আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
5 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আস সালামু আলাইকুম।
ইদানিং বিভিন্ন ভিক্ষুক দেখা যায় যারা পেশাদার। অনেক সময় কিছু লোক কে দেখে মনে হয় নেশাখোর।অনেকে দূর এরিয়া থেকে এসে বলে অমুক মাদ্রাসা থেকে এসেছি সাহায্যের জন্য।

আমার প্রশ্ন হল আমি দান করার আগে কি একটু যাচাই করব কিনা?
সে তো সিন্ডকেট,নেশাখোর,পেশাদার বা প্রকৃত অভাবী নাও হতে পারে।এক বক্তার বক্তব্যে দেখলাম তিনি বলছেন যাচাই করার দরকার নাই।ঊনি বনী ঈসরাইলের ৩ ব্যক্তির উদাহরণ দিলেন যাদের কাছে ফেরেশতা এসেছিল তাদের পরীক্ষা করতে।তাদের মাঝে এক ব্যক্তি তো যাচাই করেনি সে প্রকৃত অভাবী কিনা!

কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছি আমি প্রকৃত অসহায় কে দিতে চাই,কোন বাটপার কে নয়।

এক্ষেত্রে কেউ এলেই তাকে সাহায্য করতে হবে কিনা?

এব্যাপারে মুফতি সাহেবের উত্তর চাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
ago by (649,110 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ الْخِيَارِ، قَالَ أَخْبَرَنِي رَجُلَانِ، أَنَّهُمَا أَتَيَا النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَهُوَ يَقْسِمُ الصَّدَقَةَ فَسَأَلَاهُ مِنْهَا فَرَفَعَ فِينَا الْبَصَرَ وَخَفَضَهُ فَرَآنَا جَلْدَيْنِ فَقَالَ " إِنْ شِئْتُمَا أَعْطَيْتُكُمَا وَلَا حَظَّ فِيهَا لِغَنِيٍّ وَلَا لِقَوِيٍّ مُكْتَسِبٍ "

উবায়দুল্লাহ ইবনু ‘আদী ইবনুল খিয়ার (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’ ব্যক্তি আমাকে সংবাদ দেন যে, তারা বিদায় হাজ্জের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হন, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাদাকা বিতরণ করছিলেন। তারা উভয়ে তাঁর কাছে যাকাত হতে কিছু চাইলেন। তিনি আমাদের দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে আবার চোখ নামালেন। তিনি দেখলেন, তারা উভয়েই স্বাস্থ্যবান। তিনি বললেনঃ তোমরা চাইলে আমি তোমাদেরকে দিবো, কিন্তু এতে ধনী ও কর্মক্ষম ব্যক্তির অংশ নেই।
(আবু দাউদ ১৬৩৩.নাসায়ী (অধ্যায় : যাকাত, হাঃ ২৫৯৭), আহমাদ, বায়হাক্বী, ত্বাবারানী।)

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ هَارُونَ بْنِ رِيَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي كِنَانَةُ بْنُ نُعَيْمٍ الْعَدَوِيُّ، عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ مُخَارِقٍ الْهِلَالِيِّ، قَالَ : تَحَمَّلْتُ حَمَالَةً فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم فَقَالَ " أَقِمْ يَا قَبِيصَةُ حَتَّى تَأْتِيَنَا الصَّدَقَةُ فَنَأْمُرَ لَكَ بِهَا " . ثُمَّ قَالَ " يَا قَبِيصَةُ إِنَّ الْمَسْأَلَةَ لَا تَحِلُّ إِلَا لأَحَدِ ثَلَاثَةٍ: رَجُلٌ تَحَمَّلَ حَمَالَةً فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ فَسَأَلَ حَتَّى يُصِيبَهَا ثُمَّ يُمْسِكُ، وَرَجُلٌ أَصَابَتْهُ جَائِحَةٌ فَاجْتَاحَتْ مَالَهُ فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ فَسَأَلَ حَتَّى يُصِيبَ قِوَامًا مِنْ عَيْشٍ " . أَوْ قَالَ " سِدَادًا مِنْ عَيْشٍ " . " وَرَجُلٌ أَصَابَتْهُ فَاقَةٌ حَتَّى يَقُولَ ثَلَاثَةٌ مِنْ ذَوِي الْحِجَا مِنْ قَوْمِهِ قَدْ أَصَابَتْ فُلَانًا الْفَاقَةُ فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ فَسَأَلَ حَتَّى يُصِيبَ قِوَامًا مِنْ عَيْشٍ - أَوْ سِدَادًا مِنْ عَيْشٍ - ثُمَّ يُمْسِكُ وَمَا سِوَاهُنَّ مِنَ الْمَسْأَلَةِ يَا قَبِيصَةُ! سُحْتٌ يَأْكُلُهَا صَاحِبُهَا سُحْتًا "

