আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমরা 2 ভাই 2 বোন।
বাবা সরকারী চাকরি জীবী ছিল। অবসরের আগেই মারা গিয়েছেন।পেনশনের প্রায় ৩০-৪০ লাখ টাকা পেয়েছিল আম্মু তা দিয়ে 3 তালা ফাউন্ডেশন দিয়ে একতালা কম্প্লিট করেছে। এর থেকে ভাড়া পায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। জমি আব্বু বেচে থাকতে কিনেছিল। আমাদের মোট ১৪ শতাংশ জমি। এর মধ্যে 7 শতাংের উপর ই ফাউন্ডেশন দেয়া বাড়ি যেটার কথা উপরে লিখলাম। আর এই জমির একদম পাশেই(এক দাগের জমি) 3 শতাংশ জমি 2 রুম টিন্সেট ওয়ালা ভাড়া দেয়া। এই 3 শতাংশ টা আম্মুর নামে কেনা আগের ই।
আর বাকি 4 শতাংশ জমিতে আমরা ছোট থেকেই বড় হয়েছি।টিনশেট ঘর করা টোটাল 6 রুম বারান্দা এইভাবে।বর্তমানে আম্মু ও  2ভাই,  ভাবি থাকেন। আমাদের বোন দের বিয়ে হয়ছে আলহামদুলিল্লাহ।
ভাইরা ওদের বিয়ের পর থেকে ( বাবা যেহেতু মারা গেছে, মারা যাওয়ার পর ই ওদের আম্মু বিয়ে দিয়েছে এমনকি এখন পর্যন্ত সংসারের যাবতীয় খরচ আম্মুই বহন করে।  যা বেতন পায় আর বাড়ি ভাড়া তা দিয়ে) ওদের ভাগ চায়। প্রথম প্রথম ভাড়ার টাকা চেত এখন সম্পত্তির ভাগ ও চায়।
১.এখন জানতে চাচ্ছি, শরীয়ত মোতাবেক সম্পত্তির ভাগ কে কতটুকু করে পাবে( আম্মু, 2 ভাই, 2 বোন)?  ১৪ শতাংশের মধ্যে 3 শতাংশ আম্মুর নামে আর বাকিটা আব্বুর নামে।
.২..আর পেনশনের টাকা দিয়ে যে ফান্ডেশ্ন বাড়ি করেছে সেটার ভাগ ও কি হবে??

1 Answer

0 votes
by (628,290 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/85897/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

সরকারি চাকুরিজীবী মারা যাওয়ার পর তাদের স্ত্রীকে যে পেনশনের টাকা সরকারের  পক্ষ থেকে দেওয়া হয়,এটা সরকারের পক্ষ থেকে তার স্ত্রীর প্রতি দয়া, অনুগ্রহ, ইহসান।

এটার সাথে মৃত ব্যাক্তির মিরাছের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এটা শুধুমাত্র স্ত্রীই পাবে।

স্ত্রীই কেবল মাত্র এটা পাওয়ার হকদার।     
(ইমদাদুল ফাতওয়া ৪/৩৪২ মাকতাবায়ে যাকারিয়া)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ
সরকারি চাকরিতে সরকারি নিয়ম অনুসারে চাকরিজীবী ব্যক্তিকে চাকরি শেষ হওয়ার পর প্রতি মাসে যে পেনশন দেওয়া হয় তা সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান স্বরূপ। উক্ত ব্যক্তির মালিকানাধীন সম্পদ নয়। কাজেই সেই সম্পদ পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ওয়ারিসরা পাবে না। বরং সরকারি আইন হিসেবে উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর যাকে দেওয়ার কথা বলা থাকে সেই তা প্রাপ্ত হবে।
সাধারণত, স্ত্রী সে টাকা পেয়ে থাকে। কাজেই সরকারি আইন হিসেবে স্ত্রী সে টাকা পাবে। ওয়ারিসরা তাতে যুক্ত হবে না।
আল বাহরুর রায়েক ৯/৩৬৫; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ২/৪

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবার পেনশনের টাকার মালিক আপনার মা।

এটির একচ্ছত্র হকদার চাকরিজীবীর স্ত্রী। 
তিনি চাইলে নিজেই সব ব্যবহার করতে পারবেন,চাইলে সন্তানদের পিছনেও খরচ করতে পারবেন। বা অন্যদেরকেও দিতে পারেন।

এটির একচ্ছত্র অধিকার তার।
অন্য কাহারো নয়।

সুতরাং আপনার আম্মু যে পেনশনের প্রায় ৩০-৪০ লাখ টাকা পেয়েছিলেন,সেটির মালিক আপনার আম্মু।

এ টাকায় সন্তানদের হক নেই।

এক্ষেত্রে আপনার আম্মু যেহেতু তা দিয়ে 3 তালা ফাউন্ডেশন দিয়ে একতালা কম্প্লিট করেছেন।

এক্ষেত্রে ওয়ারিশদের সম্পদ বন্টন এর আগেই তিনি মূলত নিজের টাকায় সেখানে বাসা বানিয়েছেন।

এটি সঠিক কাজ হয়নি।

হ্যাঁ যদি তিনি সেই ফাউন্ডেশন দেয়া বাসা সকলের মাঝে বন্টন করে দিতে চান,সেক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন করে বাড়ি তৈরীর কাজটি সঠিক বলেই বিবেচিত হবে।

