কুরআন ও হাদীসের দলিল থেকে বোঝা যায় যে রাসূল (সঃ) এর পূর্বের নবীদের উম্মতরাও দাওয়াত দিত,এক্ষেত্রে শুধু নবীরাই নয়, বরং তাঁদের অনুসারীরাও মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকত, নেক কাজে উৎসাহিত করত এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলত।
বানী ইসরাঈলের মধ্যে দাওয়াতকারীগণ
কুরআনে বলা হয়েছে:
وَ مِنۡ قَوۡمِ مُوۡسٰۤی اُمَّۃٌ یَّہۡدُوۡنَ بِالۡحَقِّ وَ بِہٖ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱۵۹﴾
"মুসা আঃ এর কওমের মধ্যে একদল ছিল যারা সৎকাজে আদেশ করত এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করত; আর তারা ছিল নেককার।"
(সূরা আ'রাফ ৭:১৫৯)
এরা হল সেসব লোক, যারা তাওরাত ও ইঞ্জলের যুগে সেগুলোর হেদায়াত অনুযায়ী আমল করত এবং যখন খাতামুন্নাবিয়্যীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাব হয়, তখন তাওরাত ও ইঞ্জীলের সুসংবাদ অনুসারে তার উপর ঈমান আনে এবং তার যথাযথ অনুসরণও করে। বনী-ইসরাঈলদের এই সত্যনিষ্ঠ দলটির উল্লেখও কুরআনুল কারীমে বারংবার করা হয়েছে। যেমন, সূরা আলে-ইমরানঃ ১১৩, ১৯৯, সূরা আল-বাকারাহঃ ১২১, সূরা আল-ইসরাঃ ১০৭–১০৯, সূরা আল-কাসাসঃ ৫২–৫৪। [ইবন কাসীর]
সূরা আ’রাফ ৭:১৬৩-১৬৫
তিনটি দল ছিল:
যারা শনিবারে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ভেঙে ফেলেছিল — অবাধ্যরা।
যারা অবাধ্যদের সতর্ক করেছিল — দাওয়াতকারীরা।
যারা বলেছিল, “এদের সতর্ক করে লাভ কী?” — উদাসীনরা।
আল্লাহর শাস্তি থেকে বেঁচেছিল শুধুমাত্র দাওয়াতকারীরা।
★নবী ইউনুস (আঃ)-এর কওম
সূরা ইউনুস ১০:৯৮
যখন শাস্তির আভাস দেখা দিল, তখন কওমের সবাই তওবা করল।
— তওবার আগে কিছু মানুষ (ইউনুস আঃ-এর অনুসারীরা) দাওয়াত ছড়িয়ে দিয়েছিল, যা পুরো জাতিকে ঈমান ও অনুতাপের দিকে ফেরায়।
★নবী সালিহ (আঃ)-এর কওমে সতর্ককারী
কুরআনে ইঙ্গিত আছে যে, সামূদের মধ্যে কিছু লোক সালিহ (আঃ)-এর আহ্বান গ্রহণ করে অন্যদের সতর্ক করত (সূরা হুদ ১১:৬২–৬৩)।
★বানী ইসরাঈলের নবীদের পরবর্তী আলিমগণ
রাসূল ﷺ বলেছেন:
“বানী ইসরাঈলের আলিমরা নবীদের উত্তরসূরি ছিল; তারা মানুষকে আল্লাহর কিতাব শেখাত এবং দাওয়াত দিত।”
(মুয়াত্তা মালিক)
তারা কিতাবুল্লাহ শেখানো ও আমল করানোর দায়িত্ব নিত।
★আসহাবে উখদুদ ঘটনা
সূরা বুরুজ ৮৫:৪-৮
একদল ঈমানদার মানুষ শিরকের সমাজে তাওহীদের দাওয়াত দেয়ায় শহীদ হয়েছিল। তারা রাসূল ﷺ-এর আগে ছিল।
পূর্ববর্তী উম্মতের ইতিহাসে আমরা দেখি—যেখানে নবী ছিলেন, সেখানকার ঈমানদারদের মধ্য থেকে একটি দল সক্রিয়ভাবে দাওয়াত দিত। আল্লাহ সেই দলেরই প্রশংসা করেছেন ও তাদেরকেই রক্ষা করেছেন।