আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
530 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (65 points)
আসসালামু আলাইকুম।

ফেসবুকে একটা পোস্টে কিছু জানতে পারলাম। এগুলো শির্ক কিনা জানতে চাই-

1.শরিরে যে কোন প্রকার তাবিজ ঝুলানো শিরক।
__(মুসনাদে আহমদ: ১৭৪৫৮, সহিহ হাদিস:৪৯২)

2.কোন বিপদে পড়ে আল্লাহকে বাদ দিয়ে "ও মা, ও বাবা" ইত্যাদি বলে এইরকম গায়েবি ডাকা শিরক।
বিপদে পড়লে "ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন" বলতে হয়।
__(সুরা বাকারাহঃ ১৫৬)


3.তোর ভবিষ্যত অন্ধকার', 'তর কপালে বহুত কষ্ট আছে',এই ধরনের গায়েবি কথা কাউকে বলা শিরক।
__(সুরা নমল:৬৫, আল জিন:২৫-২৬, আনাম:৫৯)

4.যে কোন জড় বস্তুকে সম্মান দেখানো তথা তাযীম করা বা তার সামনে নিরবতা পালন করা শিরক
যেমন: পতাকা, স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার কিংবা মাজার ইত্যাদি।
__(সুরা বাকারাহ:২৩৮, আহকাফ:৫, ফাতহুল বারি ৭/৪৪৮, আবু দাউদ:৪০৩৩)

5.পায়রা/ কবুতর উড়িয়ে শান্তি কামনা করা শিরক,
কারণ শান্তিদাতা একমাত্র আল্লাহ্
__(সুরা হাশরঃ ২৩)

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার বর্ণিত সবগুলো কথাই বিশুদ্ধ। এগুলো শিরকি আকিদা। যদি কারো এমন আকিদা পোক্ত থাকে,তাহলে তার ঈমান চলে যাবে। তবে যদি কেউ অজ্ঞতাবশত এমন কথা বলে ফেলে তাহলে তার ঈমান যদিও চলে যাবেনা তথাপি এ কথাগুলোর কারনে তার গোনাহ হবে।

কোনো গুনাহগার মুসলমানকে কি কাফের বলা যাবে? প্রতি উত্তরে বলা যায় যে,
কোন গোনাহগার মুসলমানকে কাফের বলা যাবে না।কাফির জায়েজ হবে না। বরং যে কোনো মুসলমানকে কাফির বলবে তার মারাত্মক ধরণের গুনাহ হবে।অযথা কাউকে তাকফির করা নাজায়েয ও হারাম। কুরআন ও হাদীসে এ ব্যাপারে কড়া ধমকী এসেছে।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَىٰ إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا تَبْتَغُونَ عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَعِنْدَ اللَّهِ مَغَانِمُ كَثِيرَةٌ ۚ كَذَٰلِكَ كُنْتُمْ مِنْ قَبْلُ فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْكُمْ فَتَبَيَّنُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর,তখন যাচাই করে নিও এবং যে,তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর,বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন। {সূরা নিসা-৯৪}

হাদীসে রাসূল সাঃ যে ব্যক্তি কাফের না তাকে কাফের বললে, সেই কুফরী তার দিকে প্রত্যাবর্তন করে মর্মে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন-
عن أبي ذر رضي الله عنه أنه سمع النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( لا يرمي رجل رجلا بالفسوق ولا يرميه بالكفر إلا ارتدت عليه إن لم يكن صاحبه كذلك
হযরত আবু জর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসুল সাঃ বলেছেন যে, তোমাদের কেউ যদি কাউকে ফাসেক বলে, কিংবা কাফের বলে অথচ লোকটি এমন নয়,তাহলে তা যিনি বলেছেন তার দিকে ফিরে আসবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৯৮}

কত মারাত্মক হুশিয়ারী, তাই কাউকে কাফের, মুশরিক, নাস্তিক বলার ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

কাউকে কাফের বলার ক্ষেত্রে সতঃসিদ্ধ নিয়ম সম্পর্কে  আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহঃ শরহে ফিক্বহুল আকবারে বলেন-
ان المسئلة المتعلقة بالكفر اذا كان له تسع وتسعون احتمالا للكفر واحتمال واحد فى نفيه فالاولى للمفتى والقاضى ان يعمل بالاحتمال النافى، لان الخطا فى ابقاء الف كافر اهون من الخطاء فى افناء مسلم واحد،
কুফরী সম্পর্কিত বিষয়ে, যখন কোন বিষয়ে ৯৯ ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরীর, আর এক ভাগ সম্ভাবনা থাকে, কুফরী না হওয়ার। তাহলে মুফতী ও বিচারকের জন্য উচিত হল কুফরী না হওয়ার উপর আমল করা।কেননা ভুলের কারণে এক হাজার কাফের বেচে থাকার চেয়ে ভুলে একজন মুসলমান ধ্বংস হওয়া জঘন্য। {শরহু ফিক্বহুল আকবার-১৯৯}

সুতরাং কারো কোন কাজে সন্দেহ হলেই বা সামান্যতম গুনাহের কাজ করলেই তাকে কাফের, মুরতাদ, নাস্তিক ইত্যাদি বলে প্রচার করা জায়েজ নয়। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।(সংগৃহিত)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...