আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায,

আমরা জানি যে, টুপি পড়া সুন্নাহ! কিন্তু টুপির মতো সামনে বাড়ানো অংশ থাকে যেটা আমরা ক্যাপ বলে চিনে থাকি। সেই ক্যাপ পড়লে কি কোনো ধরনের গুনাহ হবে? বা মুমিনের আদব নষ্ট হবে?

ইউটিউবে একজন আলেম থেকে শুনেছি, এই ক্যাপের ইতিহাস বা প্রচলন হয়েছিল নামাজ কে অস্বীকার করার জন্য, সিজদাহ্ না দেওয়া জন্য আবিষ্কার হয়, নাউজুবিল্লাহ। এমনটা জানার পর আমার মনে ক্যাপ পড়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ইসলামি শরীয়াহ কি বলে তা জানা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে!

আমার প্রশ্ন হলো,

১. আমি সাধারণত ক্যাপ পড়ি, রোদ, বৃষ্টি, ধুলোবালি থেকে রক্ষা পেতে, এবং চোখের হেফাজতে রক্ষার ক্ষেত্রেও ক্যাপ অনেকটা ভূমিকা পালন করে, এখন কি এই ধরনের ক্যাপ পড়া আমার জন্য গুনাহ হবে?

২. এমন হয়ে থাকলে কেউ যদি ক্যাপের বিজনেস করে, সে কি গুনাগার হবে?

৩. বাহিরে থাকাকালীন টুপি না থাকলে, ক্যাপকে উল্টো করে টুপির মতো পরিধান করে সালাত আদায় করলে কি সালাতের ক্ষতি / আদব নষ্ট হবে?

জাযাকাল্লাহু খইরন।।

1 Answer

0 votes
by (645,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

পূর্বের কিছু ফতোয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,
ইহরাম অবস্থায়ও মহিলাদের চেহারার পর্দা করার বিধান রয়েছে- ইহরাম অবস্থায় চেহারায় কাপড় লাগানো নিষেধ। তবে চেহারা ঢাকা নিষেধ নয়। হযরত আয়েশা রা. থেকে বার্ণিত আছে, তিনি বলেন-

كَانَ الرُّكْبَانُ يَمُرُّونَ بِنَا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُحْرِمَاتٌ، فَإِذَا حَاذَوْا بِنَا سَدَلَتْ إِحْدَانَا جِلْبَابَهَا مِنْ رَأْسِهَا عَلَى وَجْهِهَا فَإِذَا جَاوَزُونَا كَشَفْنَاهُ.

ইহরাম অবস্থায় আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। লোকেরা যখন আমাদের পাশ দিয়ে যেত তখন আমরা আমাদের চাদর মাথায় সামনে ঝুলিয়ে দিতাম। আর চলে যাওয়ার পর তা সরিয়ে ফেলতাম। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৮৩৩)

ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, মহিলারা মাথা ক্যাপ বা এ জাতীয় এমন কিছু বেঁধে নিবে যে,যার উপর দিয়ে মাথা থেকে কাপড় ছেড়ে দিলে উক্ত কাপড় চেহারা কে স্পর্শ না করে নিচের দিকে চলে যাবে।চেহারা বলতে মুখের ঐ অংশ যা অজুতে ধৌত করা হয়ে থাকে।অর্থাৎ কপালের উপরাংশের চুল থেকে নিয়ে থুতনি পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত।(কিতাবুল ফাতাওয়া-৪/৩৭)

আরো জানুনঃ- 

হজ্বের মৌসুমে মহিলাগণের দায়িত্ব হল,যথাসম্ভব পর্দায় থাকা এবং পুরুষদের দায়িত্ব হল,নিজ নিজ চোখের হেফাজত করা। সুতরাং ক্যাপ বা হ্যাট জাতীয় কিছু মাথায় লাগিয়ে চেহারাকে ঢেকে নেওয়াই উত্তম হবে। অবশ্য রাস্তায় চলাচলের সময় অথবা বেশি ভিড়ের মধ্যে প্রয়োজনে চেহারা খোলারও অবকাশ আছে। আর কারো জন্য যদি কোনো কারণে ক্যাপ ব্যবহার করা কষ্টকর হয়ে যায় তাহলে তার জন্য ছাড় গ্রহণের অবকাশ থাকবে ইনশাআল্লাহ। অবশ্য সতর্কতামূলক এজন্য ইস্তিগফার করতে থাকবে। 
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১৪৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৯৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৬)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/3872

ইবনে আবি শাইবা তাঁর “আল-মুসান্নাফ” গ্রন্থে বর্ণনা করেন:

> عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّي وَعَلَى رَأْسِهِ الْقَلَنْسُوَةُ
(مصنف ابن أبي شيبة ٢/٢٨٣)

অনুবাদ: আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) টুপি (قلنسوة) পরে নামাজ আদায় করতেন।

ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন:

كَانَتْ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَلَنْسُوَةٌ بَيْضَاءُ
(صحيح البخاري، كتاب اللباس)

অনুবাদ: নবী (সা.)-এর একটি সাদা টুপি ছিল।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এই ধরনের ক্যাপ পড়া আপনার জন্য গুনাহ হবেনা।

(০২) 
না, সে গুনাহগার হবেনা।

(০৩)
এতে সালাতের ক্ষতি হবেনা।
তবে ক্যাপ না পড়ে টুপি পড়লে সালাতের পূর্ণ আদব রক্ষা হবে।

(তবে এটিকে নিয়মিত বা অভ্যাসে পরিণত করা যাবেনা। কখনো টুপি না পেলে সেক্ষেত্রে এভাবে ক্যাপ দিয়ে মাথা ঢেকে সালাত আদায় করলে কোনো সমস্যা হবেনা।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...