আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,150 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম, মুফতি সাহেব   আমি মারাত্মক আকারের  ওয়াস ওয়াসা রোগি। যখন থেকে আমি জানতে পারি তালাক শব্দ টা ছাডা তালাকে কেনায়ার এমন কিছু শব্দ আছে যা বল্লে তালাক হয় তখন থেকে আমি খুব সন্দেহে থাকি।     আমার হাজবেন্ড এর সাথে কোন কারনে ঝগড়াহলে সে কোন কিছু না বল্লে ও আমি তাকে সন্দেহ করি তালাকের কেনায়ার কোন শব্দ বলেছে কিনা, আর বার বার সে আমাকে আল্লাহর কছম করে বলে এসব তার চিন্তাতে ও নাই, আমি ছোট খাট ব্যাপারএ ও এরকম সন্দেহ করি। তো আজ তার সাথে আমার ফোনে কথা বলার সময় ঝগড়া হয়, আমি বাজে ব্যবহার করি,  কিন্তু সে কিছুই বলে নি    এবং আল্লাহর কছম করেও বলে। সে কল রেখে দেবার পর আমি ভাবছিলাম, সে আমাকে কি বলতে পার?? এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক, বায়েন তালাক, এটা বলেছে? ঠিক এইভাবে ভাবছিলাম তখন     কিন্তু আমার মুখে কোনকিছু উচ্চারিত হয় নি, জিহবা নডেছিল কিন্তু এ কারনে নাই, কথাটা সম্পুর্নমনে মনে ভেবেছি, আমি জানি মনে মনে তালাক দিলে তালাক হয় না, কিন্তু আমার যে জিহবা নডেছিল এতে কি তালাক হবে, বেখেয়াল ভাবে নডেছে কোন কিছু উচ্চারণএর উদ্দেশ্য নয়, আমার ৩টা প্রশ্ন

১. কোন  স্ত্রী ,  হাজবেন্ড কে এভাবে বল্লে কি তালাক হয়? এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক    বায়েন তালাক
২. বিয়ের সময় স্ত্রীকে কাবিন নামার সময় যদি   তালাকের অধিকার     দিয়ে থাকে তাহলে কি এভাবে বল্লে তালাক হয়ে যাবে?

৩. আর যদি তালাকের অধিকার না দিয়ে থাকে তাহলেকি এভাবে বল্লে তালাক হবে?       
হাজবেন্ডের সাথে কোন বেশি ঝামেলাবা তালাকের আলোচনা হয়নি। উপরের ৩ টা প্রশ্নের বুঝিয়ে উত্তরদেবেন

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তালাক তারই অধিকার যার রয়েছে সহবাস করার অধিকার” অর্থাৎ স্বামীর। 
সুনানে ইবনে মাজাহ (২০৮১)

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

শরহে বিকায়াহ গ্রন্থে আছেঃ-

وفي إختياري لا تصح نية الثلاث. بل تبين ان قالت اخترت نفسي. او أختار نفسي.  .... ولو كرر اختاري ثلاثا فقالت اخترت اختيارة أو اخترت الأولي او الوسطي. أو الأخري يقع ثلاث بلا نية. ولو قالت طلقت نفسي او اخترت نفسي بتطليقة بانت بواحدة. 
সারমর্মঃ-
যদি স্বামী বলে "তুমি নিজেকে গ্রহন করো" তাহলে তিন তালাকের নিয়ত করা শুদ্ধ হবেনা। বরং স্ত্রী এক তালাকের সাথে বায়েনাহ হবে,যদি স্ত্রী প্রতিত্তরে বলে "আমি নিজেকে গ্রহন করেছি বা আমি নিজেকে গ্রহন করছি",,,, 

আর যদি স্বামী "তুমি নিজেকে গ্রহন করো" শব্দটি তিনবার পুনরাবৃত্তি করে,আর স্ত্রী উত্তরে  বলে, "আমি গ্রহন করেছি গ্রহন করার মতো" অথবা বললো আমি প্রথমটি বা মধ্যমটি বা শেষটি গ্রহন করেছি,তাহলে নিয়ত ব্যাতিত তিন তালাক পতিত হবে। 
.
আর যদি বলে যে "আমি আমার নিজেকে তালাক প্রদান করিলাম" 
অথবা বলে যে "আমি আমার নিজেকে এক তালাকের সাথে গ্রহন করিলাম,তাহলে সে এক তালাকে বায়েনাহ হয়ে যাবে।
(শরহে বিকায়াহ. মাকতাতুল ফাতাহ আরবি মতন ২/৮০)

