আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
14 views
in পবিত্রতা (Purity) by (42 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম হুজুর। 
 

১)  নাবালেগ থাকাকালীন পাক পবিত্রতা নিয়ে উদাসীন ও অজ্ঞ  ছিলাম। দাড়িয়ে পেশাব করা, পেশাব করে পানি না নেওয়া, পানি ব্যবহার করলেও খুব মাঝেমধ্যে করা, অনেক সময় পায়ে হয়তো পেশাবের ছিটা পড়েছে । আমার কারণে হয়তো তখন অনেক বস্তু নাপাক হয়েছিল। যেমন দাড়িয়ে পেশাব করলে ছিটা গিয়ে বদনা বা কলে হয়তো লেগেছিল তখন। যদিও ছোটবেলায় যে বাসায় ছিলাম তা ভেঙে ফেলা হয়েছিল।   এখন কোন বস্তুতে কতটুকু নাপাক তখন লেগেছিল এবং পরবর্তীতে তা কতটুকু পাক  হয়েছে তা জানা নাই। 


২) আমি বালেগ হওয়ার পরও প্রথম কয়েকবছর পবিত্রতা নিয়ে বেশ উদাসীন ছিলাম এবং অনেক ক্ষেত্রে অজ্ঞ ছিলাম। আমি ঢিলার ব্যাপারে জানতাম না তখন। তবে পরবর্তীতে এ ব্যাপারে জানতে পারি এবং একসময় বুঝতে পারি যে আমি পেশাব করার পর এক দুই ফুটার মত হালকা পেশাব বের হয়, তবে তা গড়িয়ে পড়ে না লেগে থাকে। এটা টিস্যু ব্যবহারের পর জানতে পারি। আগে পানি ব্যবহার করতাম। এমন না যে আমি সব জায়গায় পানি ব্যবহার করতাম। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যেত আমি দাঁড়িয়ে পেশাব করছি পেশাব আমার কাপড়ে, জুতায় লাগছে। এটা বেশি হতো বাইরে গেলে বা বাইরে থেকে এসে বাথরুমে গেলে। এছাড়া নাপাক কাপড়গুলো বুয়াকে দিয়ে ধুয়াতাম। বুয়া সকল পাক নাপাক কাপড় একসাথে ধুত। এখন এত বছর আগে কিভাবে ধুত তা মনে নেই। আর বুয়া অনেকবার পরিবর্তন হয়েছে। স্বপ্নদোষ হলেও বিছানার বিভিন্ন জায়গা পরিষ্কার করতাম না শুধু হয়তো কুলবালিশের কাভার ধুতে দিতাম আর প্যান্ট। মযি কাপড়ে লাগলেও তা পবিত্র করতাম না এভাবেই পড়তাম। ঘরে একবার পেশাবও করেছিলাম বা বীর্য পড়েছিল, মনে নাই। সেটা তখন পানি দিয়ে পরিষ্কার করা হয় নাই। শুধু কাগজ দিয়ে পরিষ্কার করেছিলাম। আশেপাশে কোন আসবাবপত্রে লেগেছিল নাকি তাও মনে নাই। এটা অনেক বছর আগের ঘটনা। 


আমার পাক নাপাকি নিয়ে অজ্ঞতা ও উদাসীনতার বিষয় ছিল অনেকটা এমনই। এখন আমার মনে হয় আমার কারণে ঘরের আসবাবপত্রসহ অনেক কিছু হয়তো নাপাক হয়েছে। এখন কোন আসবাবপত্রের কতটুকু অংশ নাপাক হয়েছে তা আমার জানা নেই। আবার যে অংশগুলো নাপাক হয়েছিল তা কি পরবর্তীতে পাক হয়েছিল নাকি তাও জানিনা। এগুলোর মধ্যে এমন অনেক বিষয় আছে যা দৈনন্দিন জীবনে অনেক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আমার নিজস্ব কিছু সামগ্রী আছে যা আমি পাক করেছি। আর বাকি আসবাবপত্রকে আমার নাপাক লাগে। 

প্রশ্নঃ বর্তমানে আমার জীবন কঠিন হয়ে গিয়েছে এজন্য। এক্ষেত্রে কি করলে আমার জীবন সহজ হয়ে উঠবে?  এবং পাক পবিত্রতা  নিয়ে আমার চিন্তাগুলো দূর হবে?  আমি এক স্বাভাবিক জীবন ধারণ করতে চাই।

(বিঃদ্রঃ আমি আগে এহেন সমস্যায় ছিলাম না। কিন্তু পাক পবিত্রতার মাসআলা জানার পর থেকে এমনটা হচ্ছে। পূর্বে পাক পবিত্রতা নিয়ে অজ্ঞতাও ছিল। কোনো বস্তু নাপাক নাকি পাক তা জানার জন্য তার ঘ্রাণ শুকতে চেষ্টা করি। কিন্তু প্রায় সময় আমি ঔ বস্তুর নিজস্ব ঘ্রাণ পাই। নাপাকের আলাদা ঘ্রাণ পাই না।) 


জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (632,940 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো পাক জিনিসকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।
যাহা নিম্নোক্ত হাদীস থেকে প্রমানিত হয়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح : 

‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا) (যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,

اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ
ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ} 

ভাবার্থঃতৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন(দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না।[তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না।অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]
মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।
হাদীসটি এই, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয়।এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়,যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে।(আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)............ এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/293

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার প্রতি পরামর্শ, 
আপনি প্রত্যেহ পরিধানের জামা পুরোপুরি ভাবে পাক রাখবেন।

বিছানা ৩ বার ধুয়ে দিতে পারেন।
গেঞ্জি বা অন্য কোনো কাপড় পরিধান করে বিছানায় ঘুমাবেন।

ইস্তিঞ্জা খানা হতে রুম পর্যন্ত মাঝের ফ্লোর তিনবার করে মুছে দিবেন, আপনি জায়নামাজ ছাড়া নিজ বাসায় নামাজ পড়বেন না, বাসায় যেখানেই নামাজ পড়বেন জায়নামাজ বিছিয়ে তার ওপর নামাজ পড়বেন।

নাপাকি নিয়ে আর কোন সমস্যা মনে হলে সেক্ষেত্রে নামাজের জন্য আলাদা কাপড় ব্যবহার করবেন, যা নামাজের আগে পরিধান করবেন আর নামাজের পরই খুলে রাখবেন ইনশাআল্লাহ আর কোন সমস্যা হবে না।

আর নিশ্চিত না হয়ে কোনো বস্তুকে নাপাক মনে করবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...