আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।আমি একজন নব্য বিবাহিতা।আমার হাসবেন্ড অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র।উনার কোনোই ইনকাম নেই।আমার যাবতীয় খরচ আমার শ্বশুর বহন করেন।আমার হাসবেন্ড ইনকামের জন্য চেষ্টা করলেও(যেমন:বিভিন্ন মার্কেটিং কোর্স কেনা অথবা ফিল্যান্সিং কোর্স কেনা) মাঝপথে থেমে যান/সম্পুর্ণ করেন না।পাশাপাশি একাডেমিক পড়াশোনায় বিন্দুমাত্র মনোযোগ নেই।আমার নিজের কিছু জমানো টাকা দিয়ে  অনলাইনে বিজনেস করতে চাচ্ছি। আমার যাবতীয় খরচ আমার শ্বশুরই দেন কোনো আপত্তি ছাড়া সেক্ষেত্রে কি আমার বিজনেস করা জায়েজ হবে?আর আমার হাসবেন্ড এর এমতাবস্থায় কি করা উচিৎ একটু নসিহা করলে কৃতজ্ঞ থাকবো।

1 Answer

0 votes
by (80,070 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/524/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

আদিকাল থেকেই মানষ পরিশ্রম করে রোজগার করছে। আয়-রোজগার করে দিনাতিপাথ করছে। আপনি আয়-রোজগার করবেন, চায় ব্যবসার মাধ্যমে হোক অথবা পরিশ্রমের মাধ্যমে হোক। এটাই স্বাভাবিক। এক হাদীসে পরিশ্রম করে রোজগার করা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, হযরত মিক্বদাম ইবনে মা'দিকারুবা রা. থেকে বর্ণিত

 عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِي كَرِبَ  رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - " «مَا أَكَلَ أَحَدٌ طَعَامًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ أَنْ يَأْكُلَ مِنْ عَمَلِ يَدَيْهِ، وَإِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ دَاوُدَ - عَلَيْهِ السَّلَامُ - كَانَ يَأْكُلُ مِنْ عَمَلِ يَدَيْهِ» "

 রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, নিজ হাতের উপার্জন থেকে উত্তম খাদ্য কেউ কখনো আহার করেনি এবং আল্লাহর নবী হযরত দাউদ আ. নিজ হাতের উপার্জন থেকেই আহার করতেন। মিশকাত২৭৫৯, সহীহ বুখারী: (১৯৬৬/২০৭২)

,

অনলাইনে দেশী-বিদেশী যে কোনো কোম্পানি বা ক্লায়েন্টের সাথে পারিশ্রমিক নির্ধারণ পূর্বক আপনি কাজ করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে কোন হারাম কাজ হতে পারবেনা। যেমন সুদী কম্পানি বা মদ, জোয়া ইত্যাদি সম্পর্কিত কম্পানি বা ছবি আকার কাজ হতে পারবেনা। বিশেষ করে ছবির দিকটি লক্ষ্যণীয়, যে কোনো কিছুতেই এখন ছবি হিরিক পড়েছে। এই ছবি আকার কাজ সহ নানাবিধ হারাম কাজ আপনি করতে পারবেন না।

,

 ছবি সম্পর্কে হাদীস শরীফে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে, যেমন, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,

 عن ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ :( ﻣﻦ ﺻَﻮَّﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛُﻠِّﻒ ﺃﻥ ﻳَﻨْﻔُﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮُّﻭﺡ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ )

 তরজমা: ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, আমি নবী কারীম সাঃ কে বলতে শুনেছি, যে তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি পৃথিবীতে কোন (জানোয়ারের) ছবি আকবে, কিয়ামতের দিন তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে, সে যেন উক্ত ছবির ভিতরে রূহ প্রদান করে, অথচ রূহ প্রদান করা তার জন্য কস্মিনকালে ও সম্ভব হবে না (অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে আযাব প্রদান করা হবে) সহীহ বুখারী -৫৬১৮

 ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪ

হযরত ইবনে আব্বাস রা. কে এক ব্যক্তি ছবি আকার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি উত্তরে বললেন, যদি তোমার ছবি একে উপার্জন করতেই হয় তাহলে তুমি গাছের ছবি আকো বা এমন ছবি আকো যাতে কোনো প্রাণীর ছবি নেই। সহীহ বুখারী- ২২২৫।

,

লেনদেন বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত হল, মূল্য /বা পারিশ্রমিক নির্ধারণ হওয়া। কাজ করার পর যদি কম্পানি বা ক্লায়েন্ট আপনাকে পারিশ্রমিক দেয় না। তাহলে সে গুনাহগার হবে, এতে আপনার কিছু যায় আসে না। বরং জায়েয কাজ হলে আখেরাতে আপনি আপনার পূর্ণ হক্ব পাবেন। সুতরাং হারাম কাজ থেকে বেছে থাকা এবং পারিশ্রমিক নির্ধারণ হওয়ার শর্তে ফ্রীল্যান্সিং পেশা জায়েয আছে। আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

,

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি ব্যবসা করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

আপনি একজন মহিলা হিসেবে অনলাইনে নিজেকে আড়াল রেখে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। পর্দার আড়াল থেকে যে কোনো রকম হালাল ব্যবসা করতে পারবেন। উম্মুল মু'মিনিন হযরত যয়নব রাযি. চামড়া দেবাগতের তথা ট্যানারির ব্যবসা করতেন। যদি মহিলাদের পর্দার পোষাকের ব্যবসা করেন তাহলে তো সেটা কতই না উত্তম। নিয়্যাত বিশুদ্ধ থাকলে তথা ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থে ব্যবসা পরিচালনা করলে অতিরিক্ত সওয়াবের আশাও করতে পারেন। পর্দার পোষাক ব্যতীত অন্যান্য সকল রকম বৈধ পোষাক বিক্রি করতে পারবেন।

,

আর আপনার স্বামীও হালাল উপার্জনের চেষ্টা করবেন। কারণ, স্ত্রীর ভরণপোষণ দেওয়া স্বামীর উপর আবশ্যক। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...