আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (32 points)
একজন বাড়ির বউ আমি,,আমার স্বামীর পরিবারে থাকি। আমাদের পরিবারে সদস্যসংখ্যা চারজন এবং একসাথে মিলে-মিশে থাকার চেষ্টা করি। আমি নিজেও সবসময় চেষ্টা করি ভালো ব্যবহার করতে, সবার সাথে সম্মান বজায় রেখে চলতে। কিন্তু আমার শাশুড়ির আচরণ নিয়ে অনেকদিন ধরে মানসিকভাবে ভুগছি, পরামর্শের আশায় এই প্রশ্ন করছি।

আমার শাশুড়ি অনেকটা সংকীর্ণ মনের। উনি খুব কমই কাউকে কিছু দিতে চান। পরিবারের জন্য যদি ফলমূল বা অন্যান্য খাবার আনা হয়, সেগুলো সব উনি নিজের কাছে রেখে দেন। আমি লক্ষ্য করেছি, উনি যদি ২০টা আম পান, তার মধ্যে ১৫-১৬টা নিজে খেয়ে ফেলেন, বাকি ২-৩টা হয়তো কোনো রকমে পরিবারের অন্যদের দেন। কিন্তু সবচেয়ে কম দেন আমাকে—শুধু পুত্রবধূ হওয়ার কারণে। অনেক সময় আমি কিছু চাইতেও পারি না, কারণ উনি মন থেকে কখনো দিতে চান না। মনে হয় যেন আমি এই পরিবারের কেউ না, বরং বাইরের একজন। আমার স্বামী বা আমার শশুর আমাকে ভালবেসে যদি ভালো জিনিসটা দিতে চান বা ভালো খাবারটা দিতে চান এটাতে আমার শাশুড়ি মন খারাপ করেন । যদি আমার শাশুড়ি কোন জিনিস চারজনের মধ্যে ভাগ করবেন সবচেয়ে খারাপটা আমাকে দিবেন ।

এই ধরনের অবস্থা প্রায়ই হয়। এমনকি খাওয়ার সময়েও আমি বুঝে শুনে খুব কম নিই, যেন কেউ কিছু বলে না। কিন্তু মাঝে মাঝে খুব ক্ষুধার্ত থাকলেও নিজের ঘর থেকে কিছু না নিয়ে খেতে পারি না, শুধু অনুমতির জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হয়। এতে মানসিক কষ্টও হয়, অপমানবোধও হয়। এখন একই পরিবারের থাকি বেশিরভাগ জিনিস আমার শাশুড়ির অধীনে থাকে, তাহলে এখানে আমি যদি তার অনুমতি ছাড়া খাবার নেই বা কোন জিনিস নেই আমার প্রয়োজন তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?
আমি জানি যে কোনো খাবার বা ফলমূল পুরো পরিবারের জন্যই আনা হয়েছে, তাহলে আমি কি শাশুড়ির অনুমতি ছাড়া ৪-৫টা আম খেতে পারব? ইসলাম কি আমাকে এটা করতে অনুমতি দেয়, নাকি এটা গুনাহের মধ্যে পড়ে যাবে? বাসার একটা কাজ থেকে আমপারা হয়েছে পুরোটাই আমার শাশুড়ি রেখে দিয়েছে সেখান থেকে কি আমি নিতে পারবো? উনি নিজ ইচ্ছায় আমাকে কখনো দেবে না। সম্ভব হলে একটাও‌‌ খেতে দেবে না।
আমি আল্লাহর সামনে গুনাহগার হতে চাই না। আমি কারো হক নষ্ট করতে চাই না। শুধু জানতে চাই, আমার নিজের সীমা কতটুকু? একজন পুত্রবধূ হিসেবে আমার কি কোনো অধিকার নেই এসব সাধারণ পারিবারিক বিষয়ে?

আপনার কুরআন-সুন্নাহর আলোকে দিকনির্দেশনা পেলে আমি খুব উপকৃত হব।

আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।

1 Answer

0 votes
by (662,340 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
স্ত্রীর ভরণপোষণ স্বামীর উপর ওয়াজিব। স্ত্রী তার স্বামীর মাল থেকে ওয়াজিব হক্ব পরিমাণ সম্পদ গ্রহণ করতে পারবে।অর্থাৎ স্বামীর উপর স্ত্রীর খোরাকি এবং নিজ সন্তানাদির খোরাকি পরিমাণ শরীয়ত কর্তৃক যা ওয়াজিব ছিলো, সেটাকে স্ত্রী গ্রহণ করতে পারবে।
 ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ : ﺃﻥ ﻫﻨﺪ ﺑﻨﺖ ﻋﺘﺒﺔ ﻗﺎﻟﺖ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ، ﺇﻥ ﺃﺑﺎ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﺭﺟﻞ ﺷﺤﻴﺢ ﻭﻟﻴﺲ ﻳﻌﻄﻴﻨﻲ ﻣﺎ ﻳﻜﻔﻴﻨﻲ ﻭﻭﻟﺪﻱ ﺇﻻ ﻣﺎ ﺃﺧﺬﺕ ﻣﻨﻪ ﻭﻫﻮ ﻻ ﻳﻌﻠﻢ، ﻓﻘﺎﻝ : ﺧﺬﻱ ﻣﺎ ﻳﻜﻔﻴﻚ ﻭﻭﻟﺪﻙ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ .
"হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত,হিনদ বিনতে উতবা রাঃ নবী কারীম সাঃ এর কাছে (নিজ স্বামীর অভিযোগ নিয়ে এসে) বললেনঃহে রাসুলুল্লাহ সাঃ আবু সুফিয়ান একজন কৃপন মানুষ, সে আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভরণ-পোষণ দেয় না,যদ্দরুন তার অজান্তে তার মাল থেকে আমি খরছ করে ফেলি, (এ বিষয়ে শরীয়তের দিকনির্দেশনা আমাদেরকে বলুন)রাসুলুল্লাহ সাঃ বললেনঃ ন্যায়সঙ্গত ভাবে তোমার ও তোমার সন্তানদের যা প্রয়োজন তা (তার অজান্তে)নিয়ে নিতে পারো(এতে কোনো অসুবিধা হবে না)।" (সহীহ বুখারীঃ৫৩৬৪)আরও বর্ণিত আছে৫৭৮৬ নং হাদীসে। 

স্বামীর উপর স্ত্রী ও নাবালিগ সন্তানদের ভরণ-পোষণ ওয়াজিব,এই ওয়াজিব হক্ব আদায় না করা দরুণ রাসুলুল্লাহ সাঃ স্বামীর অজান্তে স্বামীর মাল থেকে স্ত্রীকে উসূলের অনুমতি দিয়েছেন।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বামী-স্ত্রী পরস্পর মৌখিক সম্মতি বা মৌন সম্মতি ব্যতীত একে অন্যর সম্পত্তিতে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1111

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনি শাশুড়ির সাথে সদাসর্বদা উত্তম ব্যবহার করবেন। এবং স্বামীর মাল থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রহণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কারো অনুমতির কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। আপনার স্বামীকে নিম্নোক্ত লিংকটি পড়তে দিবেন।https://www.ifatwa.info/430


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...