আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
26 views
in সালাত(Prayer) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম। ১. কোনো কারনে তাড়াহুড়োর সাথে এমনভাবে ওয়াক্তিয়া সুন্নতে মুআক্কাদাহ নামায পড়া হলো যে কেবল ফরজ ওয়াজিব বিধান অনুসারে পড়া হয়েছে, নামাযের ভেতর সুন্নাতগুলো আদায় করা হয়নি। এখন এমন নামায তো মাকরুহ হয়ে গেলো, অর্থাৎ সাওয়াব হবে না। পরে ওয়াক্তের মধ্যেই যদি সময় পাওয়া যায়, সেই সুন্নাত নামায কি পুনরায় আদায় করা যাবে এই ভেবে যে তখন তো ভালোভাবে আদায় করা হয়নি, সাওয়াব হলো না এখন পরিপূর্ণ ভাবে পুনরায় পড়ে নেই।
২. জুমার সালাতের সময়ের আগে কি নফল নামায ঘরে পড়া জায়েজ আছে? মেয়েদের ক্ষেত্রে। যেমন জুমা যদি হয় ১২:২০ আর দ্বিপ্রহর ১২:১৫....তাহলে কি মেয়েরা ১২:০০ টা থেকে ১২:১০ এর মধ্যে চাশত, ইত্যাদি নফল সলাত ঘরে আদায় করতে পারবে? কোথাও মনে হয় শুনেছিলাম যে জুমার দিন জুমার সলাতের আগে নফল সলাত হয় না।

৩. আমি মক্কায় একদিন উমরাহ করেছিলাম (৩ ঘন্টা সময়) নামাযের হিজাব পড়ে। এখন স্বাভাবিকভাবে আমাদের মেয়েদের নামাজের হিজাবে সতর এর অংশ হিসাবে একটা থুতনী কভার অংশ থাকে যাতে করে চোয়ালের প্রতি পাশে এক দেড় আঙ্গুলের প্রস্থ মতো পরিমান আর চিবুকের এক চিলতে অংশ ঢাকা থাকে। কিন্তু ইহরাম অবস্থায় তো মুখের কোনো অংশ ঢাকা জায়েজ নেই। আমাদের হজ এজেন্সির মুআল্লিমকে জিগ্গেস করা হয়েছে ওনি বলেছেন এতে কোনো সমস্যা হবে না, দম সদকা ওয়াজিব হবে না। তবুও একটু কনফিউশন রয়ে গেছে।
৪.‌ একি সময়ে এক মাযহাবে থেকে, অন্য মাযহাবের কিছু কিছু ফাতোয়া ফলো করা যাবে কি? অনেকে বলেন এটা নাকি সুবিধাভোগী হয়ে যায়, সুবিধা বা পছন্দ অনুযায়ী দুই তিনটা মাযহাবের ফাতোয়া মিলিয়ে চললে। যেমন আমি হানাফী মাযহাব ফলো করি এবং এ অনুযায়ী সলাত পড়ি। এখন গরমের দিনে যোহর একটু দেরিতে আদায় করা হয়, তারপর শোয়া হয়। কিন্তু শুয়ে ঘুমিয়ে গেলে আর আসরের নামাজ আওয়াল ওয়াক্তে আদায় করতে পারি না, এক ঘন্টার মতো লেট হয়ে যায় কারন যোহরের নামায ৩টায় আদায় করে সোয়া তিনটায় শুলে সাড়ে পাঁচটার আগে ঘুম ভাঙ্গে না‌। এখন আমি যদি মালিকি, শাফেয়ী, হাম্বলি মাযহাবের ফাতোয়া অনুসারে সাড়ে তিনটায় আসর পড়ে শুয়ে পড়ি তাহলে কি হবে? আবার, অন্য মাযহাবের কিছু আলেম হায়েজ অবস্থায় স্পর্শ করা ব্যতীত হাতমোজা পড়ে ফোনে কুরআন পড়া সমর্থন করেন, আমাদের উস্তাযা দলিলসহ বুঝিয়েছেন কেন। যেহেতু কুরআনের ছাত্রী হিসেবে হায়েজের ৭-১০ দিন কুরআন প্রাকটিস না করলে উচ্চারনে কিছু জড়তা এসে যায়, তাই আমি আমার‌ উস্তাযার পরামর্শে ঐ নিয়মে হায়েজ অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করি আর ক্লাসে পড়া দেই। এভাবে সুবিধা অনুযায়ী একাধিক মাযহাবের ফাতোয়া মিক্স করে ফলো করা কি ঠিক?

