আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
68 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম সম্মানিত উস্তায।
আমার একজায়গায় বিয়ের কথা চলছে। তো নিয়ম অনুযায়ী আমি নিয়মিত ইস্তিখারা করছি।

★ম্যাক্সিমাম স্বপ্নই পসিটিভ ইঙ্গিত বহন করেছে এবং আপনারা পূর্বে সেটাই ব্যাখ্যা করেছেন আলহামদুলিল্লাহ।

[এ ব্যাপারে পূর্বের ইস্তিখারা : https://ifatwa.info/119189/]

স্বপ্নগুলো ছিল এমন যে, ছেলে আমাদের বাড়ি আসছে, বা উনার মা বা আত্নীয়রা আসছে। এমনও হয়েছে, উনাদের টপিক বাদ দিয়ে দিয়েছি কিন্তু স্বপ্নে দেখি উনারা আমাদের বাসায় এসেছেন। বিয়ে হচ্ছে, বা বিয়ে হবে আয়োজন চলছে এরকম অনেক কিছুই। স্বপ্নে যা দেখেছি বাস্তবেও তা অনেকাংশে মিলে গিয়েছে পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছি। যেমন কে কোন কালারের ড্রেস পরে আসছে, বা কিভাবে সেজেছে, এসে কী করতেছে বা বলতেছে এগুলো বাস্তবে অনেকটাই মিলে গিয়েছে।

.
২-৩ টি স্বপ্ন আমি একটু খারাপ দেখেছি মনে হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে -
★আমি স্বপ্নেই দেখি আমি ঘুমাচ্ছি। এরমধ্যেই দেখি আমার বিয়ে ১ সপ্তাহ পর সেই ছেলের সাথেই। বাসায় মা ভাবি অনেক কাজ করতেছে, ফ্রিজ খুলে ক্লিন করতেছে। ফার্নিচার গুলো সরাচ্ছে জন্য। আমি ভাবছিলাম উনারা কতো কষ্ট করতেছে!। এরমধ্যেই আমি দেখি আমার বাম হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে, সারা শরীরে পিম্পেল উঠেছে। আমি দেখে বলি যে, হায় আল্লহ আমার তো কখনও এরকম ব্রণ/পিম্পেল হয়নি এখন এই অবস্থা হলো কেন। আমি কিভাবে এগুলোর সমাধান করব? কিন্তু কোনো রকমের অস্বস্তি বা কষ্ট হচ্ছিল না।

এরমধ্যেই দেখি আমার ভাইজি বেলকনি দিয়ে বাহিরে পরে যাচ্ছে জাস্ট হাত দিয়ে গ্রিল ধরা। আমি দ্রুত গিয়ে ওকে ধরে ভিতরে নিয়ে আসি।

★একদিন দেখি এক হুজুর এসে আমার টেবিলে বসে খুব সুন্দর তিলাওয়াত করছে, আমি টেবিলের পাশে আমার বেড এ ঘুমাচ্ছিলাম। আমি তিলাওয়াত শুনে সজাগ হয়ে দেখি হুজুর তিলাওয়াত করেই যাচ্ছে, সাথে সাথেই আমি কাথা মুড়ো দিই। ভেবেছিলাম চলে যাবে, ভয়ে দুয়া পরতেছিলাম। এরপর দেখি সে মুচকি হাসতেছে অনবরত এরপর আমার পাশেই শুয়ে পরেছে সোজা হয়ে। শুয়ে হাসতেই আছে। আমি কাথা মুরো দিয়েই এক পাশ দিয়ে নেমে মায়ের কাছে গিয়ে জানতে পারি উনাকে ছেলে পক্ষই পাঠাইছে আমাকে দেখার জন্য। এটা শুনে আমি সব ভাঙচুর করতে ছিলাম, এই লোক কেন আসলো আমার পাশে কেন শুয়েছে আমাকে দেখেছে কেন এগুলো বলে আর কাদতে ছিলাম। এরমধ্যেই আমার মা বলে তুই ত কখনও ভাঙচুর করস না এমন করিস না মা। আমারও হুস আসলো যে ভাঙচুর ত সমাধান না আমি কেন ভাঙতেছি কখনও ত এমন করিনি। আমি রাগ দেখাচ্ছি মা'কে যে কেন এই লোককে বাসায় ঢুকতে দিয়েছে? এরপর ভাবতেছিলাম এই একটা রিজনই যথেষ্ট উনাদের রিজেক্ট করার। কিভাবে না বলব সেটা ভাবতেছিলাম, প্রথমে ভাইয়াকে না বলবো নাকি অন্য কোনো উপায়ে।
এরপর আরও দেখেছি সেগুলো অন্য বিষয়ে।

