আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
ago in সালাত(Prayer) by (22 points)
اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

1. নামাজের মধ্যে পেশাবের রাস্তায় বায়ু বের হলে ওযু কি ভেঙ্গে যাবে?

2.  ফজরের নামাজের পর নফল রোজার নিয়ত করে দিনের কিছু অংশ অতিক্রম হওয়ার পরে কোনো কারণ ছাড়াই নফল রোজা  ভেঙে ফেললে কি গুনাহ হবে?
# এর জন্য কি কাফফারা আদায় করতে হবে?

3. সাবালিকা হওয়ার পর দ্বীনের বুঝ না থাকায় রমজানের অনেক রোজা রাখা হয় নি। দ্বীনের বুঝ পাওয়ার পর আনুমানিক হিসাব করে কাজা রোজার নিয়তে সেগুলো পূর্ণ করি।
কিন্তু নির্দিষ্ট করে কোনো তারিখ বা বছর বা রোজার সিরিয়াল হিসেব করে সেই নিয়তে রাখা হয় নি। যেমন:
১ম রোজার জন্য প্রথম কাজা রোজা
২য় রোজার জন্য ২য় কাজা রোজা
এভাবে নিয়ত করি নি৷
শুধু কাজা রোজার নিয়তে রেখেছিলাম।
এখন কি আমার রোজা গুলো হয়েছে?

4. আনাছ রাঃ হতে বর্ণিত- রাসূল সাঃ বলেছেনঃ-

"সিজদাহ ঠিকমত করবে, তোমরা কেউ যেন সিজদায় কুকুরের মত জমিনে হাত বিছিয়ে না দেয়"

(সহিহুল বুখারী-৮২২, সহিহুল মুসলিম-৪৯৩,মিশকাত-৮৮৮)

এই হাদিস অনুযায়ী মেয়েরা কিভাবে নামাজে সিজিদাহ করবে?
ছেলেদের মতো করে নাকি  হানাফি মাজহাব অনুযায়ী?
#  হানাফি মাজহাবের মেয়েদের সিজদার  রেফারেন্স কি??


জাযাকাল্লাহু খইরন ফিদ্দুনইয়্যা ওয়াল আখিরাহ

1 Answer

0 votes
ago by (654,990 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/16302/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

মৌলিকভাবে অযু ভঙ্গের কারণ ৭টি। 
 পেশাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, পেশাব পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। (হেদায়া-১/৭)

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত,  নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

إِنَّمَا الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ ، وَلَيْسَ مِمَّا دَخَلَ

শরীর থেকে যা কিছু বের হয় এ কারণে অযু ভেঙ্গে যায়, প্রবেশের দ্বারা ভঙ্গ হয় না। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী ৫৬৮)

বিস্তারিত  জানুনঃ 

সুতরাং সামনের রাস্তা দিয়ে বায়ু বের হওয়া এটি অযু ভেঙ্গে যাওয়ার কারনের মধ্যে নহে।
তাই এতে অযু ভেঙ্গে যাবেনা।   

★শরীয়তের বিধান হলো পুরুষ মহিলাদের লজ্জাস্থান (সামনের রাস্তা) দিয়ে বায়ু নির্গত হলে তাতে ওযু নষ্ট হয় না।
ফাতাওয়ায়ে শামী ১/২৬৩ মাকতাবায়ে যাকারিয়া।
হালবি কাবির ১২৫.ফাতাওয়ায়ে হক্কানীয়া ২/৯৩৫,ফাতাওয়ায়ে মারিগুবুল ফাতওয়া ৯৮.
দারুল উলুম  দেওবন্দ  এর  60219 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।

لماقال العلامۃ ابوبکربن الحدادؒ:والریح الخارجۃ من الذَّکَروفرج المرأۃ لاتنقض الوضوء علی الصحیح الاان تکون المرأۃ مفضادۃ فانہٗ یستحبّ لھاالوضوء۔(الجوھرۃ النیرۃ:ج؍۱،ص؍۸،کتاب الطھارۃ۔نواقض الوضوء)
لماقال العلامۃ الحصکفیؒ:ولا خروج ریح من قُبل غیرمفضاۃ اماھی فیندب لھا الوضؤوقیل یجب وقیل لومنتنۃ الخ۔(الدرالمختار علٰی ہامش ردالمحتار:ج؍۱،ص؍۱۲۶،باب نواقض الوضوء)
ومثلہ فی الفتاوٰی الھندیۃ:ج؍۱،ص؍۹،باب نواقص الوضوء۔
সারমর্মঃ
পুরুষের লিঙ্গ,মহিলার পেশাবের স্থান থেকে বায়ু বের হলে এর দ্বারা অযু ভেঙ্গে যাবেনা।
এটাই ছহীহ কওল। 

এ মর্মে শাইখ আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালিহ আল উসাইমীন (ফতোয়া ইবনে উসাইমীন ৪/১৪৭) এবং সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটি ফতোয়া প্রদান করেছেন।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার নামাজ হয়ে যাবে।
নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।      

