আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
একটি মেয়ের ডিভোর্স শরীয়তের ভিত্তিতে কার্যকর হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাচ্ছি। মেয়েটির কাবিননামায় 18 নং কলামে "ভরণপোষণ প্রদান না করিলে" তালাক দিতে পারিবে- এই মর্মে উল্লেখ ছিল।

বিবাহ পরবর্তী সময় দেখা যায় যে, ছেলেটির মা মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ ছিলো না। প্রায়ই চিৎকার চেঁচামেচি করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করত। অনেক সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হতো। আর উনার চিকিৎসা করানোও সম্ভব ছিলো না কারণ উনি ডাক্তারের কাছে যাওয়া পছন্দ করতেন না। বিয়ের আগে ছেলে বলেছিল যে বিয়ের পর তার পরিবারের সাথেই থাকতে হবে। কিন্তু ছেলের মায়ের মানসিক সমস্যার কথা পুরোপুরি গোপন করেছিলো ওরা।
তাছাড়া আরো সমস্যা হচ্ছে যে ছেলেটির কিছুটা শারীরিক সমস্যা ছিল। মেয়েটি এবং মেয়েটির পরিবার বারবার অনুরোধ করার পরও ছেলেটির পরিবার তার চিকিৎসা না করে উল্টো মেয়েটির উপর মানসিক নির্যাতন করত। আর ছেলেটি মেয়েটার সাথে ভালো মানুষের অভিনয় করতো।
অন্যদিকে তারা বিয়ের আগে দ্বীনের সব ব্যাপার মেনে নিলেও বিয়ের পর অন্য চেহারা দেখা যায়। অনেক বিদআত আর মিথ্যাচার ছিলো ওই পরিবারে। যেমন: বিয়ের সময় ওরা বলেছিল কাবিন হচ্ছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা আর উপহার হিসেবে ২.৫ লাখ টাকার গহনা দিচ্ছে। কিন্তু কাবিনের টাকা ওরা মেয়েকে দিলেও বিয়ের পর বাহানা করে গহনা রেখে দিয়েছিল।

ছেলেটির পরিবারের ছিল প্রচন্ড অহংবোধ এবং ছেলের বাবা ছিলেন প্রচণ্ড রাগী। ছেলেটির বাবা একদিন মেয়েটিকে বলেছিল " আমাদের এইসব ব্যাপার বাসায় জানিয়ে লাভ নেই কারণ তারা তো আমাদেরকে পরিবর্তন করতে পারবে না শুধু পারবে তোমাকে নিয়ে যেতে"। তাছাড়া আরেকদিন মেয়েটি অনেক কান্নাকাটি করায় ছেলেটি বলেছিল "আপনি চাইলে চলে যেতে পারেন"। যদিও তারা কখনোই মেয়েটিকে এত সহজে ছেড়ে দেয়ার মানুষ ছিলো না।

বিয়ের পর পর মেয়েটিকে বাসায় আসতে দিলেও তারপর আর ওরা বাসায় আসতে দিচ্ছিল না। এতো এতো সমস্যা দেখে শেষ পর্যন্ত বিয়ের ২ মাস পর অনেক কষ্টে মেয়েটির পরিবার তাকে নিয়ে আসে।
তারপর উকিলের কাছে গিয়ে একজন কাজির মাধ্যমে ডিভোর্স দিয়ে তাদেরকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয়া হয়। কারণ ছেলেপক্ষ কখনোই ডিভোর্স দিবে না আর ডিভোর্সের কথা জানলে তারা মেয়ের বাসায় এসে মেয়েকে যেভাবেই হোক নিয়ে চলে যেতো।

ডিভোর্সের পরে ছেলেটি শুধুমাত্র একদিন এসে মেয়েটির পরিবারের সাথে বাজে ব্যবহার করে চলে গেছে। ছেলেটির বাবাও একদিন ফোন করে হুমকি-ধামকি দেয়। এরপর মেয়েটির পরিবার ভয়ে ওদের আর কোন কল রিসিভ করেনি। আর ছেলের পরিবারও তাদের বাসায় একবারের জন্যও আসেনি।
ago by (7 points)
edited ago by
উল্লেখ্য: কাজী ১৮ নং কলাম পূরণ করার পর মেয়ে কাবিননামায় সাইন করেছিল। এরপর ছেলের সাইন নেয়া হয়েছিল। তারা সেটা পড়ে সাইন করেছিল কিনা সেটা মেয়েপক্ষ জানে না। ছেলে ডিভোর্সের পর বলেছিল যে সে নাকি জানতো না এই বিষয়ে। ছেলে অনেক মিথ্যা কথা বলে। এখন এটা সত্যি না মিথ্যা বলেছে সেই ভালো জানে!

