আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited by
আসসালামু আলাইকুম। আমার স্বামী একদিন রাতে খুব স্বাভাবিক অবস্থায় ঠান্ডা মাথায় আমাকে বলেন আমি যদি আমার বাবা-মায়ের বাসায় যাই তাদের সাথে সম্পর্ক রাখি তাহলে আমার অগ্রিম এক তালাক হয়ে যাবে।
পরবর্তীতে আমার স্বামী নিজেই আমাকে রাজি খুশি মনে আমার আব্বুর বাসায় দিয়ে গিয়েছিলেন।
আমার স্বামী বলেন যেহেতু তিনি শর্তের উপর ভিত্তি করে তালাক দিয়েছিলেন। কিন্তু যেহেতু তিনি নিজে আমাকে রাজি খুশি ভাবে আমার আব্বুর বাসায় দিয়ে গিয়েছেন। তাই তালাকে শর্তটি পূরণ হয় নাই। তাই তালাক হয়নি।
আমার স্বামী কয়েকবার আমাকে এমনও বলেছেন যে আমার কাছে টাকা নাই যদি আমার কাছে মোহরানার টাকা থাকতো তাহলে আমি তোমাকে তালাক দিয়ে দিতাম। আমি তখন আমার স্বামীকে বলেছিলাম। যদি এমনটাই হয় আর যদি তুমি আমাকে না চাও তাহলে টাকার প্রয়োজন নাই। আমি টাকা দিয়ে কি করব?
একবার আমাকে এমনটাও বলেছিলেন যে সে তার মা এর থেকে টাকা নিয়ে আমাকে দিয়ে তালাক দিয়ে দেবে। আমি তখন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমাকে তালাক দেওয়ার জন্য তোমার মা তোমাকে টাকা দিবেন? তখন সে বলেছিল আমার মা আমার সুখের জন্য দিবে।
একদিন আমার স্বামী আমার বুকে এবং গলায় পাড়া দিয়ে ধরে দম বন্ধ অবস্থা করেছিলেন পরবর্তীতে আমি আমার আব্বুর বাসায় চলে আসি। এরপর কিছুদিন পরে আমার স্বামী আমাকে বলেন, তুমি যদি আগামীকাল নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায় আমার সাথে দেখা না করো তাহলে তোমার বাকি দুই তালাক হয়ে যাবে।
আমি তাকে বলেছিলাম সেদিন আমার এবং আমার স্বামী দুজনেরই একটি সরকারি চাকরির পরীক্ষা ছিল কারো সাথেই মোবাইল ফোন ছিল না আমি তাকে জানিয়েছিলাম দেখা করা সম্ভব না। তারপরও উনি আমাকে তালাকের কথা জানান।
উনি কিন্তু আমাকে অনেক রকম ভয় দেখিয়ে দেখাচ্ছিলেন, আমার পরিবারের ক্ষতি করার কথা বলছিলেন। আমি যতদিন উনার সাথে ছিলাম, আপনি সবসময় আমার বাবা-মায়ের মৃত্যুর কথা বলতেন। উল্লেখ্য , উনি চেয়েছিলেন আমি আমার বাবার সম্পদ টাকা পয়সা বাবার থেকে চেয়ে উনাকে দেই। উনাকে যেন একটা জায়গা কিনে দেই বাড়ি করে দেই এবং প্রতিমাসে উনাকে যেন কিছু পরিমাণ টাকা দেই। উনি কোন কাজ করতেন না। আমার কোন ধরনের কোন দায়িত্ব উনি নিতেন না। আমি অসুস্থ হলে আমাকে আমার বাবার বাসায় পাঠিয়ে দিতেন। অথচ আমার বিয়ের এক বছর হয়নি তখন।
যাই হোক আমি পরের দিন পরীক্ষা দিয়ে ওই নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার খুব ভয় হচ্ছিল। আমি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলাম। আমার হার্টের সমস্যা রয়েছে, আমি আর কোন ভাবে অবস্থান করতে পারছিলাম না। তার সাথে আমার ৫ টায় দেখা হওয়ার কথা কিন্তু আমি ৪:৫০ এ ওই জায়গা থেকে চলে আসি। প্রমাণস্বরূপ ওই জায়গা থেকে আমার ছোট বোনের জন্য কিছু খাবার কিনে নিয়ে আসি। বাসায় ফিরে আমি সেই খাবারের প্যাকেটের ছবি তাকে পাঠিয়েছিলাম। আমি তখন তাকে জানাই শর্ত অনুযায়ী যেহেতু দেখা হয় নাই তাহলে তো তালাক হয়ে গেল। পরবর্তীতে আমি তার সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু উনি জানিয়েছেন, উনি আমাকে কিছু মেসেজ পাঠিয়ে ছিলেন যেখানে লেখা ছিল যদি কালকে সত্যিই পরীক্ষা থাকে তাহলে পরীক্ষা দিতে যাও। কিন্তু ওই মেসেজগুলো আমার কাছে আসে নাই। উনি আমাকে কিছু স্ক্রিনশট দিয়েছিলেন। উনি বলছেন যেহেতু আমি গিয়েছিলাম তাহলে তালাক হয়নি।

