জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো যদি বর বা তার গার্জিয়ানের পক্ষ থেকে এমন শর্ত করা হয় যে কনে বা তার গার্জিয়ানের পক্ষ থেকে হাদিয়া তুহফা বা টাকা-পয়সা ইত্যাদি উপঢৌকন না দিলে, উক্ত কনেকে বিবাহই করবে না, তাহলে শর্ত সাপেক্ষে কনের পক্ষ থেকে উক্ত জিনিসপত্র দেওয়া সুদ হিসেবে হারাম হবে। চাই তা নিজের দিক বা অন্য কারো কাছ থেকে নিয়েই দিক। কেননা বিবাহ বন্ধন হল এমন একটি বেচা-কেনা যেখানে বিনিময়ে কিছু পাওয়া যায় না। যেমন- অন্যান্য বেচা-কেনার টাকার বিনিময়ে কাপড়, ধান ইত্যাদি কোনো বস্তু পাওয়া যায়। তাই বিবাহ নামক বেচা-কেনার মধ্যে শরীয়তের দাবী (যেমন মহর ইত্যাদি) ব্যতীত যে কোনো পক্ষ থেকে টাকা-পয়সা দেওয়া ও নেওয়া ঘুষ হিসাবে হারাম হবে।
হাদীস শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لعنة الله على الراشي والمرتشي
অর্থাৎ ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতা উভয়ের উপর আল্লাহর অভিশাপ। মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৭৭৮, ৬৯৮৪; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৫০৭৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৩১৩
অন্য হাদীসে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
لعن الله الراشي والمرتشي والرائش الذي يمشي بينهما
ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতা ও ঘুষের লেনদেনে মধ্যস্থতাকারী সকলের উপর আল্লাহ অভিশাপ করেছেন।-আলমুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাকীম আবু আবদিল্লাহ ৪/১০৩
আর বিবাহের পূর্বে, মেয়ের পিতা ছেলের অসন্তুষ্টিতে, তার নিকট থেকে দাবীর মাধ্যমে যে টাকা গ্রহণ করে, তাও সুদ। হ্যাঁ ছেলের নিকট দাবী করা ব্যতীত যদি মেয়ের পরিবার সন্তুষ্টচিত্তে যদি দিয়ে থাকে তাহলে সেটা জায়েয হবে।
,
হাদীস শরীফে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্বের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছেন-
ألا ولا يحل لامرئ من مال أخيه شيء إلا بطيب نفس منه
সাবধান! কারো জন্য তার ভাইয়ের কিছুমাত্র সম্পদও বৈধ নয়, যদি তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি না থাকে।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৫৪৮৮; সুনানে দারাকুতনী, হাদীস : ২৮৮৩; শুআবুল ঈমান বায়হাকী, হাদীস : ৫৪৯২
অর্থাৎ কেউ কিছু দিলেই তা ভোগ করা হালাল হয় না, যে পর্যন্ত না খুশি মনে দেয়।
কুরআন মজীদে একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন-
لا تأكلوا اموالكم بينكم بالباطل
তোমরা বাতিল উপায়ে একে অন্যের সম্পদ গ্রাস করো না।-সূরা বাকারা : ১৮৮; সূরা নিসা : ২৯
.
আরো জানুনঃ
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি মেয়ের পিতা কোনোভাবেই কথা না শুনতে চান,বরং নিজেই কাহারো চাপে নয়, সন্তুষ্টি চিত্তে কিছু দিতে চায়,তাহলে তাহা নাজায়েজ নয়।
,
তবে তারপরেও পাত্র যদি সেটি না নিতে চায়,তাহলে এটি প্রশংসনীয়।
আল্লাহ তায়ালা তাকে উত্তম জাযা দিবেন,ইনশাআল্লাহ।