আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
13 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার এক ফ্রেন্ড,, আগে ভালোই ছিল। তারপর আস্তে আস্তে নিজের ফোন লেপটপ থাকায় সহজেই ক্লাস এর ছেলেদের সাথে কথা বলা যায়। স্কুল এর গ্রুপ আসে ছেলে মেয়ের। একটা ছেলে আলাদা ভাবে এটেনশন দেয়।। ওর ও দুর্বলতা তৈরি হচ্ছে যা বুঝলাম। আমি ওর বড়,, তাই আমায় জানায় যে কি করবে। আমি আমার সামান্য বুঝের মধ্য চেষ্টা করেছি। আগে ও নামাজে নিয়মিত ছিল। আমরা এক রোমেই থাকতাম, একসাথে নামাজ পড়তাম প্রায়।এখন  নাই। আমি বলেছি,,, ছেলেটার সাথে কথা এখনই বন্ধ না করলে খারাপ দিকে চলে যাবে। নামাজের জন্য ও কিছু বলেছি,কিন্তু বিশেষ উপকারে আসতে পারি নি ওর। বলেছি ৩ দিন চেষ্টা করো,,,, সব থেকে দুরে থাকতে, নামাজে নিয়মিত হতে।ভেবেছিলাম অল্প দিন বললে ব্রেইন এর কাছে বেশি প্রেশার লাগবে না। আবার ৩ দিন পরে আরো ৩ দিনের কথা বলবো যেহেতু বৃরইন এভাবেই কাজ করে। কিন্তু নামাজে নিয়মিত হলে ছেলের সাথে কথা বন্ধ হয় নি। আর এখন খুজ নিয়ে জানলাম কথা বন্ধ হয়েছে কিন্তু আবার নামাজ ছুটে গেছে।ওর বিশেষ খারাপ লাগাও কাজ করে না নামাজ ছুটায়।ওর ধারনা এরকম হারামে ছেলেরা আল্লাহ থেকে দুরে যায় না,মেয়েরা যায়। ওর সাথের কাউকে দেখছে হয়তো এমন।কিন্ত ওরে আমি বুঝাইতে পারি নি এই ধোকার বিষয়ে। আর আমার মনে হয় আমি যেহেতু ওর বড় আপু তাই বার বার প্রশ্ন করার কারনে বলছে কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।  কিন্তু এর কোমো নিশ্চয়তা নেই।  এখন আমি আমার এই ছোট বোন টা কে সঠিক পথ এ ফিরানোর উছিলা কি করে হবো,মানে আমি এখন কি করতে পারি হুজুর,,????

1 Answer

0 votes
ago by (637,320 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আনাস রাযি. বলেন, রাসুল ﷺ (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন, 

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ 

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল ﷺ উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি ২১৪০ তাকদির অধ্যায়)

★সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করবেন।

রাসূলুল্লাহ্ ﷺ দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَن زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا

হে আল্লাহ আমাকে তাকওয়ার তওফীক দান করুন এবং নাফসকে পবিত্র করুন, আপনিই তো উত্তম পবিত্রকারী। আর আপনিই আমার নাফসের মুরুব্বী ও পৃষ্ঠপোষক। (মুসলিম ২৭২২)
সুতরাং আপনিও দোয়াটি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

নেককারদের সোহবত গ্রহণ করুন। তাদের সাথে বেশি উঠাবসা করুন।
পুরুষ হলে তাদের  মজলিসে আসা যাওয়া করুন।
দাওয়াত তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হতে পারেন 

এতে নফস নিয়ন্ত্রণ করা এবং তাওবার উপর অটল থাকা আপনার জন্য সহজ হবে। 

 আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

অধিকহারে ইস্তেগফার করুন। প্রয়োজনে এর জন্য প্রত্যেক নামাজের পর একটা নিয়ম করে নিন। যেমন, প্রত্যেক নামাজের পর ৫০/১০০/২০০ বার أسْتَغْفِرُ اللهَ   অথবা أسْتَغْفِرُ اللهَ وَأتُوبُ إلَيهِ অথবা  اللَّهُمَّ اغْفِرْ لي পড়ার নিয়ম করে নিতে পারেন। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার ফ্রেন্ডকে উপরোক্ত আমলের কথা বলবেন।
তিনি পুরুষ হলে তাকে হক্কানী শায়েখের কাছে যাওয়া অথবা দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হওয়ার কথা বলবেন।