প্রশ্ন হচ্ছে, সত্যিই কি তালাক হয়ে গিয়েছে?

শর্ত দিয়ে কি তালাক হয় ?
শর্ত অনুযায়ী তো তার সাথে আমার দেখা হয় নাই তাহলে কি তালাক হয়ে গিয়েছে?
শেষ কথাটা ছিল বাকি দুই তালাক হয়ে যাবে। একসাথে কি দুই তালাক হয়?
আমার আসলে মহরম বলতে শুধুমাত্র আমার বাবা আছেন। আমার আব্বু এই অবস্থার কিছুদিন পরে হার্ট অ্যাটাক করেন। এজন্যই একজনের কাছে আপনাদের এই লিংকটা পেয়ে প্রশ্ন করা। আল্লাহর জন্য আমাকে সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করবেন।

আমি হানাফি মাযহাবের অনুসারী।

1 Answer

0 votes
by (693,060 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
শর্তের মাধ্যমে তালাক প্রদাণের জন্য নিম্নোক্ত হরফ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।যথা-
(১)إنْ-যদি
(২)إِذَا-যখন
(৩)إِذْمَا-যখন
(৪)كُلُّ-সব
(৫)كُلَّمَا-যখনই
(৬)مَتَى-যখন
(৭)مَتَى مَا-যখন
বাক্যর প্রারম্ভে এ সকল শব্দ প্রয়োগ করে কোনো কাজের সাথে সম্পর্কিত করে তালাক প্রদাণ করলে যখনি উক্ত শর্ত পাওয়া যাবে,তখন তাৎক্ষণাৎ তালাক পতিত হয়ে উক্ত শর্তযুক্ত বাক্য বিনষ্ট হয়ে যাবে।পরবর্তীতে একাজের পূনরাবৃত্তি ঘটলে আর তালাক পতিত হবে না।তবে শুধুমাত্র ৫ নং বাক্য এর বিপরিত।এটা ব্যবহার করলে যখনই শর্ত পাওয়া যাবে তখনই তালাক পতিত হতে থাকবে।যতক্ষণ না উক্ত বিয়ে বন্ধন শেষ হচ্ছে।শরীয়া মোতাবেক দ্বিতীয়বার উক্ত স্বামী উক্ত স্ত্রীকে বিয়ে করলে তখন আর তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪১৫) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1237

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
''তুমি যদি তোমার বাবা-মায়ের বাসায় যাও, তাদের সাথে সম্পর্ক রাখো, তাহলে অগ্রিম এক তালাক হয়ে যাবে।''

পরবর্তীতে স্বামীর অনুমতি নিয়ে গেলে বা স্বামী তার স্ত্রীকে নিয়ে শশুড় বাড়ীতে তালাক হয়ে যাবে। শর্তযুক্ত তালাকের ক্ষেত্রে একবার তালাককে কোনো কিছুর সাথে শর্তযুক্ত করে দিলে পরবর্তীতে আর তালাককে ফিরানো যাবে না। সেটা অটোমেটিক ভাবেই হয়ে যাবে।

"আগামীকাল নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায় আমার সাথে দেখা না করো তাহলে তোমার বাকি দুই তালাক হয়ে যাবে।''

যেহেতু আপনি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায় তার সাথে দেখা করেননি, বরং একাকি সেখানে গিয়ে চলে এসেছেন, তাই বাদবাকি দুই তালাকও পতিত হয়ে যাবে। কেননা উপরোক্ত বাক্যে তিনটি বিষয় উল্লেখযোগ্য (ক) নির্দিষ্ট সময় (খ) নির্দিষ্ট জায়গা (গ) স্বামীর সাথে দেখা করা। এখানে প্রথম দু'ইটি পাওয়া গেলেও তৃতীয়টি পাওয়া যায়নি, তাই তালাক পতিত হয়ে যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...