আরেকটা বিষয় ছিল যে তাদের ছেলের যেহেতু শারীরিক দুর্বলতা ছিল তাই বিয়ের কিছুদিন পর তারা চাচ্ছিল যে প্রেগন্যান্ট হওয়ার আগে মেয়েকে আর বাসায় আসতে দিবে না যেনো মেয়েপক্ষ কোনোভাবে মেয়েকে না নিয়ে যেতে পারে। এদিকে বিয়ের প্রায় ১.৫ মাস পরে মেয়েটা প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়ে। কিন্তু ছেলেদের এতো সমস্যা দেখে মেয়েপক্ষ আর উপায় না দেখে মেয়েকে বাসায় এনে ডিভোর্স দিতে বাধ্য হয়। মেয়ে তখন প্রায় ২ সপ্তাহের মতো প্রেগন্যান্ট ছিল। ছেলেপক্ষ জানতে পারলে অনেক সমস্যা করতো তাই ভয়ে মেয়েপক্ষ ডিভোর্স দিয়ে তারপর এবর্শন করে ফেলে।

সব পরিস্থিতি বিবেচনা করে ডিভোর্স কার্যকর হয়েছে কিনা জানতে চাই।

1 Answer

0 votes
ago by (681,630 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
প্রথমত মৌলিক একটি বিষয় আমাদেরকে বুঝে নিতে হবে যে, মাসআলা বা ফাতাওয়া দেয়া হয়, প্রশ্নকারীর বর্ণনা অনুপাতে। প্রশ্নের শব্দের হেরফের ফাতাওয়া পাল্টে যায়।
যাইহোক, আপনার বক্তব্য অনুপাতেই সমাধান পেশ করা হচ্ছে। যদি আসল অবস্থা ভিন্ন হয়, তাহলে এর দায়দায়িত্ব আমাদের নয়।

(وَأَمَّا) بَيَانُ صِفَةِ الْحُكْمِ الثَّابِتِ بِالتَّفْوِيضِ: فَمِنْ صِفَتِهِ أَنَّهُ غَيْرُ لَازِمٍ فِي حَقِّ الْمَرْأَةِ حَتَّى تَمْلِكَ رَدَّهُ صَرِيحًا أَوْ دَلَالَةً لِمَا ذَكَرْنَا أَنَّ جَعْلَ الْأَمْرِ بِيَدِهَا تَخْيِيرٌ لَهَا بَيْنَ أَنْ تَخْتَارَ نَفْسَهَا وَبَيْنَ أَنْ تَخْتَارَ زَوْجَهَا، وَالتَّخْيِيرُ يُنَافِي اللُّزُومَ وَمِنْ صِفَتِهِ أَنَّهُ إذَا خَرَجَ الْأَمْرُ مِنْ يَدِهَا لَا يَعُودُ الْأَمْرُ إلَى يَدِهَا بِذَلِكَ الْجَعْلِ أَبَدًا،
তাফবীযে তালাকের মাধ্যমে অর্জিত তালাকের অধিকার স্ত্রীর জন্য গ্রহণ করা অত্যাবশ্যকীয় নয়।এমনকি স্ত্রী প্রকাশ্যে বা ইশারায় সেই অধিকার কে ফিরিয়ে দেয়ারও ক্ষমতা রাখে। কেননা আমরা ইতিপূর্বে উল্লেখ করেছি যে, স্ত্রীর হাতে অর্পিত অধিকারটি তার ইচ্ছাধীন।স্ত্রী চাইলে সে তার অধিকার কে বাস্তবায়িত করতে পারে, আবার সে স্বামীকে গ্রহণ করেও নিতে পারে।সুতরাং ইচ্ছাগত বিষয় অত্যাবশ্যকীয় বিষয়ের সম্পূর্ণ বিরোধী।
এ হিসেবে বলা যায় যে,যখন স্ত্রী তার স্বামী কর্তৃত প্রদত্ত তালাকের অধিকারকে ফিরিয়ে দেবে তখন পূর্বে প্রদত্ত অধিকার দ্বারা স্ত্রী আর নিজের উপর তালাক প্রয়োগ করতে পারবে না।(বরং নতুন করে আবার স্বামী অধিকার দিলে স্ত্রী তালাকের মালিক বনবে।)
(বাদায়ে সানায়ে-৩/১১৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু ভরণপোষণ না দিলে তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু প্রশ্নের বিবরণমতে স্বামী তো ভরণপোষণে কোনো কমতি করছে না হ্যা, অন্যভাবে জুলিম নির্যাতন করছে। সুতরাং স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবে না।  এবং স্ত্রী কর্তৃক যেই তালাক গ্রহণ করা হযেছে, সেটাও কার্যকর হবে না।

 "আপনি চাইলে চলে যেতে পারেন"।  যেহেতু তৎক্ষণাৎ তালাক নেননি তাই এখন তালাকের অধিকার পাবেন না। বর্তমানে আপনি কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। অথবা সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by
তালাক দেয়া হয়েছিল উকিলের মাধ্যমে। যেহেতু বাংলাদেশের আইন মতে তালাক হয়ে গেছে তো এখন কোর্টের দারস্ত হলে কোর্ট কি এটা এখন ভালোভাবে নেবে ? আর তালাক দেয়া হয়েছে  ৪ বছরের উপরে হয়ে গেছে। এর মধ্যে ছেলেপক্ষের সাথে মেয়েপক্ষের কোনো যোগাযোগ নেই। সামাজিকভাবে এখন এটা কিভাবে করা যাবে? 
পরামর্শ দিবেন প্লিজ।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...