিবাহের বিষয়ে বুঝান।

এক্ষেত্রে আপনার দাদী নানী ফুফু খালা ইত্যাদিদের সহায়তা নিতে পারেন এবং প্রত্যহ তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে মহান রব্বুল আলামীনের কাছে দ্রুত বিবাহের জন্য দোয়া করবেন।

দ্রুত বিবাহের আমল চালিয়ে যাবেন।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 264 views
...