আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
ago in কুরবানী (Slaughtering) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ উস্তায,

আমার বিয়েতে আমি ১ ভরি+ স্বর্ণ পেয়েছি, শশুর-শাশুড়ি দিয়েছেন আরকি। গতবছর ডিসেম্বরে স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩০ হাজার+ এরকম ছিলো আনুমানিক। এছাড়া আলাদা একটি স্বর্ণের আংটি আমার হাসবেন্ড আকদের দিন দিয়েছিলেন, পরিমাণ এক বা দুই আনা হয়তো। হাতে আরেক জোড়া চুড়ি আছে দাদিশাশুড়ির, এগুলোও নাকি স্বর্ণের, পাতলা করে বানানো, পরিমাণ জানিনা (সত্যি বলতে চুড়িগুলো আসলেই স্বর্ণ কিনা তা শিওর না)। আর আমাকে দুইসেট গয়না দিয়েছিলেন, বিয়েতে সচরাচর যেভাবে ইমিটেশনের জুয়েলার্স এমনি দেয়া হয় শাড়ির সাথে পড়ার জন্য, কিন্তু আমার দুইসেট ইমিটিশন না, এগুলো নাকি রুপার। উপর দিয়ে সোনার পানি দিয়ে কালার করা। এরকমই বললেন শাশুড়ী, আল্লাহ ভালো জানেন। আমি কখনো যাচাই করার প্রয়োজন বোধ করিনি, আসলেই এগুলো রুপা কিনা জানিনা এবং সঠিক পরিমাণটা জানিনা। তবে এটা শিওর আমার কাছে স্বর্ণ আছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার কিছু বেশি পরিমাণ। উল্লেখ্য, আমার হাতে কোনো ক্যাশ টাকা জমানো নেই, ৫০ টাকা আছে মাত্র, আর আমার ঋণ আছে প্রায় বিশ হাজার টাকা।

*(স্বর্ণের সঠিক পরিমাণ জানতে বা কনফিউশান দূর করতে কোনো স্বর্ণের দোকানে গিয়ে আমাকে যাচাই করতে হবে)

১. এক্ষেত্রে আমার উপর কি কুরবানী ওয়াজিব?

২. ঘরের ফার্ণিচার বা পোশাক বা দ্বীনি কিতাবাদী থাকলে এসব কি নেসাবের হিসাবে আসবে? যদি হয়, তাহলে এগুলোর হিসাব কেমন? আমার স্বামীর অনেক বেশি জুব্বা, পাঞ্জাবি এসব আছে, ঘরে দ্বীনি বইপত্র প্রায় লাখ তিনেক টাকার মতো হবে। আমারও কাপড়চোপড় অনেক আছে। এক্ষেত্রে এগুলো কিভাবে হিসাব করবো?

৩. আমার বাবার পৈত্রিক বসতবাড়ি আছে, পৈতৃক জমিজমাও আছে। কিন্তু চাচাদের সাথে ভাগ হয়নি, দাদা মারা গেছেন। জায়গাজমি নিয়া পারিবারিক দ্বন্দ্ব আছে কমবেশি। এককথায় জমি আমার বাবা পাবে কিন্তু এখনো হস্তগত হয়নি। তবে কয়েকমাস আগে কিছু অংশ বিক্রি করেছেন, অর্ধেক টাকা এনে আমার বিয়েসহ আরও বিভিন্ন খাতে ব্যয় করে ফেলেছেন। আরও অর্ধেক টাকা পাননি এখনো। উল্লেখ্য, আমার আব্বুর প্রায় ৫-৭ লাখ টাকা ঋণ আছে, কোনো ইনকাম সোর্স নাই, গরিবি হালতে দিন যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আব্বুর কি কুরবানী দিতে হবে?

৪. আমার যদি কুরবানি ওয়াজিব হয় তাহলে আমার কি করণীয়? স্বর্ণ বিক্রি করে পশু কিনতে হবে? নাকি স্বর্ণ দান করে দিবো? নাকি শশুর শাশুড়িকে স্বর্ণ ফিরিয়ে দিবো? আমার ক্যাশ টাকা নাই, আর আমার পক্ষে ক্যাশ টাকা পাওয়া সম্ভবও না। আর সত্যি বলতে, এই স্বর্ণ আমার হলেও এর উপর আমার পরিপূর্ণ এখতিয়ার আছে কি না জানি না, যেহেতু শশুরবাড়ির দেয়া, সুতরাং জবাবদিহিতার মুখাপেক্ষী হতে হবে হয়তো। দয়া করে আমার অবস্থার আলোকে পরামর্শ দিন উস্তায, মিন ফাদ্বলিক।

1 Answer

0 votes
ago by (659,760 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
কুরবানি দেওয়া ওয়াজিব।কার উপর ওয়াজিব?এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
مِنْهَا الْيَسَارُ وَهُوَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبِ صَدَقَةِ الْفِطْرِ دُونَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبُ الزَّكَاةِ،
এই পরিমাণ ধনবান ব্যক্তির উপর কুরবানি ওয়াজিব,যে পরিমাণ ধনসম্পত্তি থাকার কারণে কারো উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হয়।যাকাত ওয়াজিব হওয়ার নেসাব পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হওয়া শর্ত নয়।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/২৯২,কিতাবুল-ফাতাওয়া-৪/১৩১) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1642

শুধু স্বর্ণ হলে কারো নিকট ৭.৫ ভড়ি স্বর্ণ থাকলেই কেবল কুরবানি ওয়াজিব হবে। যেভাবে যাকাতের বিধান। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/121

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) যদি স্বর্ণের সাথে রূপা থাকে অথবা স্বর্ণের সাথে টাকা থাকে, এবং সব মিলিয়ে আপনার ৫২.৫ ভড়ি রূপা সমপরিমাণ হয়, তাহলে আপনার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে। নতুবা কুরবানি ওয়াজিব হবে না।

(২) ঘরের প্রয়োজন অতিরিক্ত ফার্ণিচার বা পোশাক নেসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে পড়তে ও গবেষণাতে আগ্রহী ব্যক্তির দ্বীনি কিতাবাদী নেসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে না। কারো প্রয়োজন অতিরিক্ত পোষাক বা কাপড় কিংবা ঘরের আসবাবপত্র যদি ৫২.৫ ভড়ি রূপা সমপরিমাণ হয়, তাহলে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে।

جس عالم کا مشغلہ پڑھنے لکھنے کا ہو ان کے پاس جس قدر کتابیں ہوتی ہیں وہ ضرورت کے لیے ہوتی ہیں ضرورت کسی وقت بھی پڑ جاتی ہے، بروقت ہر کتاب نہیں دیکھی جاتی بلکہ ضرورت کے وقت ہی دیکھی جاتی ہے اس لیے انہیں ضرورت سے زائد سمجھنا درست نہیں، وہ قربانی کے نصاب میں شامل نہیں ہوسکتی ہیں۔
جواب نمبر: 130999
دارالافتاء،
دارالعلوم دیوبند

(৩) যেহেতু আপনার বাবার প্রায় ৫-৭ লাখ টাকা ঋণ আছে, কোনো ইনকাম সোর্স নেই, গরিবি হালতে দিন যাচ্ছে। তাছাড়া ঔরসজাত সম্পত্তি দুর্বল ঋণের অন্তর্ভুক্ত, তাই এক্ষেত্রে আপনার আব্বুর উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না।

(১৪) আপনার উপর কুরবানি ওয়াজিব হলে স্বর্ণ বিক্রি করে কুরবানি দিবেন। অথবা স্বর্ণ কাউকে দিয়ে দিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...