আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
ago in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (51 points)
আস্সালামুআলাইকুম
বর্তমান সময়ে অফিস বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে অনেক সফটওয়্যার আসল (লাইসেন্সকৃত) সংস্করণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শই ক্র্যাক বা পাইরেটেড সংস্করণ ব্যবহার করে থাকে।
এক্ষেত্রে আমার কিছু প্রশ্ন হলো—
1) সফটওয়্যার তো মূলত একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ (Intellectual Property), যার উপর সফটওয়্যার নির্মাতার পূর্ণ মালিকানা ও হক রয়েছে। মালিকের অনুমতি ছাড়া এটি ব্যবহার করা কি শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ নাকি অবৈধ?
2) অফিসিয়াল কাজগুলো যেহেতু ঐসব পাইরেটেড সফটওয়্যারের মাধ্যমেই সম্পন্ন হচ্ছে, তাহলে ঐ কাজের ভিত্তিতে উপার্জিত ইনকাম কি সম্পূর্ণ হারাম গণ্য হবে, নাকি সন্দেহজনক (শুভহ-হারাম মিশ্রিত)?
3) বাস্তবতা হলো, অনেক সময় সফটওয়্যারের দাম এত বেশি যে, ছোট বা মাঝারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তা ক্রয় করা সম্ভব হয় না। আবার কর্মীদের বেতন পরিশোধ করার মতো অর্থ জোগাড় করাও কঠিন হয়ে যায়। এই অবস্থায় প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য হয়ে ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে। শরিয়তের আলোকে এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী?
4) এক্ষেত্রে কি কোনো বিকল্প (যেমন ফ্রি সফটওয়্যার বা কম মূল্যের বিকল্প সফটওয়্যার) ব্যবহার করাই একমাত্র সমাধান? নাকি চরম প্রয়োজনে (দারুরাহ) ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহারের কোনো সীমিত অনুমতি রয়েছে?

1 Answer

0 votes
ago by (658,200 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

অন্যায় ভাবে কোনো কিছু ব্যবহার করা শরীয়তে জায়েজ নেই।
  
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাক্বী- শু‘আবুল ঈমান, দারাকুত্বনী- মুজতাবা)
সহীহ : আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬।)

★সকল প্রকার ক্র্যাক বা নকল ভার্সন হারাম নয়। হ্যা, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোনো সফটওয়্যার নকল করে তৈরী করা জায়েয হবে না। এবং ক্রয় বিক্রয়ও জায়েয হবে না। এমন সফটওয়্যার দ্বারা ইনকাম করাও জায়েয হবে না।

তবে যদি সফটওয়্যারের মূল্য এত বেশী হয়, যা জনসাধারণের নাগালের বাইরে, যেমন মাইক্রোসফট ইত্যাদি, তাহলে এমন সফটওয়্যার সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরাম শীতিলতার বিধান প্রয়োগ করে থাকেন।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/8014

তবে কোনো সফটওয়্যার এর ক্র্যাক ভার্সন ব্যবহার করতে যদি কর্তৃপক্ষ নিষেধ করে,আর এর মূল্য যদি নাগালের ভিতরে থাকে,সেক্ষেত্রে এমন সফটওয়্যার এর ক্র্যাক ভার্সন ব্যবহার করা যাবেনা, এর সাহায্য নিয়ে কোনো কিছু বিক্রয় করা যাবেনা।
এটি কর্তৃপক্ষকে ধোকা দেওয়া হবে। 
তাই এতে ইনকামও হালাল হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১-৩)
https://ifatwa.info/28459/
ও https://www.ifatwa.info/8014 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে পাইরেসি তথা সফটওয়্যারটি নিজে ব্যবহার করা কিংবা বিক্রয় বা পরিবেশন না করে নিজেদের ব্যবস্যায়িক বা আর্থিক কাজে লাগানো। এ প্রকারের সফটওয়ারের ক্ষেত্রে যদি কপিরাইট অধিকারীর মৌন সম্মতি থাকে, তাহলে তা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে মৌন সম্মতির পাশাপাশি যদি জেনুইনটি কেনার মোটেও সামর্থ্য না থাকে তাহলে মুফতিগণ এর ব্যবহার জায়েয বলে থাকেন। (ফাতওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ fatwa ID : 903-917/N=8/1435-U)

নকল সফটওয়্যার তৈরীর প্রতি তাদের মৌন সম্মতি রয়েছে।
(https://www.microsoft.com/en-us/legal/পাইরেসিt)
সুতরাং এগুলোর ব্যবহার -বিশেষ করে জেনুইনটি কেনার মোটেও সামর্থ্য না থাকলে- নাজায়েয হবে না। (দরসুল ফিকহ, দারুল উলুম হাটহাজারী ২/৩৮৪, ৩৮৫)(সংগৃহীত)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
জ্বী,জেনুইন ভার্সন ক্রয় করার সামর্থ না থাকলে ব্যক্তিগতভাবে আপনি ক্র্যাক ভার্সন ব্যবহার করতে পারবেন। এবং উক্ত ক্র্যাক ভার্সন সফটওয়্যার দ্বারা যা ইনকাম করবেন, তার সবগুলোই হালাল হবে।

(০৪)
এক্ষেত্রে কোনো বিকল্প (যেমন ফ্রি সফটওয়্যার বা কম মূল্যের বিকল্প সফটওয়্যার) ব্যবহার করাই উত্তম। 

তদুপরি চরম প্রয়োজনে জেনুইন ভার্সন ক্রয় করার সামর্থ না থাকলে ব্যক্তিগতভাবে
ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...