আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُ اللّٰهِ وَبَرَکَاتُُهُ


আমার এক চাচত বোনের জিনে জাদু বান এর সমস্যা আছে। ওর সাথে সম্পর্কিত আমাদের কিছু ঘটনাও আছে। ওকে নিয়ে দুটো স্বপ্ন দেখি...


১ম...মারসুস ওস্তাযের রুকিয়া রিলেটেড ক্লাস হওয়ার কয়েকদিন আগে একটা স্বপ্ন দেখি। আমাদের বাসায় ওই বোনটা আসছে। আমার মা আর বড় বোন সাথে আছে। আমরা একটা টেবিলে রাউন্ড হয়ে বসে গল্প করচি। এ সময় ওর উপর আসর করে। কথার ধরনে সেটা আমি বুঝতে পারি। তখন আম্মু আপুকে ইশারা দিয়ে তিন কুল পড়তে বলি। আর আমি জোরে জোরে তিন কুল পড়া শুরু করি। এরপর এমন হলো যে ওর থেকে ব্যাঙের মতো ছোটো কালো একটা কী যেন বের হয়ে আসে। আর সেটা আমি হাতের মুঠোয় করে রাখি৷ তারপর এটা কী আর এটার কী ব্যবস্থা করতে হবে তার জন্য মসজিদের উদ্দেশ্য রওনা হই৷ তারপর ঘুম ভেঙে যায়।


২য়...ওই বোন আমাদের বাসায় আসছে।ভর্তির জন্য বা কোন কাজে। ওর কোন এক আচরনে মনে হলো ওকে এবার এখানে কোথাও রুকিয়া করতে নিয়ে যাবো ধরে বেধে হলেও।তো সবাই কৌশলে রওনা হবো। ও সেটা বুঝতে পারে।আর সাথে সাথে ওর উপর ভর করে। সেটা আমি ওর আচরনে বোঝার সাথেই আউযুবিল্লাহ বলে আয়াতুল কুরসি তিন কুল পড়া শুরু করসি আর ওর হিংস্রাত্মক আচরন শুরু হয়। পরে একটা রুমে বসে আমাদের সাথে গল্প করে। আমি জিগ্যেস করসিলাম তোর নাম কী বলসিলো নুরুল।আর ও আমার বোনকে ছেরে দিবে না।জিন টাই আমাদের সাথে স্বাভাবিক কথা বলতে বলতে আবার হিংস্রাত্মক হয়ে যায় আর বাসা থেকে পালানোর চেস্টা করে। আমি পাশের বাসায় গেছিলাম যেন তারা রুকিয়ার জন্য একটা ব্যবস্থা করে।। বাসায় ঢুকতেই দেখি সে অন্য রুপ ধরে ছোট একটা ছেলের আকৃতি নিয়ে দৌড়ে নিচে নামতেসে।। ওকে ধরতে আমিও নিচে গেসি। কলার টা ধরসি। তারপর কিছু কথা হলো মনে হয়। তারপর ঘুম ভেঙে গেছে।


বিঃদ্রঃ ওর দাতে ব্যথার জন্য দুবার ব্যথা ঠিক হওয়ার রুকিয়া করেছিলাম। পরের দিন আমার কোন দরকারি জিনিস নষ্ট হইসে। একবার আমার ফোনের কভার নষ্ট করসে আরেকবার আমার ব্রাশ ভেঙে ফেলসে।এছাড়াও আমাদের পরিবারে বড় ঝামেলাও বাধাইসে। আর আমরা যেটা সন্দেহ করি আমার জন্য আসা একটা সমন্ধ সেটাও সে ভেঙে দেয়।


উত্তম ব্যখ্যা এবং উত্তম পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন।জাযাকাল্লাহ খইর।

1 Answer

0 votes
by (664,110 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 
,
হাদীস শরীফে এসেছে  

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 
,
★দুঃস্বপ্ন দেখলে এটি কাহারো কাছে বলা ঠিক নয়,শয়তানের অনিষ্ট ও কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এবং এর জন্য আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম পড়তে হবে। কারণ, খারাপ স্বপ্ন শয়তানের কুপ্রভাবে হয়ে থাকে।
ঘুম ভাঙার পর বাঁ দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করতে হবে। 
,
বিস্তারিত জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নদুটি শয়তানের তরফ থেকে। এই স্বপ্ন আপনি কাহারো কাছে বলবেননা।
শয়তানের অনিষ্ট ও কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে।
,
আপনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময় মতো আদায় করবেন,সাধ্যনুযায়ী দান ছদকাহ করবেন।
,
★এই আমল গুলো করতে পারেনঃ

আয়াতুল কুরসি অথবা সূরা আরাফ, সূরা ইউনুস, এগুলোর সাথে সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস সময় সুযোগ হলেই বেশি বেশি পড়বেন।

বিশেষতঃ যে দুআটি রাসূলুল্লাহ ﷺ  থেকে সাব্যস্ত হয়েছে:

اللَّهُمَّ ربَّ النَّاسِ، أَذْهِب الْبَأسَ، واشْفِ، أَنْتَ الشَّافي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفاءً لاَ يُغَادِرُ سقَماً

(অর্থ- হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও আরোগ্য দান করুন। (যেহেতু) আপনিই রোগ আরোগ্যকারী। আপনার আরোগ্য দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। আপনি এমনভাবে রোগ নিরাময় করে দিন যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।)

জিব্রাইল আ. নবী ﷺ-কে যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন সেটাও পড়া যেতে পারে। সে দুআটি হচ্ছে-

بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ , مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنٍ أَوْ حَاسِدٍ , اللَّهُ يَشْفِيكَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ

(অর্থ- আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি।)

★এই দোয়াটি তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন। সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিনবার পড়ে হাতে  ফুঁ দিবেন।
তারপর সারা শরীরে মালিশ করে দিবেন।
আয়াতুল কুরসি পড়বেন।
রাতে ঘুমানোর আগেও এই আমল গুলি করবেন।
অযু করে পবিত্র অবস্থায় পবিত্র বিছানায় ঘুমাবেন।
বিছানা অপবিত্র থাকলে সেটা পবিত্র করে নিবেন।

ইনশাআল্লাহ আর সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...