আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।

আমার বাচ্চা কারণে/অকারণে অনেক কান্না করে।মানে যতক্ষণ জেগে থাকে ততক্ষণই কান্না করে। সারাক্ষণ কোলেই রাখতে হয়।জিকির নিয়মিত করি এবং বাচ্চার জন্য হিফাজতের আমল ও করা হয়।  ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ ও খাওয়ানো হয়।এখন এমতাবস্থায় বিশেষ কোনো দুয়া বা আমল আছে কি?

1 Answer

0 votes
by (645,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
বাচ্চা সব সময় কান্না করলে সেটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত, কারণ এটি কোনো শারীরিক অস্বস্তি, অসুখ,অথবা মানসিক অস্থিরতার ইঙ্গিত হতে পারে। তবে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকেও কিছু আমল ও দোয়া রয়েছে যেগুলো করা যায়, যাতে বাচ্চা শান্ত হয় এবং আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়।

বাচ্চার কান্না যদি নিয়মিত হয় এবং কোনো শারীরিক সমস্যা না পাওয়া যায়, তাহলে নিচের আমলগুলো করতে পারেন:

★আয়াতুল কুরসি:
বাচ্চার গায়ে ফুঁ দিয়ে পড়া যেতে পারে দিনে কয়েকবার।

 اللّهُ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ... (সূরা বাকারা, আয়াত ২৫৫)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. থেকে বর্ণিত, তাঁর একটি খেজুর শুকানোর জায়গা ছিল। তাতে খেজুর হ্রাস পেত। এক রাতে তিনি পাহারায় রইলেন। হঠাৎ তিনি কিশোরের মতো এক প্রাণী দেখতে পেলেন। সে তাকে সালাম দিল। তিনি সালামের জবাব দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কোন্ জাতির? জিন না মানব? সে বলল, জিন। তিনি বললেন, তোমার হাত দাও তো দেখি। সে হাত বাড়িয়ে দিল। দেখা গেল তার হাত ও পশম কুকুরের হাত ও পশমের মতো। সে বলল, এটা জিনের গঠন। সে আরো বলল, জিনেরা জানে, তাদের মধ্যে আমার চেয়ে শক্তিশালী আর কোনো পুরুষ নেই। তিনি বললেন, কী উদ্দেশ্যে এসেছ? সে বলল, আমি জানতে পেরেছি, আপনি সাদাকা করতে পছন্দ করেন। তাই আপনার খাদ্যবস্তু (খেজুর) থেকে নিতে এসেছি। তিনি বললেন, তোমাদের (অনিষ্ট) থেকে আত্মরক্ষার উপায় কী? সে বলল, সূরা বাকারার এই আয়াতটি

اَللهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ  اَلْحَیُّ الْقَیُّوْمُ...

যে তা সন্ধ্যায় পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত আমাদের (অনিষ্ট) থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকবে। আর যে সকালে পড়বে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের (অনিষ্ট) থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকবে। সকালে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বিষয়টি জানালেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, খবীস সত্য বলেছে। সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৭৮৪; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২০৬৪

★সূরা ফালাক ও নাস:
প্রতিদিন সকালে ও রাতে সূরা ফালাক ও নাস ৩ বার করে পড়ে বাচ্চার গায়ে ফুঁ দিন।

★নিম্নোক্ত দোয়া নিয়মিত পাঠ করে বাচ্চার গায়ে ফুঁ দিন অথবা দোয়াটি কোথাও লিখে তাহা তাবিজের মধ্যে তুলে সেই তাবিজ বাচ্চার গলায় লটকিয়ে দিতে পারেন।

দোয়াটি হলোঃ-
 أُعِيذُكَ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ

অর্থ: "আমি তোমাকে আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীর মাধ্যমে রক্ষা প্রার্থনা করছি, প্রত্যেক শয়তান, বিষধর প্রাণী ও কুদৃষ্টি থেকে।"

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُعَلِّمُهُمْ مِنَ الْفَزَعِ كَلِمَاتٍ: «أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ» وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ يُعَلِّمُهُنَّ مَنْ عَقَلَ مِنْ بَنِيهِ، وَمَنْ لَمْ يَعْقِلْ كَتَبَهُ فَأَعْلَقَهُ عَلَيْهِ

আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা ও তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে,রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন,তোমাদের কেউ যখন ঘুম অবস্থায় ঘাবড়িয়ে উঠে,সে যেন  أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ দো’আটি পাঠ করে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর তাঁর উপযুক্ত সন্তানদের তা শিক্ষা দিতেন এবং ছোটদের গলায় তা লিখে লটকিয়ে দিতেন।{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৮৯৫}

আরো জানুনঃ- 

★বাচ্চার পেট ভরা আছে কি না, তা দেখুন।
ক্ষুধা লাগলে তাকে পর্যাপ্ত পরিমান খেতে দিন।
লক্ষ্য করুন গ্যাস বা কোষ্ঠকাঠিন্য আছে কি না।
কান বা গলা ব্যথা, শরীরের জ্বর ইত্যাদি লক্ষণ আছে কি না।
ঘুম ঠিকমতো হচ্ছে কি না।

★যদি কান্না অনিয়ন্ত্রিত হয় বা কোনো শারীরিক সমস্যা দেখা যায়, অবশ্যই বিজ্ঞ শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...