আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
35 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর।

আমি আমি, ২০১৬ সালে বালেগা হই। আমি তখনও নেসাব সম্পদের মালিক হয়েছি কিনা জানে না। আর আমি ২০২৫ সালে এসে বুঝি যে আমার উপর ও যাকাত ফরজ,ফিতরা। আমার বাবা হয়তো আগেও আমার নামে এতদিন কুরবানি দিয়েই এসেছে। কেননা প্রতিবছর তাই ই করে।
তো হুজুর আমার কিছু প্রশ্ন আছে।
(১) কত টাকা থাকলে নেসাব পরিমাণ সম্পদ আছে ধরা হবে?

(২) আমার বাবার ব্যাংকে, আমার নামে ১ লক্ষ টাকা আছে। বৃত্তির হয়তো ২০ হাজার টাকা।
আমার গলার চেইনের দাম হয়তো ১ লক্ষ টাকা (বা এর কম হবে)। আর কানের দুল হয়তো ৩০ হাজার (বা এর কম হবে), আর রুপার নুপুর আছে হয়তো ৫ হাজার টাকা বা এর কম। আর আমার জমানো এমনি ১৫ হাজার টাকা আছে।

[আমি এখানে টাকার এমন পরিমাণ ধরেছি যেগুলো বেশি হলেও কম হবেনা ইন শা আল্লাহ।]

এখন আমি কত টাকা যাকাত দিব? প্লিজ জানাবেন। আমাকে পরিমাণ টা বলবেন প্লিজ হিসাব করে।

(৩) সম্পদের যদি ১ বছর পূর্ণ না হয়। তাহলে কি যাকাত আদায় করা লাগেনা?

(৪) এইযে আমার আগের এতবছরের যাকাত আদায় হয়নি,এখন আমার করণীয় কী? আমি ২০১৬ থেকে আদায় করতে চাই।

(৫) ফিতরা আব্বু দিয়ে এসেছে এত বছর । কিন্তু আমার ফিতরা আদায় করব কীভাবে প্লিজ আমাকে জানাবেন আমি ২০১৬ থেকে আদায় করতে চাই। আমি এটা বুঝিনা,আমার ফিতরা হয়তো আদায় করেনি।কী যে আল্লাহ ভালো জানেন,আমি সসব বুঝিনা মাসআলা।

হুজুর আমাকে প্লিজ পরামর্শ দিন,আমি খুবই মানসিকভাবে ভেংগে পড়েছি। আমার এত বছরের যাকাত বাকি। আমি মেয়ে মানুষ, নিজে রোজগার ও করিনা। প্লিজ আমায় পরামর্শ দিন আমি কী করব? আমি আল্লাহর প্রিয় হতে চাই।আমি এসব আখিরাতে গুনাহ নিতে চাইনা

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল। -সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২
আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى أَنْبَأَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ كُلِّ عِشْرِينَ دِينَارًا فَصَاعِدًا نِصْفَ دِينَارٍ وَمِنْ الْأَرْبَعِينَ دِينَارًا دِينَارًا

ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বিশ দিনার বা তার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার (যাকাত) গ্রহণ করতেন।

ইবনে মাজাহ ১৭৯১ ইরওয়াহ ৮১৩।
দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২।

সাড়ে ৫২ ভরি রুপা হলে তার উপর যাকাত ফরজ। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
عن أبي سعيد الْخُدْرِي رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «ليس فيما دون خمس أَوَاقٍ صدقة، ولا فيما دون خمس ذَوْدٍ صدقة، ولا فيما دُونَ خمسة أَوْسُقٍ صدقة».  
[صحيح] - [متفق عليه]

আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পাঁচ উকিয়ার কম রৌপ্যমুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের ওপর যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাক এর কম শষ্যের ওপর যাকাত নেই।”
(বুখারী,মুসলিম)

শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে পূর্ণ  নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
সাড়ে ৫২ ভরি রুপার সমমূল্য উদ্দেশ্য। 
যাহা একেক সময় একেক রকম দাম হয়ে থাকে।

বর্তমান বাজার অনুযায়ী কাহারো কাছে ৯০ হাজার টাকা দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত থাকলে এবং বছর পূর্ণ হলে তার উপর যাকাত ফরজ। 

(০২)
100,000+20,000
+100,000+30,000+5,000
+15,000=270000

270000÷40= 6750

6750 টাকা আপনাকে যাকাত হিসেবে দিতে হবে 

(০৩)
নেসাব পরিমাণ সম্পদ হওয়ার পর যদি এক বছর পূর্ণ না হয়, সেক্ষেত্রে যাকাত ফরজ হবে না।

তবে নেসাব পরিমাণ সম্পদ হওয়ার পর যেদিন এক বছর পূর্ণ হবে তার আগ দিয়ে যদি তার আরো কিছু টাকা তার মালিকানায় যুক্ত হয়, তো এসব যুক্ত হওয়া টাকার বছর পূর্ণ হওয়া আবশ্যক নয়।

এক্ষেত্রে সমস্ত টাকার একত্রে যাকাত আদায় করতে হবে।

(০৪)
আপনি ২০১৬ তে যে পরিমাণ টাকার মালিক হয়েছিলেন, তার চল্লিশ ভাগের একভাগ যাকাত আদায় করবেন।

এভাবে হিসাব করে ২০১৭ সালে আপনি যে পরিমাণ টাকার মালিক হয়েছিলেন, তার 40 ভাগের একভাগ যাকাত আদায় করবেন।

এভাবে প্রতিবছরের হিসাব করে সে বছরে আপনার মালিকানা যত টাকা ছিল তার 40 ভাগের এক ভাগ করে যাকাত আপনি আদায় করে দিবেন।

(০৫)
যেহেতু আপনার সদকায়ে ফিতর আপনার বাবা আদায় করেছে,সুতরাং আপনার সদকায়ে ফিতর আদায় হয়ে গিয়েছে। 

পুনরায় আদায় করা আবশ্যক নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...