আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
23 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,

১.যদি দেয়ালে ভুল করে খুন্তির বাড়ি লেগে দাগ হয় তবে কি এতে গুণাহ হবে? এতে কি বাড়িওয়ালার হক নষ্ট হবে?যদি হক নষ্ট হয় তবে করণীয় কি?

২.ভুল করে থ্রি-পিস এ খাবার লাগল। কিন্তু তা মুখে দেওয়া হল আর এতে খাবারের কোনো চিহ্ন নেই।এখন থ্রিপিস ব্যাবসা করার সময় ক্রেতাকে কি এব্যাপারে অবহিত করতে হবে?

৩.ইমামের উচ্চারণ এ ভুল হলে মুক্তাদির নামাজে কোনো সমস্যা হবে?

৪.নামাজে দোয়া করা অবস্থায় হাত দিয়ে দান বাক্স এগিয়ে দেওয়া কি জায়েয ?

৫. ৪ নং এর উত্তর যদি নাজায়েজ হয়, তাহলে ধরুন, অন্য কেউ দোয়া করতেছে কিন্তু আমি দোয়া করতেছি না ।আমি তার দিকে দানবাক্স এগিয়ে দিলাম।তা কি জায়েয হবে?

৬. মাহরাম ,নন মাহরাম মহিলাদের সামনে, জনসম্মুখে গেপনাঙ্গ,সতরের অংশ চুলকানো (হাত কাপড়ের ভিতরে দিয়ে বা কাপড়ের উপর থেকে চুলকানো) কি জায়েয?

৭.কোনো ব্যাক্তির মৃত্যুর পূর্বে সে কি বুঝতে পারে যে সে মারা যাচ্ছে?

৮.মাহরাম নারীর সাথে একাকি, নির্জনে অবস্থান করা কি জায়েজ?

৯.আমি মহাখালীতে থাকি। আমার বাসার কাছের মসজিদে মিলাদ হয়ে থাকে মাঝেমধ্যে।যা বিদআত। এছাড়াও টিবির ভিতরে মসজিদ আছে।তাতে বিদআতি কাজ হয় কি না জানি না। তা আমার বাসা থেকে খুব বেশি দূরে না।সম্ভবত ৫ মিনিট এর পথ।এছাড়াও টিএনটির এখানে একটি মাদ্রাসা আছে (সম্ভবত কওমী) যার সাথে মসজিদও আছে। কিন্তু তা আমার বাসা থেকে দূরে।বিদআতি কাজ হয় না এরকম মসজিদ আর আছে কি না জানা নেই।এখন আমার বাসার কাছের মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় করা কি জায়েজ? কারণ সেখানে বিদআতী কাজ হয়।

১০.যে মসজিদের জমি হারাম টাকায় কিনা। কিন্তু মসজিদ প্রতিষ্ঠা হয়েছে হালাল টাকায়। এরকম মসজিদে নামাজ পড়া কি জায়েয?

1 Answer

0 votes
ago by (640,830 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

وَعَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْمُفْلِسُ؟» . قَالُوا: الْمُفْلِسُ فِينَا مَنْ لَا دِرْهَمَ لَهُ وَلَا مَتَاعَ. فَقَالَ: «إِنَّ الْمُفْلِسَ مِنْ أُمَّتِي مَنْ يَأْتِي يَوْم الْقِيَامَة بِصَلَاة وَصِيَام وَزَكَاة وَيَأْتِي وَقَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا. وَأَكَلَ مَالَ هَذَا. وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يَقْضِيَ مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرح فِي النَّار» . رَوَاهُ مُسلم

আবূ হুরায়রা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কি জানো, (প্রকৃত) গরীব কে? সাহাবায়ে কিরাম বললেনঃ আমরা তো মনে করি, আমাদের মধ্যে যার টাকা-পয়সা, ধনদৌলত নেই, সে-ই গরীব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি গরীব হবে, যে ব্যক্তি দুনিয়া থেকে সালাত, সিয়াম ও যাকাত আদায় করে আসবে; কিন্তু সাথে সাথে সেসব লোকেদেরকেও নিয়ে আসবে যে, সে কাউকে গালি দিয়েছে, কারো অপবাদ রটিয়েছে, কারো সম্পদ খেয়েছে, কাউকে হত্যা করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে; এমন ব্যক্তিদেরকে তার নেকীগুলো দিয়ে দেয়া হবে। অতঃপর যখন তার পুণ্য শেষ হয়ে যাবে অথচ পাওনাদারদের পাওনা তখনো বাকি, তখন পাওনাদারদের গুনাহ তথা পাপ তার ওপর ঢেলে দেয়া হবে, আর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