1 Answer

0 votes
by (628,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
এমন নিয়তে সেই সুন্নাত নামায পুনরায় আদায় করা যাবেনা।

আদায় করলে সেটি নফল বলে বিবেচিত হবে 

(০২)
কাবলাল জুম'আ সংক্রান্ত হাদীস সমূহঃ-

হযরত ইবনে আব্বাস রা. বর্ণনা করেন,

كان النبي صلى الله عليه و سلم يركع قبل الجمعة أربعا . لا يفصل في شيء منهن

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমআর পূর্বে চার রাকাত পড়তেন। মাঝে সালাম ফেরাতেন না। ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১১২৯, তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং ১৬৪০। 

হযরত আলী রা. বর্ণনা করেন,

كان رسول الله يصلي قبل الجمعة أربعا وبعدها أربعا يجعل التسليم في آخرهن ركعة

অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমআর পূর্বে পড়তেন চার রাকাত, পরে পড়তেন চার রাকাত। আর চার রাকাতের পরেই তিনি সালাম ফেরাতেন। তাবারানী, আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং ১৬১৭; আবু সাঈদ ইবনুল আরাবী, (মৃত্যু ৩৪০ হি.) আল মুজাম, হাদীস নং ৮৭৪।

حدثنا علي بن سعيد الرازي قال نا سليمان بن عمر بن خالد الرقي قال نا عتاب بن بشير عن خصيف عن ابي عبيدة عن عبد الله عن النبي صلى الله عليه و سلم أنه كان يصلي قبل الجمعة اربعا وبعدها أربعا

অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমআর পূর্বে চার রাকাত ও পরে চার রাকাত পড়তেন। (মু'জামুল আওসাত,হাদীস নং ৩৯৫৯)

নাফে’ রহ. বর্ণনা করেন,

كَانَ ابْنُ عُمَرَ يُطِيلُ الصَّلاَةَ قَبْلَ الْجُمُعَةِ وَيُصَلِّى بَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ فِى بَيْتِهِ وَيُحَدِّثُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ يَفْعَلُ ذَلِكَ

ইবনে উমর রা. জুমআর পূর্বে দীর্ঘ নামায পড়তেন এবং জুমআর পরে ঘরে গিয়ে দুই রাকাত পড়তেন। আর বলতেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনই করতেন। (আবু দাউদ ১১২৮)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
জুমার সালাতের সময়ের আগে নফল নামায ঘরে/মসজিদে,পুরুষ নারী সকলের জন্যই পড়া জায়েজ আছে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে চাশত, ইত্যাদি নফল সলাত ঘরে/মসজিদে আদায় করতে পারবে।

তবে অর্ধ দিনের ক্ষেত্রে যখন নিষিদ্ধ টাইম আসে, সে সময়ে নিষিদ্ধ টাইম অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কোন নফল সুন্নত নামাজ পড়া যাবে না।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে দম/সদকাহ ওয়াজিব হবেনা।

এর পরেও কনফিউশান দূর না হলে সেক্ষেত্রে একটি সদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ টাকা গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে পারেন।

আরো জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/86723/
https://ifatwa.info/119759/

(০৪)
এমনটি করা জায়েজ হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/26530/

তবে আসরের নামাজের ওয়াক্ত নিয়ে যেহেতু হানাফি মাযহাবের স্কলারদের মাঝেই মতবিরোধ রয়েছে। 

সুতরাং আপনি যদি উপরোক্ত নিয়মে আসরের নামাজ আদায় করেন,সেক্ষেত্রেও আপনার আসর নামাজ আদায় হয়ে যাবে।

এতে অন্য মাযহাব মানা হবেনা,নিজ মাযহাবেরই অন্যান্য স্কলারদের মত অনুসারে নামাজ হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...