আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
63 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
edited by

আসসালামু আলাইকুম।

আমি একজন মেয়ে। ২০১৯ সালে আমি এবং আমার হাজব্যান্ড রিলেশনশিপে যাই। তখন আমরা ইসলাম নিয়ে প্র্যাকটিস করতাম না। এত কিছু জানতাম না। রিলেশনশিপের কয়েক মাস পর ২ জনেই হেদায়েত পাই এবং আমরা বিয়ের ডিসিশন নেই। আমার ইচ্ছা ছিল পড়াশুনা করে ডাক্তার হবো কিন্তু আমার হাসবেন্ট আমাকে নিষেধ করে আমার পড়াশুনা বন্ধ করে দেয় আমি টা মেনে নেই, আমি নেকাব, হিজাব পরা শুরু করি। ২০২৫ সালে আমি আমার আপুদের এবং দুলাভাইদের জানাই আমার হাজবেন্ডের সাথে আমার রিলেশনশিপ আছে, বিয়ের কথা বলি নাই। তারপর তাদের সাহায্য বাবা মার কাছে সম্পর্কের কথা গোপন রেখে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তারা অনেক সাহায্য হয়েছে। তারা না থাকলে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়তো সম্ভব ছিল না।

আমার হাজবেন্ড চায় না আমি আমার দুলাভাই এর সাথে কথা বলি। দুলাভাই যদি আমার মোবাইলে কল দেয় আমি কি কথা বলতে পারব? সালাম দেয়া, কেমন আছেন? কি করেন? খেয়েছেন কিনা? সর্বোচ্চ ৩-৪ মিনিট হয়তো কথা বলা হয়।

.  এই টাইপ কথা কি বলতে পারব? 

ডেইলি কল দেয় না, সপ্তায় সর্বোচ্চ ৩-৪ দিন কল দেয়। কথা না বললে বোনদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু আমার হাসবেন্ড বলে তুমি কথা বলা অফ করো আমি তোমাদের বাসায় বুঝিয়ে বলব যেন সম্পর্ক নষ্ট না হয়। কিন্তু ও বুঝিয়ে বলতে গেলে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। তার উপর আবার রিলেশনশিপের বিয়ে, তারা অনেক সাহায্য ও করেছে। আমার বাসার মানুষ বা আমার হাসবেন্ড এর বাসার মানুষ কেউ এই ধার্মিক না। আমার হাসবেন্ড এর বাসায় শুধু ২ জন মেম্বার, আমার হাসবেন্ড এবং আমার শাশুড়ি।  আমার শাশুড়ি ও এই বিষয়ে আমার হাসবেন্ড কে সাপোর্ট করে না। কিন্তু আমার হাসবেন্ড এর কথা কে কি বলে তা আমার দেখার বিষয় না। তোমার পর্দার জন্য আমি সবার বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়াবো। আমার বউ পর পুরুষের সাথে কথা বলবে তা আমি মানতে পারব না, এর থেকে আমার মতে যাওয়া ভালো। ও অনেক কঠিন , ও আমাকে পর পুরুষের নাম টা ও নিতে দেয় না। যেমন আমার বোনের জামাই যে আমার দুলাভাই হয়, আমাকে দুলাভাই শব্দ টা ও বলতে দেয় না। যদি ও কিছু দিন আগে আমি বুঝানোর পর প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বলার অনুমতি দিছে। আমার হাজবেন্ড বলে তুমি তোমার বোনদের সাথে কথা বলবে, আমি দুলাভাই দের সাথে কথা বলে সম্পর্ক রাখবো। আমি দুলাভাই দের সাথে কথা বলব টা ও কিছু তেই মানবে না। ওর কথা যদি তুমি কথা বলো তাহলে আমি তোমাকে তালাক দিব।

.  এমন অবস্থায় আমি কি করতে পারি? 

ওর জন্য আমি আমার সকল ইচ্ছা, স্বপ্ন বাদ দিয়েছি তারপর ও এই বিষয় তার জন্য ও আমাকে তালাক দিব বলে। ওর কথা তোমাকে নিয়ে আমি ইহকাল এবং পরকাল এক সাথে থাকতে চাই, তুমি পরিপূর্ণ পর্দা করো। কিন্তু আমি চাই না আমার ফ্যামিলির কারো সাথে আমার সম্পর্ক নষ্ট হোক। তাই আমি তাকে বলেছি আমি কথা বলবোই, আমি তো খারাপ কোনো কথা বলতাছি না, জাস্ট নরমাল কথা, তা ও প্রতিদিন বলি না। তারা আমার ফ্যামিলি মেম্বার। আর আমি হিজাব পরি, নেকাব পরি, ফেসবুক ও চালাই না, গান শুনি না, নাটক সিনেমা দেখি না, আমার শাশুরির সাথে, খালা শাশুরির সাথে সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখি। তারপর ও যদি তুমি শুধু মাত্র দুলাভাইদের সাথে কথা বলার কারণে আমাকে তালাক দিতে চাও দিতে পারো। আমি কোনো ভুল করছি না, তুমি বাড়াবাড়ি করতাছো। তালাক দিয়ে দিয়ে দাও। ডেইলি ডেইলি অশান্তি ভালো লাগছে না। আমি এই কথা জানিয়ে দিয়েছি। 

৩. আমার কি করা উচিৎ?