আরো জানুনঃ 

অথবা খোলা করতে পারে।
খোলা হচ্ছে: কোন কিছুর বিনিময়ে স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে স্বামী সে বিনিময়টি গ্রহণ করে স্ত্রীকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে; এ বিনিময়টি স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে প্রদত্ত মোহরানা হোক কিংবা এর চেয়ে বেশি সম্পদ হোক কিংবা এর চেয়ে কম হোক।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
   
 اَلطَّلَاقُ مَرَّتٰنِ۪ فَاِمۡسَاکٌۢ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ تَسۡرِیۡحٌۢ بِاِحۡسَانٍ ؕ وَ لَا یَحِلُّ لَکُمۡ اَنۡ تَاۡخُذُوۡا مِمَّاۤ اٰتَیۡتُمُوۡهُنَّ شَیۡئًا اِلَّاۤ اَنۡ یَّخَافَاۤ اَلَّا یُقِیۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰهِ ؕ فَاِنۡ خِفۡتُمۡ اَلَّا یُقِیۡمَا حُدُوۡدَ اللّٰهِ ۙ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡهِمَا فِیۡمَا افۡتَدَتۡ بِهٖ ؕ تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ فَلَا تَعۡتَدُوۡهَا ۚ وَ مَنۡ یَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰهِ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۲۹﴾

তালাক দু’বার। অতঃপর বিধি মোতাবেক রেখে দেবে কিংবা সুন্দরভাবে ছেড়ে দেবে। আর তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা তাদেরকে যা দিয়েছ, তা থেকে কিছু নিয়ে নেবে। তবে উভয়ে যদি আশঙ্কা করে যে, আল্লাহর সীমারেখায় তারা অবস্থান করতে পারবে না। সুতরাং তোমরা যদি আশঙ্কা কর যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা কায়েম রাখতে পারবে না তাহলে স্ত্রী যা দিয়ে নিজকে মুক্ত করে নেবে তাতে কোন সমস্যা নেই। এটা আল্লাহর সীমারেখা। সুতরাং তোমরা তা লঙ্ঘন করো না। আর যে আল্লাহর সীমারেখাসমূহ লঙ্ঘন করে, বস্তুত তারাই যালিম।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
أَزْهَرُ بْنُ جَمِيلٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ امْرَأَةَ ثَابِتِ بْنِ قَيْسٍ أَتَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ ثَابِتُ بْنُ قَيْسٍ مَا أَعْتِبُ عَلَيْهِ فِي خُلُقٍ وَلاَ دِينٍ وَلٰكِنِّي أَكْرَهُ الْكُفْرَ فِي الإِسْلاَمِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَتَرُدِّينَ عَلَيْهِ حَدِيقَتَه“ قَالَتْ نَعَمْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اقْبَلْ الْحَدِيقَةَ وَطَلِّقْهَا تَطْلِيقَةً قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ لاَ يُتَابَعُ فِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ 

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণিত যে, সাবেত ইবনে কাইসের স্ত্রী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! সাবেত ইবনে কাইসের দ্বীনদারী এবং চরিত্রের উপর আমার কোন অভিযোগ নেই; কিন্তু আমি মুসলিম হয়ে কুফরী করাটা মোটেও পছন্দ করি না। (তাদের উভয়ের সম্পর্কে অমিল ছিল) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি তাকে (স্বামীকে)-মাহর হিসেবে তোমাকে যে বাগান দিয়েছিল-তা ফিরিয়ে দেবে? সে বলল, হ্যাঁ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে বললেন, বাগানটি ফেরত নিয়ে তাকে এক তালাক দিয়ে দাও। [বুখারীঃ ৫২৭৩]
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
তালাক হবেনা।
,
(০২)
তাহলেও তালাক হবেনা।
এক্ষেত্রে তালাক পতিত হওয়ার জন্য স্ত্রীকে লিখিত বা মৌখিকভাবে বলতে হবেঃ
আমি স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে  নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলাম।
,
(০৩)
তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...