আল্লাহ তা’আলা বলেন, 

يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلَادِكُمْ ۖ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنثَيَيْنِ ۚ فَإِن كُنَّ نِسَاءً فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ ۖ وَإِن كَانَتْ وَاحِدَةً فَلَهَا النِّصْفُ ۚ وَلِأَبَوَيْهِ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُ وَلَدٌ ۚ فَإِن لَّمْ يَكُن لَّهُ وَلَدٌ وَوَرِثَهُ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ الثُّلُثُ ۚ فَإِن كَانَ لَهُ إِخْوَةٌ فَلِأُمِّهِ السُّدُسُ ۚ مِن بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِي بِهَا أَوْ دَيْنٍ ۗ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ لَا تَدْرُونَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ لَكُمْ نَفْعًا ۚ فَرِيضَةً مِّنَ اللَّهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا

আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেনঃ একজন পুরুষের অংশ দু?জন নারীর অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু নারীই হয় দু' এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্যে অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিস হয়, তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অতঃপর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যতের পর, যা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান না। এটা আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদ।

وَلَكُمْ نِصْفُ مَا تَرَكَ أَزْوَاجُكُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّهُنَّ وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْنَ ۚ مِن بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِينَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ ۚ وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّكُمْ وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُم ۚ مِّن بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ ۗ وَإِن كَانَ رَجُلٌ يُورَثُ كَلَالَةً أَوِ امْرَأَةٌ وَلَهُ أَخٌ أَوْ أُخْتٌ فَلِكُلِّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا السُّدُسُ ۚ فَإِن كَانُوا أَكْثَرَ مِن ذَٰلِكَ فَهُمْ شُرَكَاءُ فِي الثُّلُثِ ۚ مِن بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصَىٰ بِهَا أَوْ دَيْنٍ غَيْرَ مُضَارٍّ ۚ وَصِيَّةً مِّنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَلِيمٌ

আর, তোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তি, যা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীরা যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তোমাদের হবে এক-চতুর্থাংশ ঐ সম্পত্তির, যা তারা ছেড়ে যায়; ওছিয়্যতের পর, যা তারা করে এবং ঋণ পরিশোধের পর। স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে যাও ওছিয়্যতের পর, যা তোমরা কর এবং ঋণ পরিশোধের পর। যে পুরুষের, ত্যাজ্য সম্পত্তি, তার যদি পিতা-পুত্র কিংবা স্ত্রী না থাকে এবং এই মৃতের এক ভাই কিংবা এক বোন থাকে, তবে উভয়ের প্রত্যেকে ছয়-ভাগের এক পাবে। আর যদি ততোধিক থাকে, তবে তারা এক তৃতীয়াংশ অংশীদার হবে ওছিয়্যতের পর, যা করা হয় অথবা ঋণের পর এমতাবস্থায় যে, অপরের ক্ষতি না করে। এ বিধান আল্লাহর। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল। ( সূরা নিসা-১১-১২)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শরীয়তের বিধান অনুসারে আপনার বাবার সম্পদ ১১ শতক ধরা হবে। 
বাকি ৩ শতক জমি যেহেতু আপনার মায়ের নামে লেখা,তাই সেই সম্পত্তি আপনার মায়েরই থাকবে।
এটি বন্টন হবেনা।

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আপনার মা নিজ ইচ্ছাতেই ফাউন্ডেশন করা বাড়িও সকলের মাঝেই বন্টন করে দিতে চান, সে ক্ষেত্রে পুরো সম্পত্তি নিম্নে উল্লেখিত নিয়মে বন্টন হবেঃ-

শরীয়তের বিধান অনুসারে ফাউন্ডেশন করা বাড়ি এভাবে বন্টন হবেঃ-
এটি ৪৮ ভাগ হবে।

মাইয়্যিতের স্ত্রী (আপনার আম্মু) আট ভাগের এক ভাগ হিসেবে ৬ অংশ পাবে। 

মাইয়্যিতের দুই কন্যা দুই তৃতীয়াংশ হিসেবে প্রত্যেকে ৭ অংশ করে দুই জন মোট ১৪ অংশ পাবে। 

মাইয়্যিতের দুই পুত্র আসাবা হিসেবে প্রত্যেকে ১৪ অংশ করে দুই জন মোট ২৮ অংশ পাবে। 

এক্ষেত্রে আপনার মা 0. 875 শতাংশ পাবে, আপনার ভাইয়েরা যথাক্রমে ২.০৪১  শতাংশ করে পাবে।
আপনার বোনেরা যথাক্রমে ১. ০২ শতাংশ করে পাবে।

★শরীয়তের বিধান অনুসারে ফাউন্ডেশন করা ছাড়া বাকি ৪ শতক জায়গা ঘর সহ এভাবে বন্টন হবেঃ-

মোট সম্পত্তি ৪৮ ভাগ হবে।

মাইয়্যিতের স্ত্রী (আপনার আম্মু) আট ভাগের এক ভাগ হিসেবে ৬ অংশ পাবে। 

মাইয়্যিতের দুই কন্যা দুই তৃতীয়াংশ হিসেবে প্রত্যেকে ৭ অংশ করে দুই জন মোট ১৪ অংশ পাবে। 

মাইয়্যিতের দুই পুত্র আসাবা হিসেবে প্রত্যেকে ১৪ অংশ করে দুই জন মোট ২৮ অংশ পাবে। 

এক্ষেত্রে আপনার মা অর্ধ শতাংশ পাবে। আপনার ভাইয়েরা যথাক্রমে ১.১৬৬ শতাংশ পাবে। আপনার বোনেরা যথাক্রমে ০.৫৩৮ শতাংশ পাবে


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...