(মুসলিম ৫৯-(২৫৮১), তিরমিযী ২৪১৮, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৮৪৫, সহীহুল জামি‘ ৮৭, সহীহ আত্ তারগীব ২২২৩, শু‘আবুল ঈমান ৩৩, আহমাদ ৮০২৯, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৬৪১৯, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৪১১, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ৫৬১, আল মু‘জামুল আওসাত্ব ২৭৭৮, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১১৮৩৮।)

জাবের (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, কোন জান্নাতবাসী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ তার উপর কোন জাহান্নামবাসীর দাবী অবশিষ্ট থাকবে। আর কোন জাহান্নামবাসীও জাহান্নামে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ তার উপর কোন জান্নাতবাসীর দাবী অবশিষ্ট থাকবে। আমি বললাম, সে দাবী কিভাবে মিটমাট করবে, যেখানে আমরা সকলে উত্থিত হব আল্লাহর সমীপে সহায়-সম্বলহীনভাবে? তিনি বলেন, নেকী ও গোনাহ দ্বারা’ (আহমাদ হা/১৬০৪২; আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৯৭০; ছহীহুত তারগীব হা/৩৬০৮)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে দেয়ালের সিমেন্ট উঠে গেলে বা রঙ্গ উঠে গেলে বাড়িওয়ালার হক নষ্ট হবে।
এমতাবস্থায় বাড়িওয়ালা থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
বাড়িওয়ালা ক্ষমা না করে দিলে সেক্ষেত্রে অল্প কিছু টাকা দিয়ে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিবে।

(০২)
এতে তো সেই থ্রিপিস এর ক্ষতি হবেনা,তা ত্রুটিপূর্ণ হবেনা,সুতরাং ক্রেতাকে তাহা বলা আবশ্যকীয় নয়।

(০৩)
এক্ষেত্রে নামাজ ভেঙ্গে যাওয়ার মত ইমামের ত্রুটিপূর্ণ কেরাত হলে,সেক্ষেত্রে যে মুক্তাদির কেরাত শুদ্ধ, তার জন্য উক্ত ইমামের পিছনে নামাজ বৈধ হবে না,এমতাবস্থায় তার পিছনে নামাজ পড়লে সেই নামাজ পুনরায় আদায় করে নেওয়া আবশ্যক হবে।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(৪-৫)
জায়েজ আছে।
ফরজ নামাজের পর দোয়া এটি নামাজের কোনো অংশ নয়।
সালাম ফিরানো মাত্র নামাজের কার্যক্রম শেষ হয়ে যায়। আর কোন কার্যক্রম অবশিষ্ট থাকে না।

(০৬)
এতে কেউ আকৃষ্ট হলে বা অশ্লীল অঙ্গি ভঙ্গি হলে তাহলে নিঃসন্দেহে এটি নাজায়েজ হবে।

আর কেউ আকৃষ্ট না হলে,অশ্লীল অঙ্গি ভঙ্গি না হলে সে ক্ষেত্রে এটি আত্মমর্যাদা হীনতার কাজ বলে অভিহিত হবে।

তবে যেহেতু সতর খোলা হচ্ছে না, তাই এটি হারাম হবে না।

(০৭)
অনেকেই মৃত্যুর আগ মুহুর্ত কিছুটা হলেও বুঝতে পারে।

(০৮)
ফিতনার আশংকা না থাকলে জায়েজ।

(০৯)
আপনি আপনার বাসার কাছের মসজিদেই জামাতে নামাজ আদায় করবেন।
তবে নামাজে আগে বা পড়ে কোনো বিদ'আতি কাজ হলে তাতে অংশগ্রহণ করবেননা।

(১০)
সে মসজিদে নামাজ পড়া মাকরুহ।

এক্ষেত্রে করনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...