একদিকে হাসবেন্ড আরেকদিকে ফ্যামিলির সাথে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। আমি কি করবো কিছুই বুজতে পারছি না। ও আমার সাথে এখন ভালো করে কথা বলে না। কিন্তু আমার হাসবেন্ড আমাকে অনেক ভালোবাসে, ওর কাছে পুরো দুনিয়া এক দিকে আর আমি আরেকদিকে। কিন্তু শর্ত একটাই পরিপূর্ণ পর্দা করতে হবে। আমি পরিপূর্ণ পর্দা করার চেষ্টা করি, শুধু সমস্যা দুলাভাই দের সাথে কথা নিয়ে। আর কোনো সমস্যা নেই।আমি ও আমার হাসবেন্ড কে অনেক ভালবাসি কিন্তু আমার হাসবেন্ড এর কঠোরতার কারণে ওর প্রতি আমার মায়া মহব্বত দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমার হাসিখুশি জীবন শেষ হয়ে গিয়েছে। আমার রাগ বেশি, এখন আমি ওকে তুই করে ও বলে ফেলি, যেটা এই ৬ বছরে ও বলি নাই, ওর সাথে বেয়াদবি ও করে ফেলি। ওর ও অনেক রাগ। কিন্তু ও আমাকে অনেক বুঝিয়েছে, ও অনেক কঠোর মানুষ হওয়ার পর ও অনেক কান্না করেছে আমাকে দুলাভাইদের সাথে কথা বলা বন্ধ করার জন্য। কিন্তু আমি আমার পরিবারের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করতে চাই না।

.  এমন অবস্থায় আমি কি করতে পারি?

৫. আমি কি জান্নাতে যেতে পারব?

৬. আমার কথা আমি হিজাব, নেকাব পড়বো কিন্তু নরমালি সবার সাথে কথা বলব যেন কি খারাপ বা অসামাজিক না বলে। কিন্তু আমার হাসবেন্ড এটা মানবে না। এই অবস্থায় আমি কি করতে পারি?

আমার প্রশ্নের উত্তর গুলো দয়া করে বিস্তারিত ভাবে বলুন। আমি সম্পুর্নভাবে ডিপ্রেস।

1 Answer

0 votes
by (697,380 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
বিশুদ্ধ মতানুযায়ী নারীকন্ঠ সতরের অন্তর্ভুক্ত নয়।তবে বর্তমান ফিতনার সময়ে নারীরা বিনা প্রয়োজনে পর-পুরুষের সামনে যাবে না,তাদের সাথে কথাও বলবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1706

হযরত উকবাহ ইবনে আমের রাযি থেকে বর্ণিত,
عن عقبة بن عامر: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «إياكم والدخول على النساء» فقال رجل من الأنصار: يا رسول الله، أفرأيت الحمو؟ قال: «الحمو الموت»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা গায়রে মহিলাদের ঘরে প্রবেশ থেকে বেঁচে থাকো।একজন আনসারি সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! দেবরের সম্পর্কে আপনি কি মনে করেন/কি হুকুম? রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,দেবর হল,মৃত্যু। (সহীহ বোখারী-৫২৩২)
সহীহ বোখারীর বিশিষ্ট টিকাকার মুস্তাফা আল-বাগা বলেন, এখানে হামউন শব্দ দ্বারা স্বামীর সকল নিকটাত্মীয় পুরুষ উদ্দেশ্য। যেহেতু এদের সাথে দেখাসাক্ষাৎ ও কথাবার্তাকে মানুষ তত গুরুত্ব সহকারে নেয় না, তাই এখানে ফিতনার সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2674

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
 " ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ  
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব। এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না। কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1722

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার জন্য দুলাভাই এর সাথে এভাবে অপ্রয়োজনীয়   কথা বলা জায়েয হবে না। হ্যা, বিশেষ জরুরত হলে  আপনি কথা বলতে পারবেন। দুলাভাই যাতে নারাজ না হয়, সেজন্য শত বাহানার পথ রয়েছে, মিথ্যা না বলে বরং বিভিন্ন হেকমতে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...