মেয়ে হলে সেক্ষেত্রে মাহরামের সাথে মাস্তুরাত জামাতে যাওয়ার পরামর্শ দিবেন।

নেককার লোকদের সাথে চলার কথা বলবেন,হক্কানী শায়েখদের নামাজ না পড়ার শাস্তি, জাহান্নামের শাস্তি সম্বলিত ওয়াজ শুনতে বলনেন,ও এ সংক্রান্ত গ্রন্থাবলী পড়তে বলবেন।

★নামাজে নিয়মিত হওয়ার উপায় জেনে তাকে সেই উপায় গুলো জানাবেন,তার উপর আমল করতে বলবেন।

নামাজে নিয়মিত হওয়ার উপায়ঃ-
বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চললেই নামাজে নিয়মিত হওয়া যায়। 

১. নামাজকে হৃদয় দিয়ে উপলব্দি করা।
নামাজে যা পাঠ করা হয় তার অর্থ জানা। 

২. নামাজের সময় কোনো কাজ না রাখাপ্রতিটি দিন শুরু করার আগে ওই দিনের জন্য একটি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা জরুরি। তাতে খেয়াল রাখতে হবে, নামাজের সময়গুলোতে যেনো কোনো কাজ না থাকে। স্কুল-কলেজে, অফিসে অথবা মার্কেটে কিংবা পরিবার পরিজনের সঙ্গে কোথাও বেড়াতে গেলে, সবক্ষেত্রেই নামাজের জন্য আগে থেকেই আলাদা করে সময় নির্ধারণ করে রাখতে হবে।

৩. নামাজের জন্য প্রস্তুত থাকাযে বা যারা যে কোনো কাজে বাহির হলে সঙ্গে নামাজের প্রস্তুতি ও নামাজের অনুসঙ্গ জিনিসের ব্যবস্থা রাখা। জায়নামাজ, হিজাব এবং নামাজের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে যেতে হবে, যাতে করে এগুলোর কোনো একটি না থাকাটা নামাজ বাদ দেওয়ার কারণ/অজুহাত না হতে পারে। নামাজ আদায়ের জন্য সবসময় শরীর পবিত্র রাখতে হবে।

৪. নামাজের জন্য অ্যালার্মের ব্যবস্থা রাখাপ্রযুক্তির এই যুগে এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে, যাতে স্থানীয় সময়ে নামাজের সময় দেখা যায় এবং নামাজের সময় হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যালার্ম বা সংকেত শুরু হয়ে যাবে। এ ধরনের অ্যাপও সময়মত নামাজ আদায় করার জন্য বেশ কার্যকর।কেউ এ রকম কোনো অ্যাপ খুঁজে না পেলেও নিজের কাছে থাকা মোবাইল ফোনে নামাজের সময়গুলোতে অ্যালার্ম সেট করে রাখতে পারেন, এতে করে সবার ব্যবহৃত ফোনটি সময়মত নামাজ পড়ার জন্য সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে।

৫. প্রতিদিন সতর্ক হওয়ানামাজের জন্য একটি চেকলিস্ট তৈরি করা। প্রতিদিন শেষে নিজেই নিজের নামাজের হিসাব নেওয়া। এতে যে ওয়াক্তগুলোর নামাজ আদায় হয়েছে তাতে টিক দেওয়া। আর যে ত্রুটিগুলো হয়েছে, সেগুলো পরবর্তী দিন যেন না হয় এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া। এতে করে একটা সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়মিত হওয়া একেবারেই সহজ হয়ে যাবে।

৬. আল্লাহর কাছে দোয়া করা। যেনো আল্লাহ তাআলা নামাজকে সবার জন্য দৈনন্দিন কাজের অংশ বানিয়ে দেন। নিয়মিত নামাজ আদায়ের জন্য কোনো রুটিন বানালে যেনো সেই রুটিন যথাযথভাবে অনুসরণ করা যায় সে তাওফিক দান করেন। এ জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে।

মনে রাখতে হবেপরিবার, বন্ধু-বান্ধবসহ যতো আপনজন আছে, সবার চেয়ে বেশি আপনজন মহান আল্লাহ। নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমেই এ স্মরণে নিয়মিত হতে হবে।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।

★অবৈধ প্রেম থেকে বাঁচার উপায় জেনে তাকে নিয়মিত বুঝাবেন।

অবৈধ প্রেম,ভালোবাসা থেকে বাঁচার উপায় জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 117 views
...