ক্বাবীসাহ ইবনু মুখারিক আল-হিলালী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি অন্যের ঋণের জামিনদার হলাম। পরে আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলে তিনি বললেনঃ হে ক্বাবীসাহ! আমাদের কাছে যাকাতের মাল আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো। আমরা তা থেকে তোমাকে কিছু দেয়ার নির্দেশ দিবো। পরে তিনি বললেন, হে ক্বাবীসাহ! তিন ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো জন্য সওয়াল করা বৈধ নয়। (১) যে ব্যক্তি কোন ঋণের জামিনদার হয়েছে ঋণ পরিশোধ করা পর্যন্ত তার জন্য সওয়াল করা হালাল, পরিশোধ হয়ে গেলে সে বিরত থাকবে। (২) যে ব্যক্তির সমস্ত মাল আকস্মিক দুর্ঘটানায় ধ্বংস হয়ে গেছে, তার জীবন ধারণের পরিমাণ সম্পদ পাওয়া পর্যন্ত তার জন্য সওয়াল করা হালাল। (৩) যে ব্যক্তি দুর্ভিক্ষ কবলিত, এমনকি তার গোত্র-সমাজের তিনজন বিবেচক ও সুধী ব্যক্তি বলে যে, অমুক ব্যক্তি দুর্ভিক্ষ পীড়িত। তখন জীবন ধারণের পরিমাণ সম্পদ পাওয়া পর্যন্ত তার জন্য সওয়াল করা বৈধ, এরপর তা থেকে বিরত থাকবে। অতঃপর বলেন, হে ক্বাবীসাহ! এ তিন প্রকারের লোক ছাড়া অন্যদের জন্য সওয়াল করা হারাম এবং কেউ করলে সে হারাম ভক্ষণ করলো।
(মুসলিম (অধ্যায় : যাকাত), নাসায়ী (অধ্যায় : যাকাত, হাঃ ২৫৭৮), আবু দাউদ ১৬৪০.দারিমী, আহমাদ।)

সুওয়াল করা তিন প্রকার মানুষ ব্যতীত অন্য কারো জন্য বৈধ নয়।
  1. ঐ ব্যক্তির জন্য বৈধ যে, অন্যর ঋণের বোঝা/রক্তপণ নিজ দায়িত্বে নিয়ে এসেছে।যতক্ষণ না উক্ত প্রয়োজন শেষ হয়(ততক্ষণ বৈধ রয়েছে)।
  2. ঐ ব্যক্তির জন্য বৈধ যে,যাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছে, অর্থাৎ তার সমস্ত সম্পত্তি ধংস হয়ে গেছে।যতক্ষণ না তার আবশ্যকীয় প্রয়োজনাদি পূর্ণ হয়।(ততক্ষণ বৈধ রয়েছে)
  3. ঐ ব্যক্তির জন্য বৈধ যে, নিতান্ত-ই গরীব হয়ে গিয়েছে,এমনকি তার প্রতিবেশীদের মধ্যে তিনজন জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি দাড়িয়ে এ স্বাক্ষ্য প্রদান করতে সক্ষম যে অমুক গরীব হয়ে গিয়েছে।যতক্ষণ না সে তার আবশ্যকীয় প্রয়োজনাদি পূর্ণ করবে।(ততক্ষণ বৈধ রয়েছে) (সহীহ মুসলিম-১৮৩৭)
রাস্তা ঘাটে ভিক্ষুকদের ক্ষেত্রে ভিক্ষা একরকম পেশা হয়ে গেছে।তন্মধ্যে অনেকের আবার আর্থিক সচ্ছলতা ও শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে।এদেরকে রুক্ষ ভাষায় ধমক না দিয়ে উপদেশ দিতে হবে।নরম ভাষায় তাদেরকে বুঝাতে হবে।না দিলে সুন্দরভাবে বিদায় দিতে হবে।
কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟﺴَّﺎﺋِﻞَ ﻓَﻼ ﺗَﻨْﻬَﺮْ
তরজমাঃ এবং(হে নবী) আপনি সওয়ালকারীকে ধমক দিবেন না।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
কেউ এলেই তাকে সাহায্য করতে হবে,এমনটি কোথাও নেই।

সে প্রকৃত অসহায় কিনা,সেটি আপনি যাচাই-বাছাই করতে পারেন।

এক্ষেত্রে প্রকৃত হকদার না হলে তাকে ভিক্ষা না দিতে পারেন।
তবে এমতাবস্থায় রুক্ষ ভাষায় ধমক না দিয়ে তাকে উপদেশ দিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...