(০২)
হ্যাঁ এতে গুনাহ হবে।
এক্ষেত্রে পরবর্তী কোন দিন উক্ত রোজা পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব হবে।

(০৩)
সেসব রোজার কাজা পুনরায় আপনাকে আর আদায় করতে হবেনা।

(০৪)
হানাফী মাযহাবের উলামায়ে কেরামগণ উক্ত হাদিসকে ছেলেদের ক্ষেত্রে দলিল বলে মনে করেন, মেয়েদের ক্ষেত্রে অন্য হাদিসকে তারা দলিল মনে করেন।

ফিক্বহে হানাফী অনুযায়ী মহিলারা সিজদার সময় এক পায়ের উপর আরেক পা রেখে ডান দিকে বের করে দিবে এবং খুব জড়োসড় হয়ে সিজদা দিবে। কারণ, ফিক্বহে হানাফী অনুযায়ী মহিলাদের নামাজে একটু পার্থক্য আছে।

নারীরা কিভাবে সেজদা করবে এ বিষয়ে হাদীস শরীফে এসেছে-


عن سالم بن غيلان عن يزيد بن أبي حبيب : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم مر على امرأتين تصليان فقال إذا سجدتما فضما بعض اللحم إلى الأرض فإن المرأة ليست في ذلك كالرجل (سنن الكبرى للبيهقى، كتاب الحيض، باب ما يستحب للمرأة من ترك التجافي في الركوع والسجود، رقم الحديث-3016)

তাবেয়ী ইয়াযীদ বিন আবী হাবীব রহ. বলেন-একবার রাসূল সা. দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্য) বললেন-“যখন সেজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়। (সুনানুল বায়হাকীহাদিস নং-৩০১৬কিতাবুল মারাসিল লি ইমাম আবু দাউদ-৫৫হাদিস নং-৮০)

,

 عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- :« إِذَا جَلَسْتِ الْمَرْأَةُ فِى الصَّلاَةِ وَضَعَتْ فَخِذَهَا عَلَى فَخِذِهَا الأُخْرَى ، وَإِذَا سَجَدْتْ أَلْصَقَتْ بَطْنَهَا فِى فَخِذَيْهَا كَأَسْتَرِ مَا يَكُونُ لَهَا ، وَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَيَقُولُ : يَا مَلاَئِكَتِى أُشْهِدُكُمْ أَنِّى قَدْ غَفَرْتُ لَهَا (السنن الكبرى، كتاب الصلاة، باب مَا يُسْتَحَبُّ لِلْمَرْأَةِ مِنْ تَرْكِ التَّجَافِى فِى الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ، رقم الحديث-3324)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত।  রাসূল সা. ইরশাদ করেছন-“মহিলা যখন নামাযের মধ্যে বসবে তখন যেন (ডান) উরু অপর উরুর উপর রাখে। আর যখন সেজদা করবে তখন যেন পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখে। যা তার সতরের জন্য অধিক উপযোগী। আল্লাহ তায়ালা তাকে দেখে বলেন-ওহে আমার ফেরেস্তারা! তোমরা সাক্ষী থাক। আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। (সুনানে বায়হাকী-২/২২৩হাদিস নং-৩৩২৪)

,

 عن علي قال إذا سجدت المرأة فلتحتفز ولتلصق فخذيها ببطنها (مصنف عبد الرزاق، كتاب الصلاة، باب تكبير المرأة بيديها وقيام المرأة و ركوعها وسجودها، رقم الحيث-5072)

হযরত আলী রা. বলেছেন-মহিলা যখন সেজদা করে তখন সে যেন খুব জড়সড় হয়ে সেজদা করে এবং উভয় উরু পেটের সাথে মিলিয়ে রাখে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-৩/১৩৮হাদিস নং-৫০৭২মুসান্নাফে ইবনে শাইবা-২/৩০৮হাদিস নং-২৭৯৩সুনানে কুবরা বায়হাকী-২/২২২)

,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ؛ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ صَلاَةِ الْمَرْأَةِ ؟ فَقَالَ : تَجْتَمِعُ وَتَحْتَفِزُ. (مصنف ابن ابى شيبة، كتاب الصلاة، في المرأة كَيْفَ تَجْلِسُ فِي الصَّلاَةِ، رقم الحديث-2794)

হযরত ইবনে আব্বাস রা. কে জিজ্ঞেস করা হল-মহিলারা কিভাবে নামায আদায় করবেতিনি বললেন- “খুব জড়সড় হয়ে অঙ্গের সাথে অঙ্গ মিলিয়ে নামায আদায় করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০২হাদিস নং-২৭৯৪)

,

 عن مجاهد ؛ أنه كان يكره أن يضع الرجل بطنه على فخذيه إذا سجد كما تصنع المرأة.

হযরত মুজাহিদ বিন জাবর রহ. থেকে বর্ণিত। তিনি পুরুষের জন্য মহিলার মত উরুর সাথে পেট লাগিয়ে সেজদা করাকে অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১/৩০২হাদিস নং-২৮৯৬)


আরো বিস্তারিত জানুন-https://ifatwa.info/3081/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 383 views
...