★আজকে দেখি আমার বিয়ে সেই ছেলের সাথেই। অনেক মেহমান আসছে বাসায়, আত্নীয়রা। উনারাও এসেছেন।
পরক্ষণেই আমার এক ক্লাসমেট তার ভাইয়ের জন্য প্রস্তাব করে এবং সে কয়েকঘন্টার মধ্যে বড়ো এবং অনেক দামি ডায়মন্ড এবং গোল্ড মিশ্রিত অনেক বড় একটা কানের দুল এনে বলে এটা তোমার জন্য। আমার জমানো টাকা দিয়েই বানিয়ে এনেছি (তখন মনে মনে ভাবছিলাম এতো টাকা কোথায় পেলে, এদিকে ভার্সিটিতে গেলে তো তোমার ভাড়ার টাকাও আমি দেই) ও বলতেই ছিল, তোমাকে আমার ভাবি বানাব, আমার অনেক স্বপ্ন তোমাকে নিয়ে। আমি মনে মনে ভাবছিলান আমার ঐ ছেলের সাথে আজকেই বিয়ে হয়ে যেতে পারে, তোমার ভাইর সাথে না। এটা জানাতে যাব তখনই মনে পরে বিয়ে না হতে কাউকে জানাব না তাই ওকে আর জানাইনি।

তবে ও দুলটা দিয়ে আমাকে আর আমার মা কে দেখাচ্ছে আমিও দেখতেছিলাম, এক পর্যায়ে সেটা কয়েকটুকরো হয়ে যায় আমার ভাইয়ের ছেলের হাত থেকে পরে। এরপর আমি টুকরো হওয়া জিনিস গুলো জোড়া লাগিয়ে ওকে দেওয়ার প্রিপারেশন নিচ্ছি।
এরমধ্যে দেখি পাত্রসহ বাসার পুরুষেরা বাহিরে যাচ্ছে কী যেন কাজে, সম্ভবত নামাজের জন্য। দরজার পর্দা একটু সরে জাওয়াতে ছেলে আমাদের রুমের দিকে তাকাতে তাকাতে যাচ্ছিল।
এরপর দুলটা জোড়া লাগিয়ে দেখি ১/২ টা ঝুরা কম। আমি বলি বাবু (ভাইয়ের ছেলে) এমন ভাবে ছিড়েছে হারিয়েই গেছে মনে হয়। থাক ওকে ওর দুল আর কিছু টাকা দিয়ে দিব সাথে। আমার ক্লাসমেট আশে পাশেই ছিল।
আরও দেখেছি স্পষ্ট মনে নেই।
এ স্বপ্নগুলো দ্বারা পসিটিভ/নেগেটিভ কী ইঙ্গিত করে জানালে মুনাসিবব উস্তায মিন ফাদ্বলিক।
যাঝাকাল্লহু খইরন ফিদ-দুনইয়া ওয়াল আখিরহ

1 Answer

0 votes
by (680,550 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/13381/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
ইস্তেখারা অর্থ হল, ভালোকে তালাশ করা। অর্থাৎ যখন কারো সামনে দু’টি রাস্তা থাকে, সে জানেনা কোন রাস্তাটি তার জন্য মঙ্গলজনক, তাহলে এমতাবস্থায় সে ইস্তেখারা করে একটি রাস্তাকে নির্দিষ্ট করবে। সুতরাং কারো অসুখ মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে কি না? সেটা জানার জন্য ইস্তেখারা করার কোনো নিয়ম নাই। হ্যা এ বিষয়ে আল্লাহর মদদ ও সাহায্য কামনার স্বার্থে ইস্তেখারা করা যেতে পারে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
হযরত জাবির রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُنَا الِاسْتِخَارَةَ فِي الأُمُورِ كُلِّهَا، كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ القُرْآنِ، يَقُولُ: " إِذَا هَمَّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ، فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ لِيَقُلْ: 

