আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
510 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (39 points)
আসসালামু আলাইকুম।
শায়খ, আমাদের একজন শিক্ষক যিনি আমার থেকে শুরু করে আমার ছোটো 3 ভাই বোন কে এখন পড়াচ্ছেন। উনার সাথে আল্লাহর রহমত এ আমাদের অনেক ভালো সম্পর্ক। প্রায় ১২ বছর এর উপরে হয়ে গেছে উনি আমাদের পারিবারিক শিক্ষক।
১# শায়খ, উনার প্রতি ভালোবাসা দেখানোর জন্য আমি বলেছিলাম যে, একবার উনার জন্মদিন পালন করব।তখন স্যার বললেন যে,এগুলা পালন করা ঠিক না।আমি বলেছিলাম যে, স্যার আপনি আমাদের এতো ভালো একজন শিক্ষক, একবার আপনার জন্মদিন পালন করলে কিছু হবে না।মানে বোঝাতে চেয়েছি গুনাহ হলেও সমস্যা নেই / হবে না গুনাহ আশা করি। তো এটা কি হারাম কে হালাল মনে করা হয়েছে শায়খ?
২# আমি যানি জন্মদিন পালন হারা।। কিন্তু স্যারের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে এটি বলেছিলাম। এতে কি আমার ঈমান থাকবে ন??
৩# আমি ইমান নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম। কিন্তু একটা জায়গা তে স্পষ্ট বুঝিনি। সেটা হলো যে, আমি তো আল্লাহ কে মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। ইচ্ছা করে কখনো শিরকি কথা মনে আনি না। কখনো যদি  শিরকি কথা ইচ্ছা করেই মনে এনে ফেলি এতে কি ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে?
৪# ইচ্ছায় শিরকি কথা মনে আসলে কি ইমান এর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক ও ভেংগে যাবে শায়খ?
একটু দয়াকরে জানাবেন শায়খ।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ


হারাম কে হালাল করা এবং হালাল কে হারাম করা কুফরি।তবে না জেনে করে থাকলে মাফ।কেননা উযর বিল জাহালত ক্ষমাযোগ্য অপরাধ।
ওযর বিল জাহালত গ্রহণযোগ্য। চায় এ'তেকাদি মাসাঈল সম্পর্কিত হোক বা ফেকহী শাখাপ্রশাখাগত মাসাঈল সম্পর্কিত হোক।
যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন,
 ( رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا )
হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না।(সূরা বাকারা-২৮৬)

অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
 (وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُمْ بِهِ وَلَكِنْ مَا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا)
এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(সূরা আহযাব-৫)


রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
إِنَّ اللَّهَ قَدْ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ، وَالنِّسْيَانَ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মতের অজ্ঞতা ও ভূলভাল কে ক্ষমা করে দিবেন।এবং অপারগতা বশত কৃত গোনাহকেও ক্ষমা করে দিবেন।(সুনানে ইবনে মা'জা,-২০৪৩)

এ সমস্ত শরয়ী দলীল প্রমাণ করে যে,ওযর বিল জাহালাত গ্রহণযোগ্য। তথা অজ্ঞতা বশত কেউ কোনো গোনাহর কাজ করে ফেললে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন।

ভূলে শিরকে পতিত হওয়ার পর বনি ইসরাঈলের এক ব্যক্তিকে আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করে দিয়েছিলেন,

হযরত আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " كَانَ رَجُلٌ يُسْرِفُ عَلَى نَفْسِهِ فَلَمَّا حَضَرَهُ المَوْتُ قَالَ لِبَنِيهِ: إِذَا أَنَا مُتُّ فَأَحْرِقُونِي، ثُمَّ اطْحَنُونِي، ثُمَّ ذَرُّونِي فِي الرِّيحِ، فَوَاللَّهِ لَئِنْ قَدَرَ عَلَيَّ رَبِّي لَيُعَذِّبَنِّي عَذَابًا مَا عَذَّبَهُ أَحَدًا، فَلَمَّا مَاتَ فُعِلَ بِهِ ذَلِكَ، فَأَمَرَ اللَّهُ الأَرْضَ فَقَالَ: اجْمَعِي مَا فِيكِ مِنْهُ، فَفَعَلَتْ، فَإِذَا هُوَ قَائِمٌ، فَقَالَ: مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا صَنَعْتَ؟ قَالَ: يَا رَبِّ خَشْيَتُكَ، فَغَفَرَ لَهُ " وَقَالَ غَيْرُهُ: «مَخَافَتُكَ يَا رَبِّ»
তিনি বলেন, পূর্বযুগে এক লোক তার নিজের উপর অনেক জুলুম করেছিল। যখন তার মৃত্যুকাল ঘনিয়ে এলো, সে তার পুত্রদেরকে বলল, মৃত্যুর পর আমার দেহ হাড় গোশতসহ পুড়িয়ে ছাই করে নিও এবং প্রবল বাতাসে উড়িয়ে দিও। আল্লাহর কসম! যদি আল্লাহ্ আমাকে ধরে ফেলেন, তবে তিনি আমাকে এমন কঠিনতম শাস্তি দিবেন যা অন্য কাউকেও দেননি। যখন তার মওত হল, তার সঙ্গে সে ভাবেই করা হল। অতঃপর আল্লাহ্ যমীনকে আদেশ করলেন, তোমার মাঝে ঐ ব্যক্তির যা আছে জমা করে দাও। যমীন তা করে দিল। এ ব্যক্তি তখনই দাঁড়িয়ে গেল। আল্লাহ্ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কিসে তোমাকে এ কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করল? সে বলল, হে, প্রতিপালক তোমার ভয়। অতঃপর তাকে ক্ষমা করা হলো। অন্য রাবী مَخَافَتُكَ  স্থলে خَشْيَتُكَ  বলেছেন।(সহীহ বুখারী-৩৪৮১)(৭৫০৬, মুসলিম ৪৯/৪ হাঃ ২৭৫৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২৩২)
,
আরো জানুনঃ 
,
(১.২)
যদি শরীয়তের অকাট্য ভাবে প্রমানীত কোনো হারামকে হালাল বলা হয়,তাহলে এক্ষেত্রে সে কাফের হয়ে যাবে।
যদি তাহা অকাট্য বিধান দ্বারা হারাম প্রমাণিত না হয়,তাহলে তাহাকে হালাল বলা নাজায়েজ, গোমরাহি।
তবে এতে ঈমান থাকবে।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ঈমান চলে যাবেনা।
তবে আল্লাহর কাছে খালেক দিলে তওবা করতে হবে।
,
(৩.৪)
মনে মনে শিরকি কথা আনা,ভাবার দ্বারা চাই তাহা ইচ্ছা করেই হোক,বা অনিচ্ছায় হোক,এতে কেহ কাফের হবেনা।
বৈবাহিক সম্পর্ক ইত্যাদির ক্ষেত্রেও কোনো সমস্যা হবেনা।  
 
বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...