আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
হাসব্যান্ড যদি খুব খুঁতখুঁতে স্বভাবের হোন, প্রায়ই কাজের খুঁত খুঁজে বেড়ান, রেগে গেলে তুই তোকারি করেন,প্রায় সময় স্ত্রীর মা বাবা নিয়ে গালিগালাজ করেন। ঐ অবস্থায় কি করা উচিত, নিজের মা বাবাকে গালি দিতে শোনে হজম করা কোনো মেয়ের পক্ষেই তো সম্ভব না। আমি কি করতে পারি।আমার মা বাবাকে উনি গালি দিলে আমি সহ্য করতে পারি না, অনেক সময় আমিও তর্কে জড়িয়ে পরি। আমি কিভাবে নিজেকে শান্ত রাখতে পারি। কিভাবে এই পরিস্থিতি সামলাবো। ওনাকে বুঝিয়ে লাভ নেই, যদি বলি এসবে আমি কষ্ট পাই, উনি সেটা আরো বেশি করে করবেন। আমাকে আমার করণীয় বলুন।

1 Answer

0 votes
by (666,900 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

কোরআন ও হাদীসে দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে অনেক স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে আল্লাহ্ তাআলা মমতা, দয়া ও ভালোবাসার সম্পর্ক বলেছেন।

মহান আল্লাহ্ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

অনুবাদঃ 
“আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে একটি হলো— তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া স্থাপন করেছেন।”
(সূরা রূম, ৩০:২১)

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

এখন আপনারর প্রশ্নের প্রেক্ষিতে কয়েকটি ইসলামী দিকনির্দেশনা:

★স্বামীর দায়িত্ব।

স্বামীকে কোরআনে “কওয়াম” বলা হয়েছে (নেতৃত্বদানকারী, রক্ষক)। এর মানে হলো স্ত্রীকে সুরক্ষা দেওয়া, সম্মান করা, অপমান নয়।

হযরত রাসূল ﷺ বলেছেন:

“তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর প্রতি উত্তম।”
(তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)

অতএব স্ত্রীর বাবা-মাকে গালি দেওয়া বা ছোট করা ইসলামের আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

★স্ত্রীর করণীয়ঃ

প্রথমত ধৈর্য ধারণ করা (সবর করা), তবে চুপচাপ সবকিছু সহ্য করা নয়।

শান্ত সময়ে স্বামীকে ভালোভাবে বোঝানো উচিত যে, ইসলামে অন্যকে গালি দেওয়া, বিশেষ করে শ্বশুর-শাশুড়িকে অপমান করা গুনাহ।

রাসূল ﷺ বলেছেন:

“একজন মুসলিমের গালি দেওয়া ফিসক (অপরাধ) আর তার সাথে যুদ্ধ করা কুফর।”
(বুখারি, মুসলিম)

★পারিবারিক সমাধান

যদি কথা বলে সমাধান না হয়, তবে ইসলামে নির্দেশ আছে, দু’পক্ষের পরিবার থেকে একজন ন্যায্য প্রতিনিধি বসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করবে।

“যদি তোমরা উভয়ের মধ্যে কলহ আশঙ্কা কর, তবে একজন প্রতিনিধি স্বামীর পরিবার থেকে এবং একজন প্রতিনিধি স্ত্রীর পরিবার থেকে পাঠাও; তারা যদি মিল করাতে চায়, আল্লাহ তাদের মিলিয়ে দেবেন।”
(সূরা নিসা, ৪:৩৫)

★যদি নির্যাতন চলতে থাকে,,

ইসলাম স্ত্রীকে নির্যাতন সহ্য করতে বাধ্য করেনি।

ধারাবাহিক গালাগালি, অপমান বা মারধর হলে স্ত্রীর অধিকার আছে আদালতের কাছে বিচার চাইতে, এমনকি প্রয়োজনে খুলা (বিচ্ছেদ) পর্যন্ত যাওয়ার।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ইসলামের আলোকে, স্বামীকে বোঝাতে হবে যে এ আচরণ গুনাহ এবং দাম্পত্য জীবনের মূল লক্ষ্য নষ্ট করে। শান্তভাবে কথা বলা, পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং প্রয়োজনে আলেম বা সালিশের সহায়তা নেওয়া উচিত। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...