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সব কাজে ইস্তিখারাহ্* শিক্ষা দিতেন। যেমন পবিত্র কুরআনের সূরাহ্ আমাদের শিখাতেন। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন কাজের ইচ্ছা করলে সে যেন ফরজ নয় এমন দু’রাক‘আত সালাত আদায় করার পর এ দু’আ পড়েঃ 

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلَّامُ الغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي، ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِي الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي " قَالَ: «وَيُسَمِّي حَاجَتَهُ»

ভাবার্থঃ‘‘প্রভু হে! আমি তোমার জ্ঞানের ওয়াসিলাহ্তে তোমার অনুমতি কামনা করছি; তোমার কুদরতের ওয়াসিলায় শক্তি চাচ্ছি আর তোমার অপার করুণা ভিক্ষা করছি। কারণ তুমিই সর্বশক্তিমান আর আমি দুর্বল। তুমিই জ্ঞানী আর আমি অজ্ঞ এবং তুমিই সর্বজ্ঞ। প্রভু হে! তুমি যদি মনে কর যে, এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায়, ইহকালে ও পরকালে সত্বর কিংবা বিলম্বে আমার পক্ষে মঙ্গলজনক হবে তা হলে আমার জন্য তা নির্ধারিত করে দাও এবং তার প্রাপ্তি আমার জন্য সহজতর করে দাও। অতঃপর তুমি তাতে বারাকাত দাও। আর যদি তুমি মনে কর এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায় ইহকালে ও পরকালে আমার জন্য ক্ষতিকর হবে শীঘ্র কিংবা বিলম্বে তাহলে তুমি তাকে আমা হতে দূর করে দাও এবং আমাকে তা হতে দূরে রাখো; অতঃপর তুমি আমার জন্য যা মঙ্গলজনক তা ব্যবস্থা কর- সেটা যেখান থেকেই হোক না কেন এবং আমাকে তার প্রতি সন্তুষ্টচিত্ত করে তোল।’’তিনি ইরশাদ করেন هَذَا الْأَمْرَ  তার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করবে।(সহীহ বুখারী- (শামেলা);২/৫৭,হাদীস নং১১৬২,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৪/৬২৯) 

বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/1472

ইস্তেখারাকৃত বিষয়টির ফায়সালা কিভাবে বুঝতে পারবে? কোন পদ্ধতিতে তা জানা যাবে? এ নিয়ে উলামায়ে কেরাম থেকে একাধিক পদ্ধতি জানা যায়।
উক্ত আমল শেষ করে কারো সাথে কথা না বলে কিবলামুখী হয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। ঘুম থেকে জাগার পর মন যেদিকে সায় দিবে, বা যেদিকে আগ্রহী হয়ে উঠবে, সেটিই ফলাফল মনে করবে। [তুহফাতুল আলমায়ী-২/৩৩৮, বেহেশতী জেওর]

বাকি এছাড়াও আরো অনেক পদ্ধতি আছে,তবে সেসব  পদ্ধতিকে রাসূল সাঃ থেকে প্রমাণিত পদ্ধতি বলা যাবে না। বাকি একদম বাতিল পদ্ধতিও বলা ঠিক নয়। কারণ এটি জানার পদ্ধতি যেহেতু কোন দ্বীনী বিষয় নয়। বরং দুনিয়াবী বিষয়ের ফায়সালা জানতে এমনটি করা হয়ে থাকে, তাই এটির ক্ষেত্রে মানুষের অভিজ্ঞতার একটি দখল রয়েছে।
,
 কারো অভিজ্ঞতায় যদি এমন আমল করার দ্বারা ইস্তেখারাকৃত বিষয়ের ফলাফল স্পষ্ট হয়, তাহলে সেএর উপর আমল করতে পারে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
আপনার স্বপ্নগুলো পজিটিভ বলে মনে হচ্ছে। সুতরাং আশা করা যায় যে ছেলেটির সাথে আপনার বিবাহের কথা চলছে, খুব দ্রুতই তার সাথে আপনার বিবাহ হবে, ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...