আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
আমি জেনারেল পড়ুয়া, এইচএসসি ২৪। ভর্তি পরীক্ষার সময় আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে হেদায়েত পেয়েছি।সহশিক্ষা ও ফ্রি মিক্সিং সম্পর্কে জানার পর থেকে মনের ভেতর অশান্তি কাজ করতো। তিন জায়গায় ভর্তি পরীক্ষাও দিয়েছি কিন্তু সেখানে পর্দা লঙ্ঘন করা হয়েছে, পুরুষ শিক্ষক এসে নিকাব খুলতে বাধ্য করেছে এবং পরীক্ষার পুরো সময়টা নিকাব খুলে রাখতে হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে মনের অশান্তি আরো বেড়ে গেছে, আমি যদি ভার্সিটির ফ্রি মিক্সিং এ যাই আমার ভয় হয় ইমান হারা হয়ে যাওয়ার, ফিতনায় জড়িয়ে পড়ার। আমি সহশিক্ষা ছেড়ে দিয়েছি আলহামদুলিল্লাহ এবং আলিম কোর্সে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু বাসায় নারাজ আমার উপর। বিশেষ করে আমার পিতা, উনি এতটাই নারাজ যে আমাকে নিজের সন্তান হিসেবে অস্বীকার করেছেন। আমার সাথে ভালো করে কথা বলেন না। আমার মায়ের সাথেও দূরব্যবহার করেন। এমনকি একদিন আমার মা এসে আমাকে বলেছেন আমি যদি ভার্সিটিতে না পড়ি তাহলে আমার পিতা আমার মাকে তালাক দিবেন।আরেক দিন আমার সামনেই আমার মাকে আমার পিতা বলেছেন, আমি কথা শুনি না, নষ্ট হয়ে গেছি, আমাকে আমার মা মানুষ করতে পারেন নি তাই তালাক দিয়ে দিবেন। বিষয় গুলো মানসিক ভাবে আমাকে খুব পীড়া দিচ্ছে। তবুও ধৈর্য ধরে আছি। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে --
১.আমি ফিতনা থেকে বাঁচতে সহশিক্ষা ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাতে পিতার অবাধ্য হওয়াটা কি জায়েজ হয়েছে?
২.বাসায় কোনো অশান্তি হলেই আমার বড় বোন দোষারোপ করে সব অশান্তি আমার কারণে হচ্ছে। এখন আমার করণীয় কি! আমি সহশিক্ষায় ফিরতে চাইছি না, কারণ আমার খুব আশঙ্কা যে ওই পরিবেশে গেলে আমার হেদায়েত আমি হারিয়ে ফেলবো। আর মহিলা কলেজেও পুরুষ শিক্ষক, কর্মচারি থাকে, পরীক্ষার সময় নিকাব খুলতে হয়, অনেক ক্ষেত্রেই মহিলা দ্বারা চেহেরা শনাক্ত করেন না অনেক জায়গায়, এসবকারণে মহিলা কলেজে ভর্তির সাহস ও ইচ্ছা কোনোটিই নেই আমার।
৩.আমি বুঝাতেও পারতেছি না, আমি কিছু বুঝাতে গেলে আমাকে কটুক্তি করে, বলে আমি একাই দ্বীন বুঝি দুনিয়ায় আর কেউ দ্বীন বুঝে না। আমার কথার কোনো মূল্যায়ন নেই। আমি ভালো কথা বললেও রেগে যান। তাই আমি নিজে থেকে কোনো কথা বলি না। অনেক সময় মনের মাঝে বিরক্তি আসে, রাগ হয় প্রকাশ করি না যদিও তবুও আল্লাহ তো অন্তরের বিষয় এ অবগত। আমার মনের মাঝে যে বিরক্তি আসে এর জন্য কি আমি গুনাহগার হবো, এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?
৪.আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের হেদায়েত দেন। আবার এটাও দোয়া করি আল্লাহ যেন আমাকে এমন ব্যবস্থা করে দেন যেন তাদের থেকে দূরে থাকতে পারি। পিতার থেকে দূরে থাকার জন্য দোয়া করা কি উচিত হচ্ছে?
পরামর্শ দিবেন ইনশাআল্লাহ। জাযাকুমুল্